শিরোনাম
◈ আমদানি-রপ্তানিতে এনবিআরের নতুন নিয়ম: বাধ্যতামূলক অনলাইন সিএলপি দাখিল ◈ জুলাই স্মরণে শহীদ মিনারে ছাত্রদলের মোমবাতি প্রজ্বলন (ভিডিও) ◈ জুলাই বিদ্রোহ: কোটা সংস্কার থেকে গণঅভ্যুত্থান ◈ ভারতের বাংলাদেশ সফর নিয়ে যা বললেন আমিনুল ইসলাম বুলবুল ◈ ৪৪তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ, ক্যাডার পদে মনোনয়ন পেলেন ১৬৯০ জন ◈ ১৮ জুলাই নতুন দিবস ঘোষণা ◈ ডিসি-এসপি কমিটি ও ইভিএম বাদ, ভোটকেন্দ্র স্থাপনে নতুন নীতিমালা জারি করলো ইসি ◈ বাংলাদেশে আগ্নেয়াস্ত্র লাইসেন্স: কীভাবে পাবেন, কী কী শর্ত মানতে হবে? ◈ এবার থাইল্যান্ড থেকে ভারতগামী বিমানে ১৬ টি সাপ, এরপর যা ঘটল ◈ প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ফোনালাপ নিয়ে এবার মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের বার্তা

প্রকাশিত : ০৭ নভেম্বর, ২০১৭, ০৪:১৩ সকাল
আপডেট : ০৭ নভেম্বর, ২০১৭, ০৪:১৩ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

মিয়ানমারের চলমান পরিস্থিতিতে নিরাপত্তা পরিষদে প্রেসিডেন্সিয়াল স্টেটমেন্ট গৃহীত

এনআরবি নিউজ, নিউইয়র্ক থেকে : জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে ৬ নভেম্বর সোমবার মিয়ানমার পরিস্থিতির উপর সর্বসম্মতিক্রমে প্রেসিডেন্সিয়াল স্টেটমেন্ট গৃহীত হয়।

নিরাপত্তা পরিষদের সভাপতি ইটালির স্থায়ী প্রতিনিধি সিবাসতিয়ানো কার্ডি  নিরাপত্তা পরিষদের পক্ষ থেকে এই স্টেটমেন্ট পড়ে শুনান। উল্লেখ্য, নিরাপত্তা পরিষদের এ পর্যন্ত গৃহীত পদক্ষেপের মধ্যে আজকের এই প্রেসিডেন্সিয়াল স্টেটমেন্ট গ্রহণ সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ ধাপ যা সুনির্দিষ্টভাবে নিরাপত্তা পরিষদের গৃহীত দলিল হিসেবে লিপিবদ্ধ থাকবে।

স্টেটমেন্টটিতে জাতিসংঘ মহাসচিবকে অনুরোধ জানানো হয় যাতে তিনি এই সংকট উত্তরণে একজন বিশেষ উপদেষ্টা নিয়োগের পর সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষকে নিয়ে মিয়ানমার সরকারের সাথে আলোচনা অব্যাহত রাখেন। এ বিষয়ে তাঁর কূটনৈতিক প্রচেষ্টাকে অব্যাহত রাখারও অনুরোধ জানানো হয়।

নিরাপত্তা পরিষদ মিয়ানমার পরিস্থিতির নিবিড় পর্যবেক্ষণ অব্যাহত রাখতে বদ্ধপরিকর মর্মে সভাপতি এই স্টেটমেন্টে উল্লেখ করেন। এছাড়া জাতিসংঘ মহাসচিব যাতে প্রেসিডেন্সিয়াল স্টেটমেন্ট গ্রহণের ৩০ দিন পর মিয়ানমার পরিস্থিতির উপর নিরাপত্তা পরিষদে বিবৃতি প্রদান করেন সে বিষয়ে অনুরোধ জানানো হয়।

স্টেটমেন্টটিতে মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশ থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রাখাইনের নাগরিক তথা রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তার বিষয়ে বাংলাদেশের ভূমিকার উচ্চ প্রশংসা করা হয় এবং ২৫ আগস্ট থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত রাখাইন প্রদেশে সংঘটিত বর্ণনাতীত সহিংসতার নিন্দা জানানো হয়।

এ সভায় বাংলাদেশ ও মিয়ানমারকে বক্তব্য রাখারও সুযোগ দেওয়া হয়। বাংলাদেশের পক্ষে বক্তব্য রাখেন জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন। মিয়ানমার সংকটের সমাধানে সর্বসম্মতিক্রমে প্রেসিডেন্সিয়াল স্টেটমেন্ট গ্রহণ করায় তিনি নিরাপত্তা পরিষদকে ধন্যবাদ জানান।

