শিরোনাম
◈ আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবি: শাহবাগে অবস্থান চলবে, শনিবার বিকেলে গণজমায়েত ◈ দ্রুত সিদ্ধান্ত না এলে ফের ‘মার্চ টু ঢাকা’: নাহিদ ইসলাম ◈ আজ রা‌তে পাকিস্তান থে‌কে বিশেষ বিমানে দুবাইয়ে যাবেন ‌ক্রিকেটার নাহিদ, রিশাদ ও বাংলাদেশি দুই সাংবাদিক ◈ শ্রীলঙ্কার বিরু‌দ্ধে সিরিজ জিতে দেশে ফিরলো বাংলা‌দে‌শের যুবারা ◈ উত্তরায় মহাসড়ক অবরোধ করে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবি ছাত্র-জনতার, ঘণ্টাব্যাপী যানজট ◈ বিভাজন নয় ঐক্য, প্রতিশোধ নয় ভালোবাসা—গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ার আহ্বান মির্জা ফখরুলের ◈ আইপিএল আয়োজনের প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছে আরব আমিরাত ◈ ভারত আসবে না বাংলাদেশ সফরে, হবে না এশিয়া কাপও ◈ এপ্রিলে  ১০১ কোটি ৩৮ লাখ টাকার চোরাচালান পণ্যসামগ্রী জব্দ করেছে বিজিবি ◈ ঐক্যবদ্ধ শাহবাগ বিএনপির অপেক্ষায়: সারজিস আলম

প্রকাশিত : ০৬ জুন, ২০২৩, ১০:৫৮ রাত
আপডেট : ০৭ জুন, ২০২৩, ০৩:২২ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

এ মাসেই লোডশেডিংয়ের সমাধান: বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী

মনিরুল ইসলাম, মনজুর এ আজিজ: বিদ্যুতের লোডশেডিংটা আকস্মিক, এটা বেশিদিন থাকবে না। এ মাসের মধ্যেই সমাধান করতে পারবো বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। তবে এ সময়ে সবাইকে ধৈর্য ধরার অনুরোধ করেছেন তিনি। 

মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে ২০২২-২৩ অর্থবছরের সম্পূরক বাজেটে জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগের মঞ্জুরি দাবির ছাঁটাই প্রস্তাবের ওপর সংসদ সদস্যদের বক্তব্যের জবাব দিতে গিয়ে একথা বলেন তিনি। চলতি অর্থবছরে জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগের জন্য ৩২ কোটি ৪৬ লাখ ৪ হাজার টাকা মঞ্জুরি দাবি করেন প্রতিমন্ত্রী। তার এই দাবিতে ছাঁটাই প্রস্তাব দেন ১০ জন সংসদ সদস্য। তবে আলোচনায় অংশ নেন ছয় জন। বাকিরা অনুপস্থিত ছিলেন।

ছাঁটাই প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে নসরুল হামিদ বলেন, কোভিড আমাদের অনেক ক্ষতি করেছে। জিনিসপত্রের দাম বেড়ে গেছে, আরেকটি ক্ষতি হলো করোনায় যারা আক্রান্ত হয়েছেন তাদের স্বাস্থ্যগতভাবে মেমোরিটা লস করে দিয়েছে। কারণ আমরা খুব দ্রুত ভুলে যাই। একটা সময় ১৬ ঘণ্টা, ১৮ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকতো না। সেখান থেকে আমরা শতভাগ বিদ্যুতায়ন করেছি।

বর্তমান বিদ্যুৎ সংকট আকস্মিক উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা যেকোনও মুহূর্তে ২০ থেকে ২২ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ দিতে পারি। তার জন্য দরকার জ্বালানি। দুই-তিন বছর কোভিডে আক্রান্ত ছিল সারাবিশ্ব। প্রত্যেকটি দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এরপর এলো রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। সারাবিশ্বের সমস্ত কিছুর দাম বেড়ে গিয়েছিল। গ্যাস ও তেল পাওয়া যাচ্ছিল না। তারপরও আমরা চেষ্টা করেছি কীভাবে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ও জ্বালানি রাখা যায়। বড় বড় চ্যালেঞ্জ আছে এবং থাকবে। আমাদের বড় চ্যালেঞ্জ হলো সক্ষমতা, কত সাশ্রয়ে জ্বালানি ও বিদ্যুৎ দিতে পারবো, সেটা ভবিষ্যতের জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে গেছে। বিশ্বের বাজারে কখন, কী হবে ধারণা করা যাচ্ছে না, নিরবচ্ছিন্ন জ্বালানি পাবো কি পাবো না। নিজেদের জ্বালানির সর্বোত্তম ব্যবহার করছি আমরা। সেটা ভবিষ্যতে ব্যবহারের পরিকল্পনার জন্যও অর্থ লাগে। এক একটি কূপ খননের জন্য লাগে ৯ থেকে ২১ মিলিয়ন ডলার।

তিনি বলেন, বর্তমানে দিনের বেলায় ১২ হাজার থেকে সাড়ে ১২ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপন্ন করতে পারি। পিক আওয়ারে সন্ধ্যা বেলায় ১৪ থেকে ১৫ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারি। বর্তমানে ২৫০০ মেগাওয়াট লোডশেডিং চলছে। আরেকজন সংসদ সদস্য বলেছেন, আমরা প্রচার করছি না। কিন্তু আমি বারবার আসছি, প্রচার করছি। ওয়েবসাইটে দিয়েছি, বিজ্ঞাপন প্রচার করছি। আমরা কষ্টটা সকলের সঙ্গে ভাগ করতে চেয়েছি। সকলকে জানিয়েছি কোথায়, কীভাবে হবে। মিডিয়াতে বলা হয়েছে বারবার। লোডশেডিংটা আকস্মিক, এটা বেশিদিন থাকবে না।

