শিরোনাম
◈ আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে শাহবাগ মোড় অবরোধের ডাক হাসনাতের (ভিডিও) ◈ নারায়ণগঞ্জ থেকে কাশিমপুর কারাগারে আইভী ◈ ‘মিথ্যাচার ও আক্রমণাত্মক বক্তব্যের’ জবাব দিলেন আসিফ নজরুল ◈ শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে জুলাই গণহত্যার রিপোর্ট দাখিল সোমবার ◈ জনগণ দ্রুত নির্বাচন চায় : ডা. জাহিদ ◈ আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবি সরকার গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করছে: অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিবৃতি ◈ অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত আইপিএল ◈ যমুনার সামনে বিক্ষোভকারীদের জুমার নামাজ আদায়, নিরাপত্তা জোরদার, বাড়তি সতর্কতা ◈ নিয়ন্ত্রণরেখায় ফের ভারত-পাকিস্তান সেনাদের গোলাগুলি ◈ পাকিস্তান যদি পাল্টা আঘাত হানে, তখন তা ঘোষণার কোনও দরকার হবে না: জেনারেল আহমেদ শরিফ

প্রকাশিত : ০৪ ডিসেম্বর, ২০২৩, ০১:৩৪ রাত
আপডেট : ০৪ ডিসেম্বর, ২০২৩, ০১:৩৪ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ফুলের নাম ওমর, শাহজাহান ওমর!

মিজানুর রহমান খান 

মিজানুর রহমান খান: ঘটনাক্রমটা ভালো করে লক্ষ্য করুনÑ ২৮ অক্টোবর বিএনপির কর্মসূচিকে ঘিরে ব্যাপক সহিংসতা হলো, এর কয়েকদিন পর ৪ঠা নভেম্বর বিএনপির একজন কেন্দ্রীয় নেতাকে গ্রেফতার করে তার বিরুদ্ধে দেওয়া হলো গাড়িতে অগ্নিসংযোগের মামলা, তিনি কারাগারে গেলেন, তাকে রিমান্ডে নেওয়া হলো, তার পরে দলের বড়ো বড়ো নেতাদের জামিন আবেদন বাতিল হয়ে গেলেও ২৯ নভেম্বর তিনি জামিন পেয়ে গেলেন, আদালতের সেই আদেশ আলোর গতিতে পৌঁছে গেলো জেল কর্তৃপক্ষের হাতে এবং সেদিনই তিনি কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে গেলেন, তখনও অনেক চমক অপেক্ষা করছিলো, পরদিন আরো দ্রুত গতিতে তিনি তার সারাজীবনের দল ছেড়ে যোগ দিলেন প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগে।

সাংবাদিকরা তার কাছে জানতে চাইলেন, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা হয়েছে কি না, তিনি রাজনীতিবিদদের মতো উত্তর দিলেন হলেও হয়ে থাকতে পারে এবং সবাইকে চমকে দিয়ে আগামী নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগ থেকে নৌকা প্রতীকে প্রার্থী হয়ে গেলেন। বলার অপেক্ষা রাখে না যে তার কাছ থেকে দারুণ একটা ম্যাজিক দেখা গেলো। এর প্রতিক্রিয়া যা হওয়ার, প্রতিবার যা হয়, তাই হয়েছে, বিএনপি তাকে বহিষ্কার করেছে। স্থানীয় নেতারা বলেছেন তাদের দল জঞ্জালমুক্ত হয়েছে। দলের জন্য তিনি কখনোই কাজ করেননি, দলের মধ্যে গ্রুপিং সৃষ্টি করে রাখতেন, সুবিধা পেতেই দলে ছিলেন, মন্ত্রী এমপি থাকার সময় দলীয় পদবি ব্যবহার করে নানা ফায়দা লুটেছেন।

তাহলে প্রশ্ন উঠতে পারে এতদিন আপনারা এই লোকটিকে নেতা বানিয়ে রেখেছিলেন কেন? আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়ার পরে কেন আপনারা এসব বুঝতে পেরেছেন? যদি দল বদল না করতেন তাহলে তো আপনাদের কাছে তিনি একজন ত্যাগী এবং মহান নেতা হিসেবেই থেকে যেতেন! আপনাদের ছেড়ে চলে গেছেন বলেই কি তিনি খারাপ হয়ে গেলেন? বিএনপির স্থানীয় একজন নেতা বলেছেন, আমরা তার হাতে পায়ে ধরেছি, অনেক বুঝিয়েছি, আপনি জীবনে সবকিছু পেয়েছেন, এখন দলের সঙ্গে বেঈমানি করবেন না, কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি তাদের কথা শোনেননি, শুধু যে কথা শোনেননি তা নয়, এই নেতার জমির ওপর যে দলীয় কার্যালয় ছিলো সেখান থেকেও বিএনপির ব্যানার ফেস্টুন নামিয়ে ফেলা হয়েছে।

প্রশ্ন উঠতে পারে, আওয়ামী লীগ কেন বাসে আগুন দেওয়া একজন লোককে তাদের দলে টেনে নিলো? তাহলে কি তার নামে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছিলো? প্রধানমন্ত্রী তো বলেছিলেন, যারা বাসে আগুন দেবে তাদের হাত পুড়িয়ে দেওয়ার জন্য, তাহলে এমন হাতে নৌকার প্রতীক কীভাবে গিয়ে উঠলো? এতে আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতারা কষ্ট পেয়েছেন, কিন্তু তারা বোধগম্য কারণেই মুখ খুলে কিছু বলছেন না, সারাজীবন যে লোকটি তাদের বিরুদ্ধে কাজ করে গেছেন, হঠাৎ সেই ব্যক্তি তাদের নেতা হয়ে যাওয়ায় খুশি হওয়ার কোনো কারণ নেই। এই এলাকায় গত তিনটি নির্বাচনে যিনি আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়ে এমপি নির্বাচিত হয়েছেন, তিনিও এখনও কিছু বলেননি। অবশ্য তার আর কী বলার থাকতে পারে!

তবে আগামী নির্বাচনে এই আসনের ফলাফলের দিকে নজর রাখা যেতে পারে। তখন অনেককিছুই পরিষ্কার হয়ে যাবে। সব শেষ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী নৌকা প্রতীকে ভোট পেয়েছেন এক লক্ষ ৩১ হাজার। আর জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের হয়ে বিএনপির এই একই নেতা ধানের শীষ প্রতীকে পেয়েছিলেন মাত্র ছয় হাজার ভোট। এবারে তিনি কতো ভোট পান সেটা দেখার বিষয়। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেছেন, নির্বাচনের আগে শতফুল ফুটবে। বোঝা গেলো এরকম একটি ফুলের নাম শাহজাহান ওমর এবং এই ফুলটি ফুটেছে কারাগারের অন্ধকার প্রকোষ্ঠে, হয়তো যার পরাগায়ন হয়েছে রিমান্ডের সময়। একটা কথা বলা হয়, রাজনীতিতে শেষ কথা বলে কিছু নেই, এই কথাটা বলেন খোদ রাজনীতিবিদরাই। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে এমন একটি কথা দিয়ে তাদের সুবিধাবাদী আচরণ ও বক্তব্যকে আর কতোকাল গ্রহণযোগ্যতা দেওয়া হবে? লেখক: সাংবাদিক। ফেসবুকে ১-১২-২৩ প্রকাশিত হয়েছে। 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়