শিরোনাম
◈ আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে শাহবাগ মোড় অবরোধের ডাক হাসনাতের (ভিডিও) ◈ নারায়ণগঞ্জ থেকে কাশিমপুর কারাগারে আইভী ◈ ‘মিথ্যাচার ও আক্রমণাত্মক বক্তব্যের’ জবাব দিলেন আসিফ নজরুল ◈ শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে জুলাই গণহত্যার রিপোর্ট দাখিল সোমবার ◈ জনগণ দ্রুত নির্বাচন চায় : ডা. জাহিদ ◈ আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবি সরকার গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করছে: অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিবৃতি ◈ অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত আইপিএল ◈ যমুনার সামনে বিক্ষোভকারীদের জুমার নামাজ আদায়, নিরাপত্তা জোরদার, বাড়তি সতর্কতা ◈ নিয়ন্ত্রণরেখায় ফের ভারত-পাকিস্তান সেনাদের গোলাগুলি ◈ পাকিস্তান যদি পাল্টা আঘাত হানে, তখন তা ঘোষণার কোনও দরকার হবে না: জেনারেল আহমেদ শরিফ

প্রকাশিত : ০৬ ডিসেম্বর, ২০২৩, ০২:৫২ দুপুর
আপডেট : ০৬ ডিসেম্বর, ২০২৩, ০২:৫২ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

বিএনপিকে ভাঙার জন্য বিএনপিই যথেষ্ট

সুভাষ দাশগুপ্ত

সুভাষ দাশগুপ্ত : বিএনপি আত্মতুষ্টিতে ভুগছে, এ সান্তনা বুকে নিয়ে যে, আওয়ামী লীগ চেষ্টা করেও বিএনপিকে ভাঙতে পারে নি। তাদের হিসেবে বিগত আড়াই বছর অবধি মাঠে আন্দোলন থেকে এটাই তাদের অন্যতম প্রাপ্তি। এত মানুষের মৃত্যু, যানবাহন ধ্বংস, সম্পত্তির ক্ষতি, কয়েক বিলিয়ন ডলারের অর্থনৈতিক ক্ষতি এবং দিনে আনা দিনে খাওয়া লোকদের আর্থিক ও খাদ্য সংকট সৃষ্টি করে বর্তমান সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে না পারলেও বিএনপি অন্তত তাদের পার্টির ভাঙন আপাতত রোধ করতে পেড়েছে। 

ইদানিং আবার বলা হচ্ছে, পার্টির সিনিয়র নেতারা আত্মগোপনে চলে যাওয়াতে, তাদেরকে, আওয়ামী লীগ নির্বাচনে যোগ দিতে বাধ্য করাতে পারেনি। প্রথমে আসি বিএনপির ভাঙন নিয়ে। ১/১১ সরকারের সময় যখন খালেদা জিয়া তার ছেলেকে বিদেশ পাঠিয়ে দেয়, সেদিন থেকে বিএনপিতে ভাঙনের বীজ বপন করা হয়। যতটুকু জানা যায়, তারেক রহমানের ধারণা তার আজকের পরিণতির জন্য তার মা দায়ী। তার বিশ্বাস, তিনি যদি তখন দেশ ছেডে চলে না যেতেন তবে পার্টি এবং তার অবস্হা আজকের মত হত না। এর থেকে মা ও ছেলের মধ্যে দুরত্ব সৃষ্টি হতে থাকে এবং এর বহিঃপ্রকাশের প্রতিফলন দেখা যায় ১০ ই ডিসেম্বরে, ২০২২ এ ঢাকায় আয়োজিত  বিএনপির মহাসমাবেশে হঠাৎ করে তারেক রহমানের রেকর্ড করা অডিও বক্তৃতা।

মা-এর মুক্তি ও চিকিৎসার ব্যাপারে তিনি একটি শব্দ  ও উচ্চারণ করেননি। খালেদা জিয়াপন্হী হিসেবে চিহ্নিত মির্জা ফখরূল ইসলাম আলমগীর আন্দোলনের কোন পরবর্তী কর্মসূচী ঘোষণা না দিয়েইসসেদিনের জনসমাবেশের সমাপ্তি ঘোষণা করে যখন পোডিয়াম ছেড়ে চলে যাচ্ছিলেন তখন তারেকপন্হী হিসেবে চিহ্নিত মির্জা আব্বাস, মির্জা ফখরুল ইসলামের কাছ থেকে জানতে চেয়েছিলেন এত লক্ষ লক্ষ লোক এখন কোথায় যাব? মির্জা ফখরুল ইসলামের জবাব ছিল আমি কি করব? তারেকপন্হীরা তাকে কর্মসূচী ঘোষণা করতে বাধ্য করে এবং তিনি ঘোষণা দেন যে আগামী কাল ১১ই ডিসেম্বর ঢাকায় প্রবেশের চারটি মহাসড়কের মুখে অবরোধ সৃষ্টি করার কর্মসূচী ঘোষণা দেন , যা সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়।