রাষ্ট্রদূত মাসুদ বলেন, “এ সংকট সমাধানের জন্য আমরা সবসময়ই প্রস্তুত রয়েছি এবং আমাদের যা করণীয় তা করে যাচ্ছি। কিন্তু আমাদের অভিজ্ঞতা থেকে আমরা বলতে চাই, দ্বিপাক্ষিকভাবে এই সমস্যার সমাধান করা সম্ভব নয় যতক্ষণ না আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বিশেষ করে নিরাপত্তা পরিষদ এ বিষয়ে যথাযথ দায়িত্ব গ্রহণ করে”।

রাষ্ট্রদূত মাসুদ সাধারণ পরিষদের তৃতীয় কমিটির আওতায় মিয়ানমার বিষয়ে রেজুলেশন গ্রহণে সকল সদস্য রাষ্ট্রের সমর্থন প্রত্যাশা করে বলেন, “এই রেজুলেশন মিয়ানমার সংকট সমাধানে সাধারণ পরিষদ ও নিরাপত্তা পরিষদের দ্বিবিধ ভূমিকার ক্ষেত্রে পরিপূরক হিসেবে কাজ করবে যা জাতিসংঘ মহাসচিবের নিরবচ্ছিন্ন প্রচেষ্টাকে আরও শক্তিশালী করবে”।

স্থায়ী প্রতিনিধি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যের উল্লেখ করে বলেন, “এই সংকটের শিকড় মিয়ানমারে এবং এর সমাধানও মিয়ানমারে নিহিত”।

বর্তমান পরিস্থিতিতে তিনটি পদক্ষেপ গ্রহণের সুপারিশ করেন রাষ্ট্রদূত মাসুদ। প্রথমত: উত্তর রাখাইন প্রদেশে বাধাহীন মানবিক সহায়তা প্রদান যাতে যে অল্পসংখ্যক রোহিঙ্গা জনগণ সেখানে অবশিষ্ট রয়েছে তাদের আর পালাতে না হয়।

দ্বিতীয়ত: বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপকে প্রত্যাবাসন বিষয়ে অবশ্যই দৃশ্যমান, ফলপ্রসূ ও টেকসই কার্যক্রম শুরু করতে হবে এবং ইউনিয়ন এন্টারপ্রাইজকে এ বিষয়ে বাস্তবভিত্তিক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। তৃতীয়ত: কফি আনান কমিশনের সুপারিশের পূর্ণ বাস্তবায়ন করতে হবে।

বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি বক্তব্য প্রদানের আগে মিয়ানমারের প্রতিনিধি বক্তব্য রাখেন। তিনি নিরাপত্তা পরিষদের আজকের প্রেসিডেন্সিয়াল স্টেটমেন্টে উল্লিখিত কিছু বিষয়ের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে তাতে অসন্তোষ ব্যক্ত করে মিয়ানমার গৃহীত সাম্প্রতিক বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন।

মিয়ানমার সংকট সমাধানে জাতিসংঘসহ সকল পক্ষের সঙ্গে বাংলাদেশের চলমান কূটনৈতিক প্রচেষ্টার এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিফলন। উল্লেখ্য, এর আগে গত ২৮ আগস্ট থেকে ১৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিরাপত্তা পরিষদ মিয়ানমার পরিস্থিতির উপর তিনবার আলোচনায় বসে।

১৩ সেপ্টেম্বর নিরাপত্তা পরিষদ মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশের পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে, এই সহিংসতার তীব্র নিন্দা জানায় এবং সমস্যার সমাধানে তাৎক্ষণিক ও জরুরী পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানায়।

উল্লেখ্য, গত ২৮ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেজ নিরাপত্তা পরিষদের একটি উন্মুক্ত সেশনে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের উপস্থিতিতে মিয়ানমারের সাম্প্রতিক পরিস্থিতির উপর বিবৃতি প্রদান করেন। অত:পর ১৩ অক্টোবর মিয়ানমারের চলমান পরিস্থিতিতে ‘আরিয়া ফর্মুলা’ মিটিং এ বসে নিরাপত্তা পরিষদ।

১৬ অক্টোবর জাতিসংঘ সদরদপ্তরের ইকোসক চেম্বারে ‘রোহিঙ্গা সঙ্কট ও বাংলাদেশের মানবিক সহযোগিতা বিষয়ে’ জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা ও জরুরী ত্রাণ বিষয়ক সমন্বয়কারী এবং জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল মার্ক লোকক্ সদস্য রাষ্ট্রসমূহের জন্য এক ব্রিফিং অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়