মাজহারুল মিচেল: [২] রাজধানীর কারওয়ান বাজারস্থ আইসিটি সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কে বৃহস্পতিবার সকালে স্থানীয় সরকার প্রতিনিধিদের সঙ্গে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তামাক বিরোধী সংসদীয় নারী ফোরামের সদস্য ও সংসদ সদস্য লুৎফুন্নেসা খান এ কথা বলেন।
[৩] আলোচনা সভায় যোগ দিয়ে তিনি জানান, করোনায় গত ৩ বছরে বাংলাদেশে ৩০ হাজার মানুষ মারা গেছে। অথচ তামাকের কারণে প্রতিবছর মারা যাচ্ছেন ১ লাখ ৬১ হাজার মানুষ। তামাকের কারণে মৃত্যু ধীরে ধীরে ঘটে বলে সেটি কারো চোখে পড়ে না।
[৪] লুৎফুন্নেসা জানান, বাংলাদেশে প্রতিবছর প্রায় ৩ কোটি ৮৪ লাখ মানুষ পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হচ্ছেন। বিশেষ করে শিশু ও নারীরা সবচেয়ে বেশি ভুক্তভোগী। আর তামাকের কারণে প্রতিদিন প্রাণ হারাচ্ছেন ৪৪২ জন মানুষ। এই অকাল মৃত্যু রোধ করতে এবং পরোক্ষ ধূমপানের হাত থেকে নারী-শিশুর স্বাস্থ্য রক্ষায় চলতি সংসদেই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সংশোধিত তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের খসড়া পাশের দাবি জানিয়েছেন সংসদ সদস্য লুৎফুন্নেসা খান।
[৫] নারী মৈত্রীর তামাক নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পের সমম্বয়কারী নাসরিন আক্তার জানান, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রণীত তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধিত খসড়াতে ধুমপানের নির্ধারিত এলাকা বিলুপ্ত, বিক্রয়স্থলে তামাকজাত দ্রব্য প্রদর্শন নিষিদ্ধ, খুচরা বিড়ি-সিগারেট বিক্রি বন্ধ, ই-সিগারেট নিষিদ্ধ, তামাক কোম্পানির সিএসআর কার্যক্রম বন্ধ ও সিগারেটের প্যাকেটে সতর্কবার্তার পরিসর ৫০ থেকে ৯০ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে, যা আইনটিকে আরও শক্তিশালী করবে। ফলে তামাকের কারণে একদিকে যেমন মৃত্যুহার কমবে অন্যদিকে জনস্বাস্থ্যের উন্নয়ন ঘটবে।
[৬] সিটিএফকে এর প্রোগ্রাম ম্যানেজার আব্দুস সালাম মিয়া বলেন, তামাকের কারণে প্রতিবছর সরকারের আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ ৮ হাজার কোটি টাকার বেশি।
[৭] কাউন্সিলর শাহিন আক্তার সাথী বলেন, রেস্টুরেন্টগুলোতে ধূমপানের জন্য বিশেষ জায়গা বরাদ্দ থাকায় নারী ও শিশুরা পরোক্ষভাবে ক্ষতির শিকার হচ্ছে।
[৮] কাউন্সিলর শিখা চক্রবর্তী বলেন, তরুণ প্রজন্মের মাঝে বর্তমানে ই- সিগারেটের ব্যবহার বেড়েছে। পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও ই-সিগারেটে আসক্ত হয়ে পড়ছে।
[৯] নারী মৈত্রীর নির্বাহী পরিচালক শাহীন আকতার ডলি বলেন, আইনটি দ্রুত পাসের মাধ্যমে শক্তিশালী করা গেলে নারী ও শিশুরা পরোক্ষ ধূমপানের হাত থেকে রক্ষা পাবেন। পাশাপাশি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের নাগরিকদের তামাক পণ্য ব্যবহারের সম্ভাবনাও উল্লেখযোগ্য মাত্রায় কমিয়ে আনা সম্ভব হবে। সম্পাদনা: শামসুল হক বসুনিয়া