শিরোনাম
◈ কিশোরগঞ্জ সম্মেলনে যাওয়ার জন্য স্থগিতাদেশ উঠিয়ে দিন, না হলে ভিন্ন পথ নেবো, জানালেন ফজলুর রহমান ◈ দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতিতে নতুন অস্থিরতা ◈ হ‌্যান্ড‌শেক না করায় অপরাধ হিসা‌বে ভারতের ম‌্যাচ ফি ৫০ ভাগ একং ২‌টি ডি‌মে‌রিট প‌য়েন্ট জ‌রিমানা হ‌তে পা‌রে ◈ এআই, কোয়ান্টাম ও নিউক্লিয়ার এনার্জিতে যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্যের বড় চুক্তি ◈ উগ্রপন্থা, সীমান্ত অচলাবস্থা ও রাজনৈতিক অস্থিরতা—বাংলাদেশসহ পাঁচ প্রতিবেশীকে ‘হুমকি’ মনে করছে ভারত ◈ আবারও ৩১ বিলিয়ন ডলার ছাড়াল রিজার্ভ ◈ আরব আমিরাতকে হারিয়ে সুপার ফোরে পাকিস্তান  ◈ অবশেষে কমল সোনার দাম ◈ মধ্যপ্রাচ্যে ক্রমবর্ধমান অস্থিরতার প্রেক্ষাপটে চার সংগঠনকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী ঘোষণা করল যুক্তরাষ্ট্র! ◈ সময়সীমা বেঁধে দিয়ে বাংলাদেশকে জাতিসংঘের চিঠি

প্রকাশিত : ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ০৪:৪৬ সকাল
আপডেট : ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ০৪:৪৬ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

একটি-দুটি নির্বাচনী বিজয় রাজনৈতিক শক্তির অধিষ্ঠান ঘটায় বটে কিন্তু সাংস্কৃতিক মেরুদ-ের পূর্ণ মেরামত ঘটে না : হারুন হাবীব

নাঈমা জাবীন : সাংবাদিক ও কলাম লেখক হারুন হাবীব বলেছেন, বাংলাভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত বাঙালির যে দীর্ঘ পথপরিক্রমা তাতে সাহিত্যিক বা সাংস্কৃতিক আন্দোলনের একটি বড় অংশীদারিত্ব আছে। ১৯৪৮-এর প্রথম ভাষা আন্দোলনে আবদুল করিম সাহিত্য বিশারদ, ড. মুহম্মদ শহীদুল্লা এমনকি ধর্মীয় জাতীয়তার প্রবক্তা তমদ্দুন মজলিশের ড. আবুল কাশেমসহ আরো অনেকেই মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর ঘোষণার প্রতিবাদে মুখর হন। জাতীয়তা নিয়ে মতপার্থক্য থাকলেও মাতৃভাষার প্রশ্নে তারা এক হন। তারা চট্টগাম, কুমিল্লা ও ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্মেলন করেন। এসব সম্মেলন জনচেতনায় বড় প্রভাব ফেলে, রাষ্ট্রভাষা বাংলার পক্ষে ও বিশ্বশান্তির পক্ষে গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব আসে এসব সম্মেলনে। সাম্প্রদায়িক সাহিত্যের বিরুদ্ধে, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে, শোষণের বিরুদ্ধে, সামন্ততন্ত্রের বিরুদ্ধে এসব সম্মেলন হয়ে ওঠে এক একটি মানবতাবাদী মঞ্চ। সূত্র : ভোরের কাগজ

তিনি বলেন, ঢাকার কার্জন হলে আয়োজিত ১৯৫৪ সালের তিনদিনের পূর্ব পাকিস্তান সাহিত্য সম্মেলনটি ছিলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই সম্মেলনেই রাষ্ট্রভাষা ও অসাম্প্রদায়িকতা প্রশ্নে ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লা তার যুগান্তকারী বক্তব্যে হিন্দু-মুসলমানের দাড়ি-টিকি, লুঙ্গি-ধুতির পার্থক্যকে বাহ্য বিষয় আখ্যা দেন। বলেন, বাঙালির অন্তরে মা প্রকৃতি তাদের এক বাঙালি করেই সৃষ্টি করেছেন। মোটকথা, ব্যাপকসংখ্যক মানুষের মনোজগতে মহাবিক্ষার যে বহ্নিশিখা প্রজ¦লিত হয়েছিলো, তার মুখ্য কারিগর ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি বঞ্চিত, অবহেলিত জাতির বুকে বল দিয়েছিলেন, কণ্ঠে প্রতিবাদের ভাষা দিয়েছিলেন, বিদ্রোহের মশাল জ্বলেছিলো, জাতীয় মর্যাদা পুনরুদ্ধার ও অধিকার বা আত্মপরিচয়ের সংকট দূর করেছিলেন, প্রতিরোধে দাঁড়াবার শক্তি জুগিয়েছিলেন। রক্তাক্ত মুক্তিযুদ্ধের সিঁড়ি বেয়ে স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্ম দিয়েছিলেন। কিন্তু আমাদের মনে রাখা উচিত হবে যে, বাহান্নর ও মুক্তিযুদ্ধের ত্রিশ লাখ শহীদের রক্তে যে অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হয়, সে রাষ্ট্রের প্রতিপক্ষ, সেই সাম্প্রদায়িক শক্তি আজও আত্মসমর্পণ করেনি। পাকিস্তান রাষ্ট্র আত্মসমর্পণ করলেও এসব অপশক্তি আজও নানা অঙ্গনে সক্রিয়।

তিনি আরো বলেন, আমাদের দুর্ভাগ্য যে, ১৯৭৫ পরবর্তী বাংলাদেশ রাষ্ট্রে আবারো ফিরে আসে সাম্প্রদায়িকতা, কূপম-ুকতা, আসে ধর্মীয় উগ্রবাদ। পুনর্জাগরিত এই বিষবৃক্ষগুলো বাঙালির শাশ্বত উদারতাকে গ্রাস করতে উদ্যত। অতএব, আত্মতুষ্টির সুযোগ কম। এক-দুটি নির্বাচনী বিজয় রাজনৈতিক শক্তির অধিষ্ঠান ঘটায় বটে, কিন্তু সাংস্কৃতিক মেরুদ-ের পূর্ণ মেরামত ঘটে না। অতএব, বাঙালি জীবনে আরেকটি বড় লড়াই প্রয়োজন।

সে লড়াই সংস্কৃতির লড়াই, মনোজাগতিক মুক্তির লড়াই। বাহান্নর ও একাত্তরের চেতনা পুনঃস্থাপনের লড়াই।

মানবিক, আধুনিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার লড়াই। এ লড়াইয়ের বিকল্প আছে বলে আমি মনে করি না।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়