নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশে প্রায়ই দেখা যায়, মানুষ পুলিশি গ্রেফতারের মুখোমুখি হলেও জানেন না, সেই পরিস্থিতিতে তাদের কী কী অধিকার রয়েছে। ফলে আইনি অধিকার থেকে বঞ্চিত হন অনেকে। সংবিধান ও ফৌজদারি আইন অনুযায়ী, একজন ব্যক্তিকে গ্রেফতারের পর কিছু মৌলিক অধিকার দিতে বাধ্য পুলিশ।
পুলিশের মিরপুর বিভাগের পল্লবী ও দারুস সালাম জোনের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) সালেহ মোহাম্মদ জাকারিয়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম তার ফেসবুকে এক পোস্টে তিনি একথা বলেন।
গ্রেফতারের সঙ্গে সঙ্গেই পুলিশকে অবশ্যই গ্রেফতারের কারণ জানাতে হবে। সংবিধানের ৩৩ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী এটি বাধ্যতামূলক। অভিযুক্ত ব্যক্তি আইনজীবীর সঙ্গে যোগাযোগের অধিকার রাখেন এবং আইনজীবীর উপস্থিতিতে জিজ্ঞাসাবাদ চাওয়ার সুযোগ তার রয়েছে। ফৌজদারি কার্যবিধির ৬১ ধারা অনুযায়ী, গ্রেফতারের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাকে আদালতে হাজির করতেই হবে। এর বাইরে সময় নেওয়া আইন লঙ্ঘনের শামিল।
গ্রেফতারকৃত ব্যক্তি নিজের বিরুদ্ধে কোনো বক্তব্য দিতে বাধ্য নন—এই নীরব থাকার অধিকার তাকে সংবিধানই দিয়েছে। পাশাপাশি, পুলিশ কোনোভাবেই শারীরিক বা মানসিক নির্যাতন করতে পারবে না। এমন নির্যাতন প্রমাণ হলে সংশ্লিষ্ট পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ রয়েছে।
বিনা পরোয়ানায় যদি গ্রেফতার হয়, এবং অপরাধ জামিনযোগ্য হয়, তবে অভিযুক্ত ব্যক্তি সঙ্গে সঙ্গে জামিন চাইতে পারেন। পুলিশকেও এ ক্ষেত্রে বাধা না দেওয়ার নির্দেশ রয়েছে। গ্রেফতার পরবর্তী সময়ে অভিযুক্ত ব্যক্তির পরিবার বা নিকটজনকে তা জানানোর এবং দেখা করার সুযোগ দেওয়ার বিধানও আছে।
আইনজীবীরা বলছেন, অধিকাংশ মানুষ এসব মৌলিক অধিকার সম্পর্কে সচেতন নন বলেই পুলিশ অনেক সময় তা লঙ্ঘন করে। তাই নাগরিকদের উচিত এসব বিষয়ে জানা এবং প্রয়োজনে জাতীয় আইন সহায়তা সংস্থা, ব্লাস্ট কিংবা আইন ও সালিশ কেন্দ্রের মতো সংগঠনের সহায়তা নেওয়া।
আইনি অধিকার জানা শুধু প্রয়োজন নয়, এটি আপনার নিরাপত্তার অংশ। আপনার অধিকার কেউ যেন হরণ করতে না পারে, তার জন্য নিজের সচেতনতাই সবচেয়ে বড় অস্ত্র।