মাসুদ আলম: [২] রাজধানীর মোহাম্মদপুরে ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টার-এর নির্বাহী সম্পাদক সৈয়দ আশফাকুল হকের বাসার নয়তলা থেকে পড়ে কিশোরী গৃহকর্মী প্রীতি উরাংয়ের মৃত্যুর ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) এবং নারীপক্ষ। একই বাসায় এর আগেও এক গৃহকর্মী ছাদ থেকে পড়ে আহত হয়েছিলো। 

[৩] মঙ্গলবার আসক এক বিবৃতিতে এ ঘটনার দ্রুত ও নিরপেক্ষ তদন্ত এবং দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে। পাশাপাশি শিশুদের গৃহকর্মে নিয়োগ বন্ধে প্রয়োজনীয় নীতিমালা প্রণয়নের জোর আহ্বান জানিয়েছে। 

[৪] বিবৃতিতে বলা হয়, গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে জানা যায়, গত ৬ ফেব্রুয়ারি মোহাম্মদপুর শাহজাহান রোডের একটি বাড়ির নয়তলা থেকে পড়ে প্রীতি উরাং নামের একজন শিশু গৃহকর্মীর মৃত্যু ঘটে। প্রীতির বাড়ি মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার মিত্তিঙ্গা গ্রামে। তার বাবা লোকেশ উরাং একজন চা-শ্রমিক। প্রীতি গত দুই বছর যাবত ডেইলি স্টারের নির্বাহী সম্পাদক সৈয়দ আশফাকুল হকের বাসায় কাজ করত।

[৫] এতে আরও বলা হয়, ঘটনার দিন সকালে প্রীতি ওই ভবনের নয়তলা থেকে পাশের দোতলা টিনশেডের ওপর পড়ে এবং সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান ওই বাড়ির ম্যানেজার। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রীতিকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় অভিযুক্তদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে। একই বাসায় গত বছরের ৬ আগস্ট ফেরদৌসি নামের আরেক শিশু গৃহকর্মীর লাফিয়ে পড়ে গুরুতর আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছিল। 

[৬] আসক নির্বাহী পরিচালক ফারুখ ফয়সল এই বিবৃতিতে আরো বলেন, একই বাসায় অত্যন্ত কম সময়ের ব্যবধানে দুজন শিশুর হতাহতের ঘটনার পুনরাবৃত্তিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে আসক। পাশাপাশি, প্রীতি উরাংয়ের মৃত্যুর ঘটনার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি জানাচ্ছে। গৃহকর্মে শিশুদের ব্যবহারকে শিশুদের ঝুঁকিপূর্ণ কাজের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন এবং গৃহকর্মীদের প্রতি চলমান সহিংসতা প্রতিহতে গৃহকর্মী সুরক্ষা ও কল্যাণ নীতি ২০১৫ যথাযথভাবে বাস্তবায়নে উদ্যোগ গ্রহণ করা অত্যন্ত জরুরি।

[৭] সোমবার নারীপক্ষের আন্দোলন সম্পাদক সাফিয়া আজীম স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে বলা হয়, সরকার, পুলিশ প্রশাসন ও বিচার বিভাগের কাছে নারীপক্ষ'র দাবি, প্রীতি উরাং এর মৃত্যুর নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত ঘটনা উদ্ঘাটন করে দোষী প্রত্যেক ব্যক্তিকে বিচারের সম্মুখীন করা হোক। একজন দোষীও যেন কোনরকম প্রভাব-প্রতিপত্তি খাটিয়ে বা আইনের ফাঁক- ফোকর গলিয়ে বেরিয়ে যেতে না পারে সে বিষয়টি নিশ্চিত করা এবং এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণেরও দাবি জানাচ্ছে নারীপক্ষ।

[৮] বিবৃতিতে আরও বলা হয়, গত বছরের ৬ আগস্ট শিশু গৃহকর্মী ফেরদৌসীও ওই বাসা থেকে নীচে পড়ে মারাত্মক আহত হয় এবং তার উপরে নানা ধরনের নির্যাতনের খবর প্রকাশ পায়। সম্পাদনা: সালেহ্ বিপ্লব