শিরোনাম
◈ ইসরায়েল খেললে বিশ্বকাপ ফুটবল বয়কট কর‌বে স্পেন ◈ এ‌শিয়া কা‌পে রা‌তে শ্রীলঙ্কা - আফগা‌নিস্তান মু‌খোমু‌খি, লঙ্কান‌দের জয় দেখার অ‌পেক্ষায় বাংলাদেশ  ◈ আওয়মী লীগ বিহীন বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচন নিয়ে দিল্লিতে এখন যে সব চিন্তাভাবনা  ◈ চ‌্যা‌ম্পিয়ন্স লিগ, চেলসিকে হা‌রি‌য়ে বায়ার্ন মিউ‌নি‌খের শুভ সূচনা ◈ কিশোরগঞ্জ সম্মেলনে যাওয়ার জন্য স্থগিতাদেশ উঠিয়ে দিন, না হলে ভিন্ন পথ নেবো, জানালেন ফজলুর রহমান ◈ দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতিতে নতুন অস্থিরতা ◈ হ‌্যান্ড‌শেক না করায় অপরাধ হিসা‌বে ভারতের ম‌্যাচ ফি ৫০ ভাগ একং ২‌টি ডি‌মে‌রিট প‌য়েন্ট জ‌রিমানা হ‌তে পা‌রে ◈ এআই, কোয়ান্টাম ও নিউক্লিয়ার এনার্জিতে যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্যের বড় চুক্তি ◈ উগ্রপন্থা, সীমান্ত অচলাবস্থা ও রাজনৈতিক অস্থিরতা—বাংলাদেশসহ পাঁচ প্রতিবেশীকে ‘হুমকি’ মনে করছে ভারত ◈ আবারও ৩১ বিলিয়ন ডলার ছাড়াল রিজার্ভ

প্রকাশিত : ০৭ নভেম্বর, ২০১৭, ১১:৪৮ দুপুর
আপডেট : ০৭ নভেম্বর, ২০১৭, ১১:৪৮ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

সিপাহী-জনতার বিপ্লব কী দিয়েছে?

মমতাজউদ্দীন পাটোয়ারী : ১৯৭৫ সালের এই দিনে সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হলেন। সেনাবাহিনীর প্রধানের থাকার কথা ছিল সেনানিবাসে। তার দায়িত্ব ছিল সেনাবাহিনীর দেখভাল করা। কিন্তু এদিন তিনি উপসামরিক শাসকের যে দায়িত্ব নিলেন তা রাষ্ট্রক্ষমতাকে দখল করারই নামান্তর। তবে এর কিছুই সহজ-সরল রাস্তায় ঘটেনি। ঘটলে বেশি মানুষ অপচ্ছন্দ করতে পারত। কিন্তু সেই সময়ের ঘটনাবলীতে নানা নাটকীয়তা সৃষ্টি হয়েছিল, ছিল ভেতরে দীর্ঘদিনের প্রস্তুত করা এক ষড়যন্ত্রেরও রোডম্যাপ। সেই রোডের শুরুতে ১৫ আগস্টের হত্যাকা- সংঘটিত হয়েছিল। মেরুদ-হীন খন্দকার মোশতাককে দিয়ে রাজনৈতিক শক্তির ক্ষমতায় থাকার দৃশ্য। এরপর ক্ষমতার রশি নিয়ে যখন ভেতর থেকে টান দেওয়ার আলামত পাওয়া যাচ্ছিল তখনই মোশতাককে দিয়ে আর একটি বড় হত্যাকা- সংঘটিত করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। জেলখানায় আগে থেকেই বলি দিতে আটকে রাখা ৪ জাতীয় নেতাকে জেলখানার ভেতরেই হত্যা করা হলো। হুকুম দিল মোশতাক, বাস্তবায়ন করল ১৫ আগস্টের খুনিরাই। এরপরই পত্রপাঠে বিদায় হলো খন্দকার মোশতাক। কিন্তু তাতেই শেষ নয়, খালেদ মোশাররফ যাতে ভবিষ্যতে কিছু না করতে পারে তার জন্য প্রেক্ষাপট তৈরি করা হলো। সেভাবে খালেদ মোশাররফও শেষ হলেন। কিন্তু ক্ষমতা আরোহনটি নির্ভেজাল সেনা সদস্যদের নিয়ে করাটি স্পষ্ট হয়ে যাবে একটি বিশেষ বাহিনীর। সেটি যাতে না হতে পারে তাই জনতা নামক একটি শব্দের বড় বেশি প্রয়োজন হয়ে পড়ে। এই জনতা শব্দটি তখন বিপ্লবীদের মুখে মুখে ফিরছিল। তাহেরকে বড় বেশি প্রয়োজন হয়ে পড়েছিল। তাহের নামিয়ে দিলেন তার বাহিনীকে। মিলিত হলো সিপাহী-জনতা, নাম দেওয়া হলো বিপ্লব। কত সস্তা শব্দ বিপ্লব বাংলাদেশে হয়ে গেল। তাহের পোড়খাওয়া মুক্তিযোদ্ধা, কিন্তু বিপ্লব তত্ত্বের শিক্ষা তার আবেগম-িত, গভীর জ্ঞানতাত্ত্বিক ছিল না। ফলে তার বিপ্লব আচড়ে পড়েছিল ক্ষমতা দখলের ট্যাংকের ওপর থেকে নিচে। ক্ষমতা গ্রহণের ফটো সেশন শেষ হলো। তাতে ‘সিপাহী জনতার’ ছবি প্রদর্শিত হলো। এর পরই তাহেরের উপযুক্ত ‘পুরস্কার’ দিতে তাকেও জেলে নেওয়া হলো, অচিরেই ফাঁসির রশি টানিয়ে কৃতজ্ঞতার পুরস্কার দেওয়া হলো।
হায় বিপ্লব! তুমি পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এসেছিলে সমাজ পরিবর্তনের রাজনৈতিক শিক্ষা নিয়ে, রাষ্ট্র ক্ষমতার বিপ্লবীরা এসেছিলেন নিজস্ব সাংগঠনিক শক্তিতে, রাষ্ট্রকে পরিবর্তন করতে নানা অভিজ্ঞতা ও চড়াই-উৎরাই পার হয়েছিল। বিপ্লব সে সব দেশে দিন দিন শক্তিশালী হয়েছে, মানুষের অন্তরে স্থান করে নিয়েছে। ফরাসি বিপ্লবের এতবছর পরও ফরাসিরা ১৭৮৯ সালের বিপ্লবীদের শ্রদ্ধার চোখে দেখে, কিউবার, লাতিন আমেরিকার, ইউরোপের দেশে দেশে, এমনকি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেও। কিন্তু আমাদের দেশে বিপ্লব এসেছিল অসংখ্য তরুণের ভাবাবেগে। কিন্তু সেই বিপ্লবের শবদাহ হয়ে গেছে ৭ নভেম্বর, ১৯৯৭৫ সালে। নতুন প্রজন্ম এখন এই শব্দটিই খুব একটা শোনে না, অর্থও তেমন জানে না। কেন, কারা এর জন্য দায়ী? উত্তর খুঁজলে অনেক সত্যই উদ্ভাসিত হতে পারে। সত্যিই ইতিহাসের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকে, ‘সিপাহী জনতার’ বিপ্লব হিসেবে স্বরূপটি উন্মোচিত হওয়া দরকার।
লেখক : অধ্যাপক, ইতিহাস বিভাগ, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়