ডেস্ক রিপোর্ট : ঋণ পদ্ধতিতে পরিবর্তন এনেছে চীন সরকার। এর ফলে জিটুজি পদ্ধতিতে বাস্তবায়নাধীন ঢাকা-আশুলিয়া উড়াল সড়কের জন্য চীনের জিসিএল (গভর্নমেন্ট কনসেশনাল লোন) মিলছে না। এ কারণে ঋণ চুক্তির জন্য পাঠানো আগের প্রস্তাব বাদ দিয়ে নতুন করে ডকুমেন্টস পাঠাতে হচ্ছে।
চীনের নতুন ঋণ পদ্ধতি অনুযায়ী, ঋণের পরিমাণ ৩০০ মিলিয়ন ডলারের কম হলে এর পুরোটা বহন করবে জিসিএল। আর এর বেশি পরিমাণ হলে পিবিসির (প্রেফারেন্সিয়াল বায়ার ক্রেডিট) প্রস্তাব করা হয়েছে। তবে পিবিসির ক্ষেত্রে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে কমপক্ষে চুক্তিমূল্যের ১৫ শতাংশ অর্থায়ন করতে হবে। গত ২৯ নভেম্বর ঢাকা-আশুলিয়া উড়াল সড়কের জন্য বাণিজ্যিক চুক্তি হয় চায়না ন্যাশনাল মেশিনারি ইম্পোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট করপোরেশনের (সিএমসি) সঙ্গে। এ প্রকল্পের চুক্তিমূল্য ১৩৫৯.০৩ মিলিয়ন ডলার। নতুন পদ্ধতি অনুযায়ী এ ক্ষেত্রে পিবিসি কার্যকর হবে। সে অনুযায়ী চুক্তিমূল্যের ৮৫ শতাংশ হিসাবে প্রস্তাবিত ঋণের পরিমাণ দাঁড়ায় ১১৫৫.১৮ মিলিয়ন ডলার। এ বাস্তবতায় চীন সরকারের এক্সিম ব্যাংকের ঋণ প্রাপ্তির জন্য বিস্তারিত তথ্যাদিসহ প্রস্তাব সেতু বিভাগ থেকে পাঠানো হচ্ছে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগে (ইআরডি)। এর আগে এ সংক্রান্ত নথিতে অনুমোদন দিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
জানা গেছে, গত ২৩ অক্টোবর ঢাকা-আশুলিয়া উড়াল সড়ক প্রকল্পের অনুমোদন দেয় একনেক। কথা ছিল চীনের অর্থের ১৫ শতাংশ আসবে দেশটির সরকারের নমনীয় ঋণ (জিসিএল) থেকে। আর বাকি ৮৫ শতাংশ প্রেফারেন্সিয়াল বায়ার ক্রেডিট বা পিবিসি থেকে। কিন্তু এখন চীনের পিবিসি থেকেই গোটা প্রকল্পের ঋণ নিতে হচ্ছে। ৫ বছর মেয়াদি এ প্রকল্পে এখন চীনের ঋণ ১১৫৫.১৮ মিলিয়ন ডলার বা ৮৫ শতাংশ। সুদের হার বছরে ২ শতাংশ। আর বাকি ২০৩.৮৫ মিলিয়ন ডলার বা ১৫ শতাংশ অর্থের জোগান দেবে বাংলাদেশ সরকার।
২০১১ সালে উদ্যোগ নেওয়া এই প্রকল্পটি ঝুলে যায় নানা কারণে। চুক্তির আগেই সাব কন্ট্রাক্টসহ নানা কারণে এর কার্যক্রম থেমে যায়। সমালোচিত হয় অতিরিক্ত ব্যয় নির্ধারণের ফলে। অবশেষে কমানো হয় ব্যয় এবং প্রকল্প প্রস্তাবনায় আনা হয় সংশোধনী। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে শুরু হয়ে আব্দুল্লাহপুর-আশুলিয়া-বাইপাইল হয়ে নবীনগর মোড় এবং ইপিজেড হয়ে চন্দ্রা মোড় পর্যন্ত ২৪ কিলোমিটার এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ করা হবে। এর প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ১৬ হাজার ৯০১ কোটি টাকা। প্রস্তাবিত এ উড়ালসড়কের সঙ্গে ১০.৮৪ কিলোমিটার র্যাম্প এবং ১৪.২৮ কিলোমিটার সড়ক উন্নীতকরণ অন্তর্র্ভূক্ত করা হয়েছে। প্রকল্পের আওতায় ৪০.৮৯ হেক্টর ভূমি অধিগ্রহণ ও পুনর্বাসন, ১.৯২ কিলোমিটার নবীনগর ফ্লাইওভার নির্মাণসহ আনুষঙ্গিক কাজ সম্পন্ন করা হবে।
সূত্র : আমাদের সময়
আপনার মতামত লিখুন :