ইসমাঈল ইমু : ২) শরিয়তপুরের জাজিরা থানা এলাকার রায়েরকান্দি গ্রামের রুবিনা আক্তার হত্যা মামলার তদন্তে পুলিশ গড়িমসি করছে। এছাড়া এ মামলায় একজন ব্যবসায়ীকে ফাঁসানোর চেষ্টা চালাচ্ছে একটি চক্র। শিগিগিরই মামলা পিবিআইতে হস্তান্তরের দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী কামাল মাদবর।
৩) বুধবার সকালে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স এসোসিয়েশন মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ দাবি জানান।
৪) লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, গতবছর ২১ সেপ্টেম্বর বিকেল ৫টার দিকে জাজিরা উপজেলার মুলনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক রুবিনা আক্তার রুমা কাগজপত্র ফটোকপি করার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয়। বিভিন্ন সম্ভাব্য স্থানে খোঁজাখুজির পর তার সন্ধান না পাওয়ায় ২৩ সেপ্টেম্বর থানায় জিডি করা হয়। ২৫ সেপ্টেম্বর দুপুর ২টার দিকে তার বাড়ির পেছনে বাঁশ বাগান থেকে রুনার লাশ উদ্ধার করা হয়। লাশ দাফনের পর ২৬ সেপ্টেম্বর রুবিনার ভাই সামসুল হক মুন্সি বাদি হয়ে আজ্ঞাত আসামী করে
৪) রুবিনা নিখোঁজ হয় ২১ সেপ্টেম্বর আর লাশ উদ্ধার হয় ২৫ সেপ্টেম্বর। কিন্তু অবাক করার বিষয় হলো ২২ সেপ্টেম্বর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি চক্র ‘এই হত্যাকান্ড কামাল মাদবর ঘটিয়েছে’ বলে প্রচার করে। তারা কিভাবে জানলো রুবিনা খুন হয়েছে- এটাই এখন প্রশ্ন। ঘটনার আগেরদিন ২০ সেপ্টেম্বর আমি সংসদ সচিবালয়ে ছিলাম। পরদিন ২১ সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হলে তার মেয়ের ভর্তি পরীক্ষায় সময় দেন। এছাড়া ২২ সেপ্টেম্বর সকালে ব্যাংকে ও বিকেলে একজন চিকিৎসকের কাছে ছিলেন তিনি। এ দুই স্থানের দর্শনার্থীদের তালিকা ও তার মোবাইল ফোনের কল রেকর্ড ঘাটলেই বেরিয়ে আসবে। এছাড়া কল রেকর্ড যাচাই করলেও এ হত্যাকান্ডের সঙ্গে আমার সম্পৃক্ততা আছে কি না তাও জানা যাবে।
৫) কামাল মাদবর বলেন, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তার শত্রুপক্ষের লোকদের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে গত ২৭ সেপ্টেম্বর তাকে ও তার নাবালক ভাতিজা মেহেদি হাসান ও পায়েলকে সন্দেহভাজন হিসেবে আটক করে। থানায় নিয়ে অমানুষিক নির্যাতন করে। পরে ২৮ সেপ্টেম্বর তাকে জেল হাজতে পাঠায়। আর মেহেদিকে জেল হাজতে না পাঠিয়ে ২৭ থেকে ২৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত থানায় আটকে নির্যাতন করে। পরদিন ৩০ সেপ্টেম্বর মিথ্যা মামলা সাজিয়ে তাকে জেলে পাঠায়।
৬) এদিকে তাকে রিমান্ডে এনে তার বাড়িতে নিয়ে বিল্ডিংয়ের তালা ভেঙ্গে মাংস কাটার চাপাতি ও পুরনো চালের বস্তা এবং বড় ভাইয়ের ঘরের তালা ভেঙ্গে ভাবীর গোসল শেষে শুকাতে দেয়া কাপড় নিয়ে যায়। এ ঘটনার দুইমাস পর তার বড় ভাই অসহায় কৃষক হারুন মাদবরকে ধরে নিয়ে জেলে পাঠায়। এর ৪ মাসেরও বেশি সময় পর চলতি বছর গত ২৫ জানুয়ারি রুবিনার লাশ যেখানে ঝুলন্ত অবস্থায় ছিল তার দক্ষিণপার্শ্বে শাহআলম নামের এক লোক বাঁশ কাটতে গিয়ে রুবিনার ভ্যানিটি ব্যাগ দেখে পুলিশে খবর দেয়। পরে ব্যাগে থাকা মোবাইল ও অন্যান্য মালামাল উদ্ধার করে পুলিশ।
৭) কামালকে গ্রেফতারের পর তার শত্রপক্ষের লোকজন ৭/৮শ’ বাঁশ কেটে নিয়ে যায়। এছাড়া টিনের ঘর থেকে ৯০ হাজার টাকার অঅসাবাবপত্র বানানোর কাঠ ও বিল্ডিংয়ে ঢুকে গ্লাস ভাংচুর করে ঘরে থাকা ২২ ভরি স্বর্নালঙ্কার ও ৩৫ মন জিরা ও ১ লাখ ৬২ হাজার টাকা নিয়ে যায়।
৮) রুবিনার বড়বোন নাছিমা ৩৭/৩৮ বছর বয়সে ২৫ বছর বয়সী একটি ছেলেকে বিয়ে করে। সেখানে একটি সন্তানও রয়েছে তার। ওই সময় তার স্বামী ৫ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করলে রুবিনা তার বোন নাছিমাকে ৩ লাখ টাকা দেয়। বছরখানেক পরে নাছিমা তার স্বামীর বাড়ি ছেড়ে চলে আসে। পরে রুবিনা তার কাছে টাকা চাইলে নানা তালবাহানা ও ভয়ভীতি দেখায়। রুবিনার লাশ দাফনের পর কামাল মাদবর আটক হলে গ্রামের বাড়িতে যায় এই নাছিমা। এতদিন সে কোথায় ছিল, তার স্বামী এখন কোথায় ? তারাই রুবিনাকে হত্যা করেছে কি না তা তদন্তে বেরিয়ে আসা দরকার বলে মনে করেন তিনি।
৯) কামাল মদবরকে ফাঁসাতেও চলছে নানা কাহিনী। পুলিশের এসব কান্ডে তদন্ত অন্যদিকে ধাবিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। রুবিনার হত্যাকারির দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি দাবি করেন তিনি।