দীর্ঘদিন ধরে চলা আন্দোলনের ধারা  দেখে এটা সহজে বোঝা যায় পার্টি আজ স্পষ্টত দুই ভাগে বিভক্ত। এক অংশের নেতৃত্বে তারেক রহমান এবং আরেক অংশের নেতৃত্বে বেগম খালেদা জিয়া। এর মাঝে একটা চেষ্টা হয়েছিল প্রয়াত কোকোর স্ত্রীকে দেশে এনে পার্টিতে ভাঙন রোধ করার। তাও কেন যেন সফল হয়নি। বিএনপি যদি আসন্ন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করত, তবে পার্টির এই ভাঙন কিছুতেই রোধ করতে পারত না।

 এ কারণেই বিএনপি নির্বাচনে না আসার সিদ্ধান্ত নেয়। সুতরাং, বিএনপির ভাঙনে এবং তাদের নির্বাচনে না আসার পিছনে আওয়ামী লীগের কোন চেষ্টার প্রয়োজন ছিল না। বলা বাহুল্য, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান ছাড়া অন্য কারো নেতৃত্বে যদি বিএনপি ভাঙে, তবে সে নতুন পার্টি দেশের রাজনীতিতে দাঁড়াতেই পারবে না।কারণ বিএনপিতে এমন কোন সিনিয়র নেতা বর্তমানে নেই, যে বা যারা খালেদা জিয়া ও তারেক জিয়াকে চ্যালেন্জ করে নতুন পার্টির জন্ম দিতে পারে। 

নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা দেয়ার পর চার বিদেশি পরাশক্তি একেবারেই নিশ্চুপ হয়ে গেছে। জাতিসংঘ এখনও কিছুটা সরব আছে। বর্তমান ভূ-রাজনৈতিক বাস্তবতায় এই সংস্হাটি ও তার প্রয়োজন হারিয়ে ফেলতে চলেছে। কিছুদিন আগে জাতিসংঘ থেকে বলা হয়েছেলযে এই সংস্হাটির সেক্রেটারি-জেনারেলের বিদেশ ভ্রমন, বাজেটের স্বল্পতার কারণে সংকুচিত করতে হচ্ছে।  

এমতাবস্হায়, কি করে বাংলাদেশে জাতিসংঘ মিশন পাঠাবে? সুতরাং তারা নিউইর্য়কে বসে যে উপদেশ দিচ্ছে, তাতে যদি বাংলাদেশ গুরূত্ব দেয় তবে ত ভাল, না দিলেও বাংলাদেশ অথবা জাতিসংঘের কারও কোন ক্ষতি হবে না। নির্বাচন পর্যবেক্ষণে দেশে এসেছেন ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের এক প্রতিনিধি দল। তারা আগামী ১৭ই জানুয়ারী পর্যন্ত দেশে অবস্হান করে নির্বাচনের সার্বিক পরিস্হিতি মনিটরিং করবে। সর্বশেষ, মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের ব্রিফিং এ জানানো হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন দেখতে চাই। 

এখনও বিএনপি এ আশাই বসে আছে যে সরকারের পক্ষে ৭ই জানুয়ারী ২০২৪-এ নির্বাচন আয়োজন করা কিছুতেই সম্ভব হবেনা। নির্বাচনকে ব্যর্থ করার মিশন তাদের মাথা থেকে এখনও যায়নি।৭ই জানুয়ারী পর্যন্ত তারা কি ধরনের কর্মসূচী দিতে পারে? একঃ অবরোধ ও হরতালের রাজনীতি চালিয়ে যাওয়া, দুই:  বিএনপির আর্থিক সহায়তায় যে সব গণমাধ্যম থেকে (দেশ ও বিদেশ) দিন-রাত ২৪ ঘন্টা অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে নিয়ে যাওয়া, এবং তিন: নির্বাচনের দিন যাতে করে ভোটাররা ভোট দিতে না যায়, তার জন্য নেতা কর্মীদের উদ্বুদ্ধ করা।

তবে, চলমান অবরোধ ও হরতাল নির্বাচন ত বন্ধ করতে পারবেই না, যা পারবে তা হল দেশের অর্থনীতিকে আরও পঙ্গু করা; তাদের ভাড়া করা গনমাধ্যমগুলি কোন সুফল বিএনপির জন্য আজ পর্যন্ত আনতে পারেনি, ভবিষ্যতেও পারার কোন সম্ভাবনা দেখিনা। তাই এক মাত্র পথ যা আছে তাহল ভোট কেন্দ্রে যাতে ভোটার না যেতে পারে সে লক্ষ্যে কাজ করা। তবে এতেও কোন লাভ হবে বলে মনে হয় না।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়