শিরোনাম
◈ নিয়ন্ত্রণরেখায় ফের ভারত-পাকিস্তান সেনাদের গোলাগুলি ◈ পাকিস্তান যদি পাল্টা আঘাত হানে, তখন তা ঘোষণার কোনও দরকার হবে না: জেনারেল আহমেদ শরিফ ◈ অনিশ্চয়তার মাঝেও পি‌সি‌বি চায় বাংলাদেশ দল পাকিস্তান সফরে আসুক ◈ এই প্রথম হ‌কি বিশ্বকাপে আম্পায়া‌রিং করবেন  বাংলা‌দে‌শের সে‌লিম ও শাহবাজ  ◈ পারভেজ হত্যায় গ্রেফতার অভিযুক্ত টিনা ◈ রাফালের ধ্বংসাবশেষ সরানোর প্রমাণ পেয়েছে বিবিসি ভেরিফাই! ◈ যুদ্ধক্ষেত্রের ‘সাইলেন্ট কিলার’ হারোপ ড্রোনের বিশেষত্ব কী? (ভিডিও) ◈ এখানে আরেকটা বেয়াদব আছে, সে শহীদ ফ্যামিলিকে ননসেন্স বলেছে: সংবাদ সম্মেলনেই শহীদ ইয়ামিনের বাবা(ভিডিও) ◈ দুপুরের মধ্যে সব রাজনৈতিক দলকে ডেকে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করার দাবি, জানিয়েছেন জামায়াতের ঢাকা দক্ষিণের সেক্রেটারি ◈ ভরসার বিনিময়ে পেয়েছি অশ্বডিম্ব, সব দোষ এখন ছাত্র উপদেষ্টা নন্দঘোষ: উপদেষ্টা মাহফুজ

প্রকাশিত : ০৭ জুন, ২০২৩, ০১:১৭ রাত
আপডেট : ০৭ জুন, ২০২৩, ০১:১৭ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ক্রমেই ‘চিত্রালী’ কিংবা ‘রূপবাণী’ হয়ে উঠছে দেশের কোনো কোনো গণমাধ্যম!

কাকন রেজা

কাকন রেজা: বাংলাদেশের গণমাধ্যমের বড় একটা অংশ ক্রমেই সিনেমার মাধ্যমে পরিণত হচ্ছে! চিত্রালী কিংবা রূপবাণী হয়ে যাচ্ছে হালের গণমাধ্যমগুলো। পরীমনি-রাজ, অপু-শাকিব-বুবলি, তিশা-সুনেরাহ, সানাই মাহবুবসহ বিভিন্ন অভিনয় শিল্পীদের খবরা-খবরে ব্যস্ত হয়ে উঠেছে এসব মাধ্যম। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে সারাদেশে তেমন কোনো খবর নেই, ফলে বাধ্য হয়েই তারা এমন খবর ছাপছে বা প্রকাশ করছে। অথচ গত তিন দশকে বোধহয় এতবেশি জরুরি খবর এবং তা প্রকাশের প্রয়োজনীয়তা আর কখনো হয়নি। এক জ্বালানি খাত নিয়ে খবর করতে গেলে প্রথম ও শেষ পাতাসহ চার পাতা বরাদ্দ দিলেও শেষ করা যাবে না। স্বাস্থ্য, শিক্ষা, যোগাযোগসহ কোনো জায়গায় খবর নেই। এতো খবর যে খবরের কর্মীদের অস্থির হয়ে যাবার কথা। কর্মী ছাঁটাই না করে গণমাধ্যমগুলোতে কর্মী বাড়ানোর কথা। কিন্তু হচ্ছে উল্টোটা। তার ফলই হচ্ছে চিত্রালী বা রূপবাণীতে রূপ নেওয়ার ক্রম অগ্রসরমান প্রক্রিয়া। 

ভয়ংকর এক ভিসা নীতির কবলে রয়েছে দেশ। অন্য যে ছয়টি দেশে নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতি ছিলো তার সঙ্গে আমাদের ওপর আরওপিত ভিসা নীতির পার্থক্যটাও খবরের বড় উপাদান। উগান্ডা, নাইজেরিয়া, বেলারুশ প্রভৃতি দেশে ভিসানীতি আরোপিত হয়েছে নির্বাচনের পরে। আর আমাদের নির্বাচনের প্রায় সাত মাস আগেই যুক্তরাষ্ট্র তার ভিসা নীতি গ্রহণ করেছে। ছয় দেশে করা হয়েছে নির্বাচনের ফলাফলের উপর। আর আমাদের দেশের ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, নির্বাচনী প্রক্রিয়ার উপর। অর্থাৎ আমাদের আরওপ শুরু হয়েছে নির্বাচনের আগেই। যার গুঞ্জন এখন মানুষের কানে কানে। এই নীতি আমাদের বিশে^র কাছে ছোট করেছে। অন্য যে ছয় দেশ রয়েছে তার থেকেও লজ্জাও ফেলেছে যুক্তরাষ্ট্র আমাদের। কেন ফেলেছে এবিষয়ে খবর করতে গেলেও নির্বাচনের আগ পর্যন্ত মাধ্যমগুলোর প্রথম পাতা বা প্রচ্ছদের একটা বড় অংশ বরাদ্দ রাখতে হয় এবং রাখা সম্ভব। কিন্তু না, আমাদের লক্ষ্য চিত্রালী বা রূপবাণী হওয়া। 

অনেকে বলবেন, প্রকাশ করতে গেলে অনেক ঝামেলা সইতে হয়। গণমাধ্যমের জন্মই তো হয়েছে ঝামেলা সইবার জন্য। চ্যালেঞ্জ নেওয়ার জন্য। এমনিতেই রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ আখ্যা দেয়া হয়নি গণমাধ্যমকে। এটা মিষ্টির দোকানে বসে রসগোল্লা খাবার মতন বিষয় নয়, যা মনে করেন আমাদের মাধ্যমের অনেক কর্তাব্যক্তিরা। রসগোল্লা বেশি খেলে তার কাফফারা দিতে হয়। আমাদের খবরের মাধ্যমগুলো থেকে মানুষ মুখ ফিরিয়ে নিতে শুরু করেছে। তাদের মনোযোগ এখন সামাজিকমাধ্যমের দিকে। মূলধারার সাংবাদিকতাকে রীতিমতো চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে নাগরিক সাংবাদিকতা। যেখানে মানুষের আস্থা থাকার কথা গণমাধ্যমে, উল্টো আস্থা রাখছে তারা সামাজিকমাধ্যমের ওপর। যার আছর সমাজের উপর ভালো হবার কথা নয়। কিন্তু ওই যে চিত্রালী আর রূপবাণী হবার চেষ্টা, সেই চেষ্টাই ডোবাচ্ছে খবরের মাধ্যমগুলোকে। আর কোনো কোনো মাধ্যম ডুবেছে তোষামুদিপনায়। এসব যে বুঝতে পারছেন না এমন গণমাধ্যমের কর্তাব্যক্তিরা, তা কিন্তু নয়। তারা ঠিকই বুঝছেন, কিন্তু তাদের ফিরে আসার ইচ্ছে বা উপায় নেই। কেন নেই, সে কথাও চাউর করছে সামাজিক মাধ্যম। আমাদের লজ্জিত হতে হচ্ছে সামাজিক মাধ্যমের কাছে এবং নিজেদের বিবেকের কাছে। লেখক : সাংবাদিক ও কলামিস্ট।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়