শিরোনাম
◈ বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক হবে গঠনমূলক ও ভবিষ্যতমুখী: হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা ◈ এলডিসি থেকে উত্তরণ: আরও তিন বছরের সময় চাইছে বাংলাদেশ ◈ জাপানে জনশক্তি রপ্তানি নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ যেসব সিদ্ধান্ত নিল অন্তর্বর্তী সরকার ◈ ১৭ বিয়ের ঘটনায় মামলা, সেই বন কর্মকর্তা বরখাস্ত ◈ বিএনপি নেতাকে না পেয়ে স্ত্রীকে কু.পিয়ে হ.ত্যা ◈ বাংলা‌দেশ হারা‌লো আফগানিস্তানকে, তা‌কি‌য়ে রই‌লো শ্রীলঙ্কার দিকে  ◈ রোজার আগে নির্বাচন দিয়ে পুরোনো কাজে ফিরবেন প্রধান উপদেষ্টা ◈ ঋণের চাপে আত্মহত্যা, ঋণ করেই চল্লিশা : যা বললেন শায়খ আহমাদুল্লাহ ◈ একযোগে এনবিআরের ৫৫৫ কর্মকর্তাকে বদলি ◈ আবারও রেকর্ড গড়ল স্বর্ণের দাম, ভরিতে বেড়েছে ৩ হাজার ৬৭৫ টাকা

প্রকাশিত : ০২ মার্চ, ২০২৪, ০৩:৩৪ রাত
আপডেট : ০২ মার্চ, ২০২৪, ০৩:৩৪ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

আমরা ছোট থেকে বড় হতে থাকি অন্যকে ছোট করার ভয়ানক আনন্দ নিতে নিতে! 

আমিনুল ইসলাম

আমিনুল ইসলাম: আমাদের নাবিস্কো মোড়ে একটা রেস্তরাঁ আছে। হাজী রেস্তরাঁ। সেই জন্মের পর থেকেই দেখছি। আগে ছিল শুধু নিচতলা। পরে অবশ্য দোতলায় চাইনিজ খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। গিয়েছিলাম রাতের খাবার খেতে। মনে হলো চলে যাবার আগে অন্তত আরেকবার যাওয়া যাক। একদম সাধারণ মানের রেস্তোরাঁ। তবে চালিয়ে নেবার মতো। ইচ্ছে করেই একটু দেরি করে গিয়েছি। এই সময়টায় মানুষ একটু কম থাকে। খাওয়া শেষ করতে করতে দেখি রেস্তোরাঁ প্রায় ফাঁকা হয়ে গিয়েছে। যে ছেলেটা আমাকে খাবার পরিবেশন করেছে। তাকিয়ে দেখি সে একটা চেয়ারে বসে বসেই ঘুমাচ্ছে। তাঁর ঘুম দেখে খুব মায়া হচ্ছিলো। ডাকতে ইচ্ছে করলো না। খানিক বাদে রেস্তোরাঁর ম্যানেজার এসে তাকে উঠিয়ে দিয়েছে। 

বিল-পে করার সময় একদম নিচু গলায় জিজ্ঞেস করলাম, কয়টা থেকে কাজ করছেন? ছেলেটাকে দেখে মনে হলো সে ভীষণভাবে লজ্জিত ঘুমিয়ে পড়ার জন্য। বললেন, দুপুর ১২টা থেকে কাজ করছি। -কয়টা পর্যন্ত করবেন? -রাত ১২টা পর্যন্ত। এই কথা বলতে বলতেই রেস্তোরাঁয় দুই ভদ্রলোক ঢুকেছেন। সাদা-মাটা পোশাক। উঁচু গলায় কথা বলছেন নিজেদের মাঝে। টেবিলে বসতে বসতেই ওই ছেলেটাকে ডেকে বলছেন। -কীরে এদিকে তাকাস না কেন? কী আছে বল? খুব অবাক হলাম এদের কথা বলার ভঙ্গি দেখে। একে তো ‘তুই’ ‘তকারি’ করছেন। এর উপর এমন ভঙ্গিতে কথা বলছেন। দেখে মনে হলো রেস্তোরাঁর ওয়েটারকে মানুষই মনে করছেন না। অথচ তখনও আমি উনার সঙ্গে বেশ নিচু গলায় কথা বলে চলেছি। বললাম, আজ বোধকরি খুব ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন। ঠিক আছে। আপনি কাজ করুন। আমি টেবিলে বিলটা রেখে যাবো। 

পাঁচশ টাকার একটা নোট এই ছেলেটার জন্য রেখে এসেছি। ভীষণ মায়া হচ্ছিল এই ছেলেটার জন্য। বিদেশে এই বয়সী বাংলাদেশি অনেক ছাত্র-ছাত্রী আমার আছে। যারা ওই দেশে রেস্তোরাঁয় কাজ করে। অনেক ছাত্রকে দেখেছি পুরো রাত কাজ করে সকাল বেলায় ক্লাসে এসে চোখ খুলে রাখতে কষ্ট হচ্ছে। এরপরও চেষ্টা করছে শিক্ষক যাতে বুঝতে না পারে। ফিরে আসার সময় মনে হচ্ছিলো- পাশের দুই ভদ্রলোক এই ছেলেটার সাথে যেই আচরণটা করেছে। অন্য কেউ সেই একই আচরণ যদি এদের সাথে করে। তখন এদের কেমন লাগবে? কেন অন্যকে এভাবে ‘তুই’, ‘তকারি’ করতে হবে? করতেও যদি হয়। একটু নিচু গলায় ভালোভাবেও তো বলা যায়। কেন আমরা এসব শিখতে চাই না? আমরা বাংলাদেশিরা ছোট থেকে বড় হতে থাকি অন্যকে ছোট করার ভয়ানক আনন্দ নিতে নিতে। কখনো বোঝারও চেষ্টা করি নাÑ সেই একই আচরণ হয়ত একটা সময় আমাদের কাছেও ফিরে আসতে পারে। তখন নিশ্চয় আমাদের সেটা ভালো লাগার কথা নয়। ফেসবুক থেকে 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়