শিরোনাম
◈ সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় অধ্যাদেশ: অধস্তন আদালতের বিচারকদের বদলি-পদোন্নতির ক্ষমতা পাচ্ছেন সুপ্রিম কোর্ট ◈ নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর পদত্যাগের গুঞ্জন, যা জানা গেল ◈ ‘সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষণে হতে পারে ড্রোন ব্যবহার’ ◈ হাসিনা সরকারের কিছু প্রাথমিক ‘ভুল’ ছিল: সজীব ওয়াজেদ জয় ◈ এনসিপির কার্যালয়ের সামনে মধ্যরাতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ ◈ জোট বাড়ছে বিএনপির, এনসিপি ও গণঅধিকারের সঙ্গে চলছে সংলাপ ◈ শাশুড়ির ১২ লাখ টাকার কিলারে খুন হন সালমান শাহ! ◈ এক ম্যাচ হাতে রেখেই অস্ট্রেলিয়ার কা‌ছে সিরিজ হার‌লো ভারত ◈ শ্রম আইন সংশোধন ও গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ চূড়ান্ত অনুমোদন ◈ আমিরাতে আটক বাংলাদেশিদের মুক্তির অনুরোধে চিঠি পাঠাবেন ড. ইউনূস

প্রকাশিত : ২৩ অক্টোবর, ২০২৫, ০৪:৪৮ দুপুর
আপডেট : ২৪ অক্টোবর, ২০২৫, ০২:০০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

বিএনপির প্রস্তাব বিবেচনায় নিলে আসন্ন নির্বাচন হবে মাইলফলক: মঈন খান

বিতর্কিত বা প্রশ্নবিদ্ধ সরকারি কর্মকর্তারা যেন ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের কোনও প্রক্রিয়ায় যুক্ত না হতে পারে, সেজন্য নির্বাচন কমিশনকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)।

বিএনপি নির্বাচনি সংস্কার সংক্রান্ত যে প্রস্তাব নির্বাচন কমিশনের কাছে জমা দিয়েছে। সেই প্রস্তাবগুলো বিবেচনায় নিয়ে বাস্তবায়ন করা গেলে আসন্ন নির্বাচন দেশের গণতান্ত্রিক ইতিহাসে মাইলফলক সৃষ্টি করবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) সঙ্গে বৈঠক শেষে এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান।

তিনি বলেন, ‘গত ১৫ বছরে প্রশাসনকে একটি রাজনৈতিক দলে অনুগতভাবে গড়ে তোলা হয়েছে। ফলে অতীতের তিনটি নির্বাচনে ভোটাররা যে প্রহসনের শিকার হয়েছেন, তা সবারই জানা। এই বাস্তবতার মধ্যেও নির্বাচন কমিশনকে সতর্ক থাকতে হবে, যাতে বিতর্কিত বা প্রশ্নবিদ্ধ কর্মকর্তারা নির্বাচনি প্রক্রিয়ায় কোনোভাবে যুক্ত না হতে পারেন। কমিশন যেন এমন একটি স্বচ্ছ প্রক্রিয়া নিশ্চিত করেন, যেখানে জনগণের আস্থা পুনরুদ্ধার হবে।’

আব্দুল মঈন খান বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য কোনও ব্যক্তিগত বা দলীয় স্বার্থ নয়— জাতীয় স্বার্থ রক্ষার জন্যই আমরা নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আলোচনা করেছি। ১৭ বছরের গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার সংগ্রামের পর, বিশেষ করে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে যে পরিবর্তনের সূচনা হয়েছে, তার ধারাবাহিকতায় আমরা চাই, ১৮ কোটি মানুষ যেন সত্যিকারের গণতান্ত্রিক পরিবেশে বাস করতে পারে, সাংবাদিকরা স্বাধীনভাবে কথা বলতে পারে, আর ১২ কোটি ভোটার যেন নির্ভয়ে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে।’

