নূর মাজিদ : বিশ্বব্যাপী বোয়িং-৭৩৭ ম্যাক্স বিমানের উড্ডয়ন নিষিদ্ধ করা হলেও বিমানটির উৎপাদন বন্ধ করছেনা বোয়িং। কো¤পানিটির আশা চলতি সংকট কাটিয়ে উঠলেই ফের বাজারের চাহিদা বাড়বে ৭৩৭ ম্যাক্সের। গত শুক্রবার কো¤পানিটি জানায়, তারা এই বিমানের ডেলিভারি সাময়িকভাবে বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে এই কারণে এর উৎপাদন বন্ধ করা হবেনা।
গত বছরে ইন্দোনেশিয়ার লায়ন এয়ারের ৭৩৭ ম্যাক্স দুর্ঘটনা এবং ইথিওপিয়ায় বিমানটির সাম্প্রতিক দুর্ঘটনা বোয়িংয়ের সর্বাধিক বিক্রিত বিমানটির চাহিদা রাতারাতি ব্যাহত করেছে। চলতি সপ্তাহেই ভিয়েতনাম আড়াই হাজার কোটি ডলারের বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স ক্রয় বাতিল করে। তবে এরপরেও বোয়িং তাদের খদ্দের বিমানপরিবহন সংস্থাগুলোর জন্য নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দিতে ব্যর্থ হচ্ছে তা উঠে এসেছে নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে। প্রভাবশালী মার্কিন দৈনিকটি গতকাল প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এই অবস্থা তুলে ধরে।
দৈনিকটি জানায়, গত অক্টোবরের লায়ন এয়ার দুর্ঘটনার পরেই বোয়িংয়ের শীর্ষ কর্তারা ৭৩৭ ম্যাক্স বিমানের সফটওয়্যার আপগ্রেডের প্রতিশ্রুতি দেয়। এই আপগ্রেড দুর্ঘটনা এড়াতে সহায়ক হবে বলে জানিয়েছিলেন কো¤পানিটির শীর্ষ কর্মকর্তা মাইকেল মিকেলিস। তবে এই প্রতিশ্রুতির চারমাস পরেও আপগ্রেড দিতে পারেনি বোয়িং।
এই দীর্ঘ পাঁচ মাস বোয়িংয়ের শুন্য প্রতিশ্রুতির ওপর ভিত্তি করে বৈশ্বিক এয়ারলাইন্সগুলো ৭৩৭ ম্যাক্স ব্যবহার করেছে। যা যাত্রীদের জীবন ও স¤পদ নিয়ে এক প্রকার বাজি ধরার মতো ব্যাপার। তবে ইথিওপিয়ার দুর্ঘটনার পর তাদেরও টনক নড়েছে। বন্ধ হয়েছে বোয়িংয়ের প্রতি তাদের অন্ধবিশ্বাসের ধারাবাহিকতা।
এদিকে যুক্তরাজ্যের অভিজাত অর্থনৈতিক দৈনিক ফিনান্সিয়াল টাইমস বলছে, বোয়িংয়ের সাধারণ বিনিয়োগকারীরা এখন বিকল্প শেয়ার কেনার দিকে ঝুঁকছেন। এভিয়েশন বাজারে বিদ্যমান উদ্বেগের কারণেই তারা ধীরে ধীরে বোয়িং থেকে বিনিয়োগ সরিয়ে নিচ্ছেন।
ইতোমধ্যেই বোয়িং আড়াই হাজার কোটি ডলারের বাজারমূল্য হারিয়েছে। তবে বিনিয়োগকারীদের উদ্বেগ এখন দুর্ঘটনার তদন্তে বোয়িংয়ের নির্মাণ ত্রুটি ধরা পড়লে কো¤পানিটিকে নিহত যাত্রীদের পরিবার বা স্বজনদের বিপুল অঙ্কের আর্থিক ক্ষতিপূরণ দিতে হতে পারে। এমনটি হলে ৭৩৭ ম্যাক্সের উৎপাদন কেন্দ্রগুলোও বন্ধ করতে হবে। যা সার্বিকভাবে বোয়িংয়ে বিনিয়োগকে অলাভজনক করে তুলবে।
সিএনএন, ফাইন্যান্সিয়াল টাইমস, নিউইয়র্ক টাইমস