শিরোনাম

প্রকাশিত : ০৩ মে, ২০১৯, ০২:১৮ রাত
আপডেট : ০৩ মে, ২০১৯, ০২:১৮ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

রাজউকের ভূমি ব্যবহার ছাড়পত্র ও নির্মাণ অনুমোদনের অটোমেশন কার্যক্রমের উদ্বোধন

আসাদুজ্জামান সম্রাট : গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী জনাব শ ম রেজাউল করিম, এমপি বলেছেন, ‘আজ দীর্ঘসূত্রিতার আর হয়রানির অবসানে সহজীকরণের মাধ্যমে শুরু হলো দ্রুত সেবা পাওয়ার যুগান্তকারী পরিবর্তন। স্বচ্ছতা আনার ভিত্তি হিসেবে টেবিলে টেবিলে ধরনা দিয়ে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির মুখোমুখি হওয়ার পরিবর্তে বাসায় কিংবা যে কোন জায়গায় বসে নকশা অনুমোদনসহ ছাড়পত্র ও অন্যান্য সেবা অনলাইন নেয়া যাবে’।

বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)-এর ভূমি ব্যবহার ছাড়পত্র ও নির্মাণ অনুমোদন অটোমেশন কার্যক্রমের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।

গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী বলেন, ‘সারা দুনিয়া এখন গ্লোবাল ভিলেজে পরিণত হয়েছে। সারা দুনিয়া এখন হাতের মুঠোয়। এই হাতের মুঠোয় আনার পদ্ধতি বাংলাদেশে চালু করার স্বপ্ন দেখেছিলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার নির্দেশনায় তারই সুযোগ্য পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় কার্যত বাংলাদেশকে আজ ডিজিটাল বাংলাদেশ পৌঁছে দিয়েছেন। সে ক্ষেত্রে কেনো মন্ত্রণালয় পিছিয়ে থাকবে, মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ দপ্তর সংস্থা পিছিয়ে থাকবে। সেই প্রশ্ন আমার মনে সৃষ্টি করে দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব দেয়ার পর তিনি বলেছিলেন তোমার প্রথম কাজ হবে কর্মময় পরিবেশকে গতিশীল করা, স্বচ্ছতা ফিরিয়ে আনা এবং জনবান্ধবে পরিণত করা’।

দীর্ঘসূত্রিতার যন্ত্রণা সেবা গ্রহীতারা বোঝেন উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘দেশের মালিক জনগণ, আমরা জনগণের সেবক। মালিকদের অধিকার ফিরিয়ে দেয়া শেখ হাসিনা সরকারের লক্ষ্য। আমরা আজ যুগান্তকারী পরিবর্তনের যে ধারা সূচনা করলাম, সেটা এখানে শেষ হবে না, এটা চলমান প্রক্রিয়া।

শ ম রেজাউল করিম বলেন, ‘রাজউকের সিটিজেন চার্টার বড় হরফে টানানো থাকবে। সেবা গ্রহণে একটা সময় নাগরিকের যে সময় লাগতো, সেখান থেকে যে উত্তরণ হয়েছে সেটা মানুষকে জানতে হবে। সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে কি কি স্তরে নাগরিকদের সুবিধা দেয়া আছে, সেটা তাকে জানতে হবে। যারা কিছু বোঝেন না, তাদের জন্য হেল্প ডেস্ক থাকবে। রাজউকের আটটি জোনের প্রতিটিতে এক্সপার্ট টিম থাকবে। কেনো মানুষ সেবা পাবেনা, কেনো রাজউকের নানা সমালোচনা হবে। সেই সমালোচনার বৃত্ত থেকে বেরিয়ে আসার জন্য আজ আমরা এ কর্মসূচি নিয়েছি। গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ই সকল মন্ত্রণালয় ও দপ্তর-সংস্থার আগে এই আটোমেশনের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে এবং কাযকর করছে’ ।

