প্রবির বিকাশ সরকার: জাপানের এদো যুগের শেষ দিকে ১৮৬৮ সালে এক বিপ্লব ঘটেছিল, তার নাম মেইজি ইশিন। অর্থাৎ মেইজি পুনরুদ্ধার। প্রবল প্রতাপশালী সামুরাই যোদ্ধাদের আড়াইশ বছরের শাসনকে বিনাযুদ্ধে পরাজিত করেছিলেন কতিপয় আধুনিক চিন্তান্বেষী তরুণ, যাদের তৈরি করেছিলেন শিক্ষাগুরু য়োশিদা শোওইন। সেই তরুণ বীর নিরস্ত্র যোদ্ধারা আসন্ন রাজনৈতিক সঙ্কট থেকে দেশকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছিলেন। তাদের একজন ইতোও হিরোবুমি আধুনিক জাপানের প্রথম প্রধান মন্ত্রী হয়েছিলেন। এরকম ঘটনা বিশ্বের আর কোথাও ঘটেছে বলে আমার জানা নেই।
অকুতোভয় সেই শিক্ষককে অবশ্য তার মূল্য দিতে হয়েছিল সামুরাই শাসকের হাতে মৃত্যুবরণ করে। সেই মৃত্যু কতো মহান ছিল সামুরাই না বুঝলেও জাপানিরা অনুধাবন করেছিলেন, ফলে আজও তিনি নমস্য।
বাঙালির ইতিহাসেও অনেক বড় বড় শিক্ষাগুরু, শিক্ষাবিদ ছিলেন, কিন্তু বৈশ্বিকমাপের রাজনীতিবিদ একজনকেও তৈরি করতে পারেন নি। শিক্ষার সঙ্গে রাজনীতির সম্পর্ক অকাট্য। সঠিক শিক্ষা সঠিক রাজনীতির ভিত্তি। রাজনীতি ছাড়া কোনো রাষ্ট্র চলতে পারে না। বিগত শতবছরের অধিক সময় ধরে বাংলা অঞ্চলে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা একবারের জন্যও দেখা যায়নি। হযবরল অবস্থা চলছেই চলছে। এর পেছনে দায়ী অযোগ্যতা, অশিক্ষা, অতিলোভের রাজনীতি। বিপ্লব হবে কীভাবে? বিপ্লবের জন্য শিক্ষক জরুরি। সরকারের প্রদত্ত বেতনভোগী শিক্ষক দিয়ে চাকরিজীবী আর ঘুষখোর তৈরি করা যায়, বিপ্লবী তৈরি করা যায় না। লেখক ও গবেষক