রিটায়ার্ড আর্মড ফোর্সেস অফিসার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন (রাওয়া) চেয়ারম্যান কর্নেল (অব.) মোহাম্মদ আবদুল হক নয়া দিগন্ত স্পেশাল টক অনুষ্ঠানে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলছেন, খাগড়াছড়িতে সাম্প্রতিক সহিংসতার নেপথ্যে রয়েছে আন্তর্জাতিক তৎপরতা। কথিত ধর্ষণ সংক্রান্ত অভিযোগকে বড় করে তোলার সূত্র ধরে সশস্ত্র সংগঠন ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) ও তার অঙ্গসংগঠনগুলি স্থানীয় মানুষদের বাড়ি-ঘরে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ চালিয়ে এবং সেনাবাহিনীর সদস্যদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ে ব্যাপক অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করেছে—যার মাঝে তিনজন নিহত ও অনেকে আহত হয়েছেন বলে তিনি জানিয়েছেন।
কর্নেল হকের দাবি, ইউপিডিএফের এই কার্যক্রমের পেছনে রয়েছে সীমান্তপারের কিছু শক্তির ইন্ধন ও সহায়তা। তাঁর কথায়, সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো পার্বত্যাঞ্চলে চাঁদাবাজি, জোরপূর্বক সম্পত্তি দখল এবং অপহরণসহ বিভিন্ন অবৈধ কাজে জড়িত; এসব কর্মকাণ্ড অব্যাহত থাকায় পাহাড়ীয় জীববৈচিত্র্য ও স্থানীয় জনগণের জীবনযাত্রা বিপন্ন হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, পার্বত্যাঞ্চলের অস্থিতিশীলতা কৌশলে বৃদ্ধি করে দীর্ঘমেয়াদি ভূ-রাজনৈতিক ফল আঁকার চেষ্টা হতে পারে।
রাওয়া চেয়ারম্যান সরকার এবং প্রশাসনকে কঠোর ভূমিকা নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, শুধুমাত্র সৈন্য মোতায়েন করলেই সমস্যা সমাধান হবে না; অঞ্চলের টেকসই শান্তি ও বিকাশের জন্য সিভিল প্রশাসন, অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও সামাজিক সমন্বয়ের প্রয়োজনীয়তা অপরিহার্য। তিনি স্থানীয় জনগণের মৌলিক অধিকার—শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা না হলে বিচ্ছিন্নতাবাদী মনস্তত্ত্বের জোর বাড়তে থাকবে বলে সতর্ক করেছেন।
কর্নেল হক সামরিক বাহিনীর ভূমিকা ও তদারকির প্রশংসা করলেও আহত ও নিহত সশস্ত্র বাহিনী সদস্য ও তাদের পরিবারগুলোর প্রতি রাষ্ট্রীয় সহায়তার ঘাটতি তুলে ধরেছেন। তিনি জানিয়েছেন, দীর্ঘকালীন ত্যাগ ও সংগ্রামে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাদের পর্যাপ্ত সহায়তা এবং সম্মান প্রদানের দাবি অপরিহার্য।
তিনি বলেন, খাগড়াছড়ি ব্রিগেড কমান্ডার হাসান খুব সুন্দরভাবে সিচুয়েশন ট্যাকেল করেছে। মনে হয়েছে এটা তারই সম্পত্তি, তাকে ছাড়া আর কারো দায়িত্ব নেই। আজকে সেনাবাহিনী এত কিছু করছে, কেউ অ্যাপ্রিশিয়েট করে না। ৪০০ লোক শহীদ হয়েছেন সেনাবাহিনীর সদস্য, অফিসার, জেসিও, সৈনিক। কেউ খবর রাখে? তাদের ফ্যামিলির খবর রাখে? হ্যাঁ, যারা দেশ রক্ষা করতেছে। আপনি তো এই আন্দোলনে আহত-নিহতদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে সাহায্য করছেন। এই ৪০০ সৈনিকের তাদের পরিবার হয়তো শেষই হয়ে গেছে। ৪০০ সদস্যের। এই দেশ কি খবর রেখেছে? ইন্ডিয়াতে দেখেন কিভাবে তারা সম্মানিত করে, তারা কতটুকু উপরে রাখে তাদের সেনাবাহিনীকে। আমরা কি পেরেছি সেটা? খালি সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে বিষোদগার।