নসরুল হামিদ বলেন, ৭১ বিলিয়ন ডলার পাওনার তথ্য ভুল। পাওনা আছে অবশ্যই, সকলের সহযোগিতায় সেটা আমরা অবশ্যই জোগান দিচ্ছি। অনেকেই বিল দিচ্ছে। কিন্তু বিদ্যুৎ বিভাগের বিল বাকি আছে প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকা। আমাদের একজন সংসদ সদস্য বলছেন, আমরা বিদ্যুৎ বিল দিচ্ছি। অনেকেই বিল দিচ্ছে না, কেন হলো? সেটা হলো করোনা কারণে। করোনার সময় আমরা বিল নেয়নি। আমরা বলেছিলাম, আমরা চাপিয়ে দিয়ে মাস বিল নিচ্ছি না। 

আমরা সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেছি যাতে মানুষ অস্বস্তিতে না পড়ে। আমরা প্রতিবছর জ্বালানি খাতে প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিয়েছি। তেলে ভর্তুকি দেওয়া হচ্ছে না। কিন্তু গ্যাসে ভর্তুকি দেওয়া হচ্ছে সবমিলিয়ে প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকা। এই বছরে ২৪ থেকে ২৭ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি যাবে শুধু বিদ্যুৎ খাতে। আমরা তো সমন্বয় করতে পারতাম। কিন্তু সেটা করিনি। প্রধানমন্ত্রী চাচ্ছেন সকলের কাছে যাতে বিদ্যুৎটা পৌঁছায়। এ কারণে আমি মনে করি, সকলকে ধৈর্যধারণ করতে হবে।

বর্তমান সংকটের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে নসরুল হামিদ বলেন, আমরা সময়মতো কয়লার জন্য এলসি করতে পারিনি। বৈশ্বিক ব্যবস্থা ও বর্তমানে অর্থনৈতিক ব্যবস্থা সবকিছুর ওপর চিন্তা করে সময়মতো কয়লাটা আনতে পারিনি। সে কারণে পায়রার এ অবস্থা হয়েছে। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে প্ল্যান্ট চালু করে দেবো। তিনি বলেন, আমাদের নতুন পাওয়ার প্ল্যান্ট চালু হবে, পায়রাও চালু হবে। 

রামপাল চলছে। এসএস পাওয়ার চালু হয়ে যাবে। আমরা ভারত থেকে বিদ্যুৎ আনছি। আরও নিয়ে আসবো। কিন্তু বৈশ্বিক জ্বালানির দাম বেড়ে যাওয়ায় কিছু কিছু জায়গায় আমাদের অর্থের জোগান দিতে সমস্যা হয়ে গেছে। এটা বেশি দিনের জন্য না। আমরা মনে করি ১৫ থেকে ১৬ দিনের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে। 

জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, বিল না পরিশোধের কারণে পায়রা বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ করে দিয়েছেন। বিদ্যুৎ বিল তো মানুষের বাকি নেই। গ্রাহকরা তো সবাই বিল দিচ্ছেন। তাহলে এই বিল কেন বাকি থাকছে? একটা হতে পারে ক্যাপাসিটি চার্জ। গণমাধ্যমে দেখেছি ৯০ হাজার কোটি টাকা ক্যাপাসিটি চার্জ এসেছে। ২০ হাজার কোটি টাকা নাকি এখনও বাকি। কেন এত ক্যাপাসিটি চার্জ হয়? কেন চুক্তিটা এভাবে করা হলো যে ক্যাপাসিটি চার্জ দিতেই হবে। কেন বিদ্যুৎ উৎপাদনের সাথে খাম্বা ও সঞ্চালন লাইন করা হলো না।

তিনি বলেন, ১৫৩টি কেন্দ্রের সবগুলোতে কম উৎপাদন হচ্ছে। সরকারের ধারাবাহিক সাফল্যের একটি জায়গা ছিল বিদ্যুৎ। সেটি একেবারেই নষ্ট হয়ে গেলো। এর থেকে তো আমি মনে করি জনরোষের সৃষ্টি হবে।
জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য রওশন আরা মান্নান বলেন, দেশের জ্বালানি নিরাপত্তা ও বিদ্যুৎ বিভাগ হুমকির মধ্যে পড়েছে। কবে যে আবার লোডশেডিং কমবে! এখন যেভাবে বিদ্যুৎ সমস্যা দেখা দিচ্ছে আগামী ১০ বছর পরে আমাদের গ্যাসও শেষ হয়ে যাবে।

জাতীয় পার্টির আরেক সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, মানুষ বিদ্যুৎ পাচ্ছে না। বিদ্যুৎ না থাকলে দেশের অগ্রগতি থেমে যাবে। কৃষি উৎপাদন কমে যাবে। সমস্ত জায়গায় স্থবিরতা তৈরি হবে। বিদ্যুৎমন্ত্রী গোটা বাংলাদেশে বিদ্যুৎ দিয়েছেন এটা অস্বীকার করার উপায় নেই। কিন্তু নেই। হঠাৎ করে কী হলো যে বিদ্যুৎ চলে গেলো। আগেই যদি কয়লা বা ডিজেল আমদানি করা যেতো আজকের এই সমস্যা হতো না। 

রুস্তম আলী ফরাজী বলেন, শতভাগ বিদ্যুৎ দিয়েছে সরকার। বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছে কিন্তু মন্ত্রীর কোনও কথা নেই। কেন? জনগণকে কনভিন্স করতে হবে। গণশুনানি করে বিষয়টি জানাতে হবে।  সম্পাদনা: শামসুল হক বসুনিয়া

এমএএ/এসএইচবি/এনএইচ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়