ফারমিনা তাসলিম: আরো নতুন ব্যাংকের অনুমোদন দেয়া হতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির। মুক্তবাজার অর্থনীতিতে কোন ব্যবসা বন্ধ করার সুযোগ নেই বলে তিনি মনে করেন। অন্যদিকে অর্থনীতি বিশ্লেষকরা বলছেন, নতুন ব্যাংকের অনুমোদন দেয়ার ফলে অতিরিক্ত প্রতিযোগিতায় ব্যাংকখাতে অস্থিরতা ও ঝুঁকি বাড়বে।
মহাজোট সরকারের প্রথম মেয়াদে ২০১৩ সালে ৯টি ব্যাংক অনুমোদন পায় । যার বেশিরভাগই কয়েকবছরের মাথায় নাজুক অবস্থায় পড়েছে। ঋণ কেলেঙ্কারি, অনিয়মের অভিযোগে কোথাও কোথাও এরই মধ্যে পরিবর্তন হয়েছে পরিচালনা পর্ষদ ও ব্যবস্থাপনায়। তুলনামূলক বাড়তি সুদ দিয়েও এ ব্যাংকগুলো আমানত সংগ্রহে হিমশিম খাচ্ছে বলেও জানা গেছে । এসব বিষয় উপেক্ষা করে আরো নতুন কয়েকটি ব্যাংক লাইসেন্স পেতে যাচ্ছে এমন আভাস দিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির বলেন, 'সরকার আবার নতুন করে প্রস্তাব পাঠিয়েছেন। এখন বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ এটি নিয়ে বসবে। নতুন ব্যাংক আসাটা বন্ধের কোনো কারণ নেই। ফ্রি মার্কেট যেখানে চলছে সেখানে কোনো ব্যবসা তো রোধ করা যায় না।'
তবে দেশের অর্থনীতির আকার অনুযায়ী অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা নতুন ব্যাংক অনুমোদনের বিপক্ষে যুক্তি তুলে ধরছেন।
অর্থনীতিবিদ ড.ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, 'সুপ্ত প্রতিযোগিতা ভালো কিন্তু বেশি প্রতিযোগিতা হলে কোনো কোনো ব্যাংক বেশি মুনাফা দিয়ে ঋণ দেবার ব্যবস্থা করবে। তখন তাদের মুনাফা আরো বেশি ঘাটতি দেখা দিবে।'
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহীম খালেদ বলেন, 'সর্বশেষ যেসব ব্যাংকের অনুমোদন দেয়া হয়েছিল সেগুলোই ভালো চলছে না। আর নতুনভাবে কোনো দেয়া হবে। রাজনীতি রাজনীতির জায়গায়, অর্থনীতি অর্থনীতির জায়গায় অবস্থান করতে হবে।'
ব্যাংকখাতের শীর্ষ কর্মকর্তারা বলছেন, এখন ব্যাংকের সংখ্যা না বাড়িয়ে বরং কমিয়ে আনলেই সুফল বেশি পাওয়া যাবে।
এমটিবি'র সিইও আনিস এ খান বলেন, 'অনেক দিন ধরে বলে আসছি, বিভিন্ন ফোরামে বলেছি, একত্রিত করা। ব্যাংক এশিয়া আমাদের সমসাময়িক ব্যাংক। তারা ব্যাংক অব নভস্কটিয়া, সোসাইটি জেনারেল, মুসলিম কমার্শিয়াল ব্যাংক কিনলো। তাদের মুনাফা আসলো প্রায় ৬০০ কোটি টাকা। আর আমাদের মুনাফা আসলো ৪০০ কোটি টাকা। ওরা কত সফল। সুতরাং আমাদের মত কয়েকটা ব্যাংক যদি একত্রিত হতে পারে তাহলে অনেক ভালো হতে পারে।'
দেশে বর্তমানে ৫৮ টি তফসিলি ব্যাংক রয়েছে। নতুন করে বাংলা ব্যাংক, পিপলস ইসলামী ব্যাংক ও পুলিশ ব্যাংক বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন চেয়েছে।
সূত্র : সময় টিভি
আপনার মতামত লিখুন :