শিরোনাম
◈ নিয়ন্ত্রণরেখায় ফের ভারত-পাকিস্তান সেনাদের গোলাগুলি ◈ পাকিস্তান যদি পাল্টা আঘাত হানে, তখন তা ঘোষণার কোনও দরকার হবে না: জেনারেল আহমেদ শরিফ ◈ অনিশ্চয়তার মাঝেও পি‌সি‌বি চায় বাংলাদেশ দল পাকিস্তান সফরে আসুক ◈ এই প্রথম হ‌কি বিশ্বকাপে আম্পায়া‌রিং করবেন  বাংলা‌দে‌শের সে‌লিম ও শাহবাজ  ◈ পারভেজ হত্যায় গ্রেফতার অভিযুক্ত টিনা ◈ রাফালের ধ্বংসাবশেষ সরানোর প্রমাণ পেয়েছে বিবিসি ভেরিফাই! ◈ যুদ্ধক্ষেত্রের ‘সাইলেন্ট কিলার’ হারোপ ড্রোনের বিশেষত্ব কী? (ভিডিও) ◈ এখানে আরেকটা বেয়াদব আছে, সে শহীদ ফ্যামিলিকে ননসেন্স বলেছে: সংবাদ সম্মেলনেই শহীদ ইয়ামিনের বাবা(ভিডিও) ◈ দুপুরের মধ্যে সব রাজনৈতিক দলকে ডেকে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করার দাবি, জানিয়েছেন জামায়াতের ঢাকা দক্ষিণের সেক্রেটারি ◈ ভরসার বিনিময়ে পেয়েছি অশ্বডিম্ব, সব দোষ এখন ছাত্র উপদেষ্টা নন্দঘোষ: উপদেষ্টা মাহফুজ

প্রকাশিত : ০৬ জুন, ২০২৩, ০২:০৯ রাত
আপডেট : ০৬ জুন, ২০২৩, ০২:০৯ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

উন্নত বাংলাদেশ চান, শিক্ষায় ন্যূনতম বরাদ্দ দিন জিডিপির ৫ শতাংশ

অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান মামুন

অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান মামুন: বিশ্বের সবচেয়ে বিখ্যাত জার্নাল হলো ‘নেচার’। সেই নেচার জার্নালের ৫ দিন আগের একটি ইস্যুতে একটি আর্টিকেল প্রকাশিত হয়েছে যার শিরোনাম হলো, ‘India cuts periodic table and evolution from school textbooks.  ভারতে, স্কুল বছরের শুরু এই মাসে। ১৬ বছরের কম বয়সী শিক্ষার্থীরা এখন আর বিবর্তন সম্মন্ধে উড়বে না জানবে না। পর্যায় সারণি দেখবে না এবং জানবে না এর উপাদান সম্পর্কে। শিখবে না যে শক্তির উৎস পর্যায় সারণির সেই এটম। 

১৫-১৬ বছর বয়সী ছাত্র-ছাত্রীদের পাঠ্যক্রম থেকে বিবর্তন বাদ দেওয়া হবেÑ এমন খবর গত মাসে ব্যাপকভাবে প্রকাশিত হয়েছিলো এবং তখন হাজার হাজার মানুষ এর প্রতিবাদে একটি দরখাস্তে স্বাক্ষর করেছিলো। কিন্তু এসব বড় বড় বিজ্ঞানী ও জ্ঞানী ব্যক্তিদের দাবিকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ইতোমধ্যে সরকারি নির্দেশিকা প্রকাশ করেছে। যেখানে উল্লেখ আছে যে পর্যায় সারণীতে একটি অধ্যায় কাটা হবে, অন্যান্য মৌলিক বিষয় যেমন শক্তির উৎস এবং পরিবেশের সাসটেইনেবিলিটি সম্পর্কিত কিছু বিষয় বাদ গিয়েছে। এখন থেকে স্কুলের শিক্ষার্থীদের দূষণ এবং জলবায়ু-সম্পর্কিত বিষয়গুলো শেখানো হবে না। শুধু তাই না, একইসঙ্গে আরেকটু উপরের ক্লাসের ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য জীববিদ্যা, রসায়ন, ভূগোল, গণিত এবং পদার্থবিদ্যার বিষয়গুলোতে বড় রকমের কাটছাঁট হয়েছে। একটা ধর্মান্ধ দল ক্ষমতায় গেলে কী হয় তার একটি জ্বলন্ত উদাহরণ।

তাহলে একটি ক্লু অন্তত পাওয়া গেলো কেন আমাদের দেশের সরকার নতুন শিক্ষাক্রম চালু করলো। এইটা হলো ভারতকে অনুসরণ করতেই  আমাদের নতুন শিক্ষাক্রম ভারতের আদলেই বানানো হয়েছে। আমাদেরও তো বিবর্তন বাদ দেওয়া হয়েছে, আমাদেরও তো  জীববিদ্যা, রসায়ন, ভূগোল, গণিত এবং পদার্থবিদ্যার বিষয়গুলোতে বড় রকমের কাটছাঁট হয়েছে। বর্তমান বিশ্ব বাস্তবতায় শিক্ষাকে এরকমভাবে আন্ডারমাইন উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হওয়ার কোনো সুযোগ আছে? কিন্তু আমাদের তো ধর্মান্ধ দল ক্ষমতায় না। তাহলে কেন এমন হলো?

আমাদের বড় কোনো প্রাকৃতিক সম্পদ না। তবে আমাদের প্রচুর মানুষ নামের প্রাণী আছে। সেই প্রাণীদের মানুষ বানাতে পারে একমাত্র শিক্ষা। আশ্চর্যজনক ব্যাপার হলো যে সময় সর্বকালের সর্বোচ্চ টাকার বজেট ঘোষণা করা হলো, সেই সময় সর্বকালের সর্বনিম্ন বাজেট বরাদ্দ দেওয়া হলো শিক্ষায়। গত ৩ বছর ধরে ক্রমাগতভাবে বাজেট বরাদ্দ কমছে। অথচ এইবার নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নের জন্য অনেক প্রজেক্ট আছে, নতুন নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমতি দেওয়া হয়েছে তার জন্য বাড়তি খরচ আছে, ইনফ্লেশনের জন্য বাড়তি খরচ আছে। এগুলো বিবেচনায় নিলে এমনিতেই জিডিপির ন্যূনতম ২ শতাংশের ওপরে দিতে হতো। সেই জায়গায় দেওয়া হচ্ছে ১.৭৬ শতাংশ। 

আবার ইউনেস্কোর উপদেশ হলো একটি দেশকে শিক্ষাদীক্ষায় উন্নত হতে চাইলে তাকে জিডিপির অন্তত ৫.৫ শতাংশ বরাদ্দ দেওয়া উচিত। ভারত ও নেপাল দেয় তাদের জিডিপি ৪ শতাংশের বেশি। রোয়ান্ডা দেয় জিডিপির ৩.৮ শতাংশ। পাকিস্তানও আমাদের চেয়ে বেশি দেয়। আমাদের সরকারের মান, রাস্তাঘাটের মান, পরিবেশের মান, সাধারণ মানুষের মান, শিক্ষক ও সাংবাদিকতার মান ইত্যাদি এতো খারাপ হওয়ার পেছনে একটি কারণের কথাই আমি বলবো আর সেটি হলো : শিক্ষা। 

লেখক: শিক্ষক, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা বিশ্বদ্যিালয় 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়