কবির য়াহমদ: যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতি নিয়ে যতই আলোচনা হোক, যে যেভাবেই এটাকে বিশ্লেষণ করুন না কেন, এই ভিসানীতির মাধ্যমে বাংলাদেশের নির্বাচনকেন্দ্রীক রাজনীতি থেকে যুক্তরাষ্ট্র আদতে সরে গেলো। বাংলাদেশের নির্বাচন বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়, যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতি যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক পলিসি। এখানে এর বাস্তবায়নের দায়িত্ব একান্তই দুই পক্ষেরই। এখানে আলোচনা হতে পারে, কিন্তু কারো কার্যক্ষেত্রে কারো হস্তক্ষেপের সুযোগ নেই। আগে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো বাংলাদেশের রাজনৈতিক অস্থিরতার সময়ে নানাভাবে সংযুক্ত থাকত, এখন থেকে সেটা আর থাকবে না। তারা তাদের ভিসানীতি দিয়ে নির্বাচনপ্রক্রিয়া প্রকৃত অর্থে সরেই গেল। যুক্তরাষ্ট্রসহ আমরা সবাই জানি, দেশবাসী কিংবা পৃথিবীর কেউই আমেরিকার একটা ভিসার জন্যে জীবন পরিচালিত করে না। এটা কারো জীবনেরই একমাত্র লক্ষ্য নয়। ভিসানীতি প্রকাশের পর সবাই ভিসা নিয়ে যেভাবে হুমড়ি খেয়ে পড়েছে, সেটাই দেশটির অর্জন।
করোনাকাল এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ পরবর্তী-বিশ্ব যুক্তরাষ্ট্র ও ডলারের বিকল্প সন্ধানে ব্যস্ত। বাংলাদেশও এই পথে আছে ভালোভাবেই। এমন অবস্থায় একটা ভিসানীতি দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের আদতে আমাদের এই অঞ্চলে ক্রমে শক্তিশালী হয়ে ওঠতে থাকা বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রক্রিয়া থেকে সরে গিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে তাদের সুসম্পর্কের প্রমাণ রাখতে চাইছে। এখানে আমরা যদি যুক্তরাষ্ট্রের ভিসাই জীবনের ইস্পিত উদ্দেশ্য হিসেবে প্রমাণে বসি, তবে আমাদের শক্তিশালী হয়ে ওঠার প্রতিবন্ধক হিসেবে এটাই দাঁড়িয়ে যাবে। যুক্তরাষ্ট্রের কাজ যুক্তরাষ্ট্র করেছে, আমাদের কাজ সুষ্ঠু নির্বাচন, নির্বাচনে বাধা প্রদান না করা, আমরা এগুলো যেন ভালোভাবে করতে পারি। যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা পেতে নয়, আমাদের গণতন্ত্রের স্বার্থেই আমরা সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন দেখতে চাই। লেখক: সাংবাদিক