মঞ্জুর মোর্শেদ : দূর গগণে বালিহাঁসেরা যেমন করে নীরবে-নিস্তব্ধে মিলে যায়, শীতও গেল ঠিক তেমন করেই। তবে বালুচরে নিভৃতে পড়ে থাকা পালকেরা উড়ে যাওয়া বালিহাঁসের কথা বললেও এবারে শীত যেন কোনো সাক্ষীই রেখে গেল না। সূত্র : জাগো
খনার বচনে শীত নিয়ে বলা হয়েছে ‘ঊনো বর্ষায় দুনো শীত’। অর্থাৎ যে বছর বৃষ্টি কম, সেইবার শীত বেশি হওয়ার ইঙ্গিত দেয়া হয়েছে। এবারে বর্ষায় বৃষ্টির আধিক্য কম ছিল। যেটুকু বন্যা হয়েছিল, তা ম‚লত উত্তরের পাহাড়ি ঢল থেকে।
সঙ্গত কারণে মনে করা হয়েছিল, এবারে হাড়কাঁপানো শীত নামবে। কিন্তু হাড়কাঁপানো তো দুরের কথা, কুয়াশার দেখাও যেন মিললো না। অতীতে শীতে নিদারুণ কষ্টের অন্ত থাকে না বটে। তথাপি ‘শীত’ উপভোগ্য কী ভোলার মতো! উত্তরের হিমেল ‘হাওয়া’ উষ্ণ মননে পরশে পরশে আনন্দ দুয়ার খুলে দেয়। খুলে দেয় প্রেমের দুয়ারও। এবার দু’তিনবার শৈত্যপ্রবাহের দেখা মিলবে, তা অপ্রত্যাশিত থাকলেও শেষ পর্যন্ত তার দেখা মেলেনি।
মাঘ চলে গেলেও আর ভারী শৈত্যপ্রবাহ দেখা দিল না। প্রবাদ আছে ‘মাঘের শীতে বাঘে কাঁপে’। প্রকৃতি যেন উল্টো পথে বিশ্বাসী এখন। প্রকৃতির হেয়ালিপনায় বুমেরাং হচ্ছে মানুষের ধ্যান-ধারণাও। এবার মাঘের শীত বাঘ তো দ‚রের কথা, মানুষকেও কাঁপাতে পারেনি।
শীত চলে যাচ্ছে রিক্ত হস্তেই। প্রকৃতিতে শ‚ন্যতা দিয়েছে বটে, তবে তাতে শীতের কোনো আমেজ নেই। এবার মাঘের মধ্য সময় থেকেই ফাগুন হাওয়া বইছে। সে হাওয়ায় শেষ দিকে তাপ ছড়াচ্ছে। আজ বসন্তের প্রথম দিন। শিমুল-পলাশে রঙ ধরেছে আরো আগেই। কোকিলের ডাকেও মন ভরেছে বেশ আগে থেকেই। এখন শুধু বসন্ত বরণের পালা। এ বছর শীতহীন শীত যে ক্ষরণ এঁকেছে হৃদয়পটে, সে হৃদয় উদাস বনে যাক বসন্ত বাতাসে।