শেখ হাসিনা আকাশে, জলে, স্থলে সবর্ত্রই বাঙালি জাতির সার্বভৌমত্বের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছেন উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘সাতষট্টি বছরের সীমানা বিরোধের অবসান করতে পেরেছেন বঙ্গবন্ধু কন্য শেখ হাসিনা। আইনানুগ প্রক্রিয়ায় আমরা আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে সমুদ্র সীমায় আমাদের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করেছি। আকাশ সীমায় আমরা বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণ করেছি। বাংলাদেশে উন্নয়নের মহাসড়কে দ্ব্যর্থহীনভাবে একজন মানুষ এগিয়ে যাচ্ছেন। তিনি শুধু রক্তের উত্তরসূরি না, আদর্শেরও উত্তরসূরি, তিনি শুধু দেশীয় নেতৃত্ব নয়, আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলের নেত্রী, তিনি শেখ হাসিনা’।

সমসাময়িক রাজনীতির প্রসঙ্গ টেনে মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতিও শুনতে হয়। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলছেন কর্ণফুলী টানেল, পদ্মা সেতু অপ্রয়োজনীয়। আমার কাছে মনে হয়, মানুষ যখন উদ্ভ্রান্ত হয়, রাজনীতির চূড়ান্ত দিউলিয়াপনায় পৌঁছে যায়, তখন বোধ হয় নিজের অস্তিত্বের শেকড় এদিক-ওদিক, শূন্যে খোঁজে। দেউলিয়াপনার ভেতর থেকে বিএনপি বাংলাদেশের উন্নয়ন চোখে দেখে না’।

দল, মত, বর্ণ, ধর্ম নির্বিশেষে উপস্থিত সকলের উদ্দেশ্যে মন্ত্রী আহ্বান জানান, ‘বাংলাদেশের উন্নয়নের সুযোগ আমরা সকলে নিই। উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় সকলের শামিল হওয়া উচিত। এই শামিল হ্ওয়ার ক্ষেত্রে কোনরূপ সহিংসতা, অপরাজনীতি, অন্যায়, সন্ত্রাস, দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি এগুলো থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।

আমাদের পরে স্বাধীন হওয়া দেশও অনেক এগিয়ে গেছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা কেনো পিছিয়ে থাকবো। আমরা কেনো পারবো না। আমরা কেউ ফেরেশতা না, আমরা একেবারে সৎ, দুর্নীতিমুক্ত হতে পেরেছি, সে দাবী করা নিরর্থক হবে। কিন্ত যতটুকু আমরা এগিয়ে যাই সেখানে সকলের সুনির্দিষ্ট সহযোগিতা চাই। আমাদের নতুন প্রজন্মের জন্য ভালো বাংলাদেশ রাখতে হবে। আমাদের সন্তানরা যদি একটি উন্নত, সমৃদ্ধ, সন্ত্রাসমুক্ত আধুনিক বাংলাদেশ পেতে পারে, তাহলে আমাদের সমস্ত ত্যাগ, সাধনা স্বার্থক হবে। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়িত হবে। ত্রিশ লক্ষ শহীদের স্বপ্ন বাস্তবায়িত হবে’।
তিনি বলেন, ‘রাজউককে উৎসাহিত করুন। আজকে যে শুভ সূচনা আমরা করলাম তা অব্যাহত থাকবে। সেবা পেতে কাউকে টেবিলে টেবিলে আর ধরণা দিতে হবে না’।

রাজউকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উদ্দেশ্যে মন্ত্রী বলেন, ‘মানুষের ভালোবাসা পাওয়ার চেয়ে বিত্ত-বৈভব বড় নয়। চিত্তকে বিত্তবান করেন। নৈতিকতাকে বড় করেন, মূল্যবোধকে বড় করেন। আসুন আমরা সকলে মিলে শুধু দৃশ্যমান উন্নয়ন নয়, নীতি-নৈতিকতায়, মূল্যবোধে উন্নত হই।

রাজউকের চেয়ারম্যান মোঃ আব্দুর রহমান এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব জনাব মোঃ শহীদ উল্লা খন্দকার। অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব জনাব মোঃ আখতার হোসেন এবং জনাব মোঃ ইয়াকুব আলী পাটওয়ারী, রাজউকের সদস্যবৃন্দ ও অন্যান্য কর্মকরাতাবৃন্দ।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়