তিনি বলেন, ‘অতীতের সব প্রশাসনিক কর্মকর্তাকে বাদ দিয়ে নতুনভাবে নির্বাচন পরিচালনা করা বাস্তবসম্মত নয়। বরং তাদের মধ্যে যারা অতীতে চাপ বা ভয়ের কারণে অন্যায় করেছে, তাদের এখন গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সঠিকভাবে দায়িত্ব পালনে উৎসাহিত করতে হবে। আমি বিশ্বাস করি, বাংলাদেশের মানুষ অন্তরে গণতান্ত্রিক। যখন তারা বুঝবে যে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে, তখন এটি উৎসবমুখর একটি ঘটনার রূপ নেবে।’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘আমরা নির্বাচন কমিশনকে অনুরোধ করেছি যেন তারা একটি উদাহরণ স্থাপন করে, যাতে দেশবাসী ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বুঝতে পারে— বাংলাদেশ গণতন্ত্রের পথে এগোচ্ছে।’

মঈন খান বলেন, ‘একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনের সবচেয়ে বড় দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের। যদিও কমিশনের নিজস্ব জনবল সীমিত, তবুও একটি দিনে সারাদেশে প্রায় ৪২ হাজার ভোটকেন্দ্র ও তিন লাখ বুথে নির্বাচন পরিচালনা করতে হলে অন্তত ১০ লাখ জনবল প্রয়োজন। এই জনবল সরকারের প্রশাসন, পুলিশ, বিচার বিভাগ এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তায় আসে। ফলে এই বিশাল কাঠামো নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে পারবে কি না, তা এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন।’

তিনি আরও বলেন, ‘নির্বাচনের সময় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে এমন ভূমিকা নিতে হবে যাতে জনগণ বিশ্বাস করে যে তাদের কোনও দলীয় স্বার্থ নেই। সরকার ও নির্বাচন কমিশন যদি দৃশ্যমানভাবে সেই নিরপেক্ষতার বার্তা দিতে পারে, তাহলে দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও শান্তিপূর্ণ ভোটের পরিবেশ তৈরি হবে।’

তিনি বলেন, ‘বিএনপি আগেই নির্বাচনি সংস্কার সংক্রান্ত তাদের প্রস্তাব নির্বাচন কমিশনের কাছে জমা দিয়েছে। সেই প্রস্তাবগুলো বিবেচনায় নিয়ে কমিশন যদি সুপারিশগুলো বাস্তবায়ন করতে পারে, তাহলে আসন্ন নির্বাচন হবে দেশের গণতান্ত্রিক ইতিহাসে একটি মাইলফলক।’

এ সময় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি কারো সঙ্গে জোট করবে কিনা জানতে চাইলে মঈন খান বলেন, ‘গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে কোঅলিশন একটি স্বীকৃত পন্থা। এটা শুধু বাংলাদেশে নয় সারা বিশ্বেই এই প্রক্রিয়া চালু আছে। বিএনপির পক্ষ থেকে আমরা এখনও ওপেন রয়েছি। আমরা সময়মত এই সিদ্ধান্তগুলো গ্রহণ করবো।’

নির্বাচনের আগে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে মঈন খান বলেন, ‘আমরা অনেকেই যে ভয়টা পাচ্ছি যে নির্বাচনের দিনে বিশৃঙ্খলা হবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ক্ষতি হবে। আমি বিশ্বাস করি যে নির্বাচন একটি উৎসবমুখর একটা কর্মকাণ্ডে পরিণত হবে এবং আইনশৃঙ্খলা নিয়ে আমরা যে আশঙ্কা করছি সে আশঙ্কা থাকবে না।’

ইসির সঙ্গে গণভোট নিয়ে আলোচনা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে মঈন খান বলেন, ‘সাধারণ নির্বাচন হবে সেইদিনেই আমরা রেফারেন্ডাম চাই।’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খানের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ইসমাইল জবিউল্লাহ এবং সাবেক অতিরিক্ত সচিব ডক্টর মোহাম্মদ জকরিয়া, বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান। উৎস: বাংলাট্রিবিউন।
 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়