শিরোনাম
◈ তাপপ্রবাহের কারণে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসও বন্ধ ঘোষণা ◈ সোনার দাম কমেছে ভরিতে ৮৪০ টাকা ◈ ঈদযাত্রায় ৪১৯ দুর্ঘটনায় নিহত ৪৩৮: যাত্রী কল্যাণ সমিতি ◈ অনিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল বন্ধে বিটিআরসিতে তালিকা পাঠানো হচ্ছে: তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ◈ পাবনায় হিটস্ট্রোকে একজনের মৃত্যু ◈ জলাবদ্ধতা নিরসনে ৭ কোটি ডলার ঋণ দেবে এডিবি ◈ ক্ষমতা দখল করে আওয়ামী শাসকগোষ্ঠী আরও হিংস্র হয়ে উঠেছে: মির্জা ফখরুল ◈ বেনজীর আহমেদের চ্যালেঞ্জ: কেউ দুর্নীতি প্রমাণ করতে পারলে তাকে সব সম্পত্তি দিয়ে দেবো (ভিডিও) ◈ চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা ৪২ দশমিক ৩ ডিগ্রি, হিট স্ট্রোকে একজনের মৃত্যু ◈ আইনজীবীদের গাউন পরতে হবে না: সুপ্রিমকোর্ট

প্রকাশিত : ২৩ মার্চ, ২০২৩, ১০:৩৫ রাত
আপডেট : ২৪ মার্চ, ২০২৩, ০৩:৪৫ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

চলতি বছরে গ্যাসের উৎপাদন বেড়েছে: পেট্রোবাংলা

জনেন্দ্র নাথ সরকার

মনজুর এ আজিজ: পেট্রোবাংলা তথা জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ কাজ করেছে বলেই চলতি বছরের শুরুতেই ২৩০০ এমএমসিএফডি গ্যাস পাওয়া যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান জনেন্দ্র নাথ সরকার। তিনি বলেন, সমীক্ষা রিপোর্ট অনুযায়ী ২০২৩ সালে দেশীয় ফিল্ডগুলোর গ্যাসের উৎপাদন ১৯০০ এমএমসিএফডিতে (মিলিয়ন ঘনফুট দৈনিক) নেমে আসার কথা ছিল। বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) পেট্রোবাংলার বোর্ড রুমে জ্বালানি খাতের সাংবাদিকদের সংগঠন ফোরাম ফর এনার্জি রিপোর্টার্স বাংলাদেশের (এফইআরবি) সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এমন দাবি করেন তিনি। গত ২ জানুয়ারি পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নিয়ে প্রথমবারের মতো  সাংবাদিকদের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক মতবিনিময় সভা করেন তিনি।  

জনেন্দ্র নাথ সরকার বলেন, দেশীয় উৎস থেকে আগামী কয়েক বছরে গ্যাস সরবরাহ খুব বেশি বৃদ্ধির সম্ভাবনা ক্ষীণ। সাগরে বড় কোন রিজার্ভ পেলেও তা সিস্টেমে আনতে কমপক্ষে ৫ থেকে ৮ বছর সময়ের প্রয়োজন হবে। অন্যদিকে নতুন নতুন শিল্পকারখানা হচ্ছে বাড়ছে গ্যাসের চাহিদাও। তাই চাহিদা পূরণে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানি আরও বাড়ানোর পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। তিনটি নতুন এলএনজি টার্মিনাল স্থাপন ও এলএনজি আমদানির উৎস বাড়াতে কাজ করছে সরকার।

তিনি বলেন, এলএনজি আমদানির জন্য দেশে দুটি ভাসমান টার্মিনাল আছে মহেশখালীতে। সেটিতে দৈনিক ১ হাজার মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস আমদানির সক্ষমতা রয়েছে। তবে বিশেষ দিন ছাড়া গড়ে ৮৫০ মিলিয়নের বেশি আমদানি করা সম্ভব হয় না। অবশ্য এলএনজি আমদানির সক্ষমতা বাড়ানোর কাজ চলমান রয়েছে। পায়রায় একটি ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল করার বিষয়ে এক্সিলারেট এনার্জির সঙ্গে এক মাসের মধ্যেই একটি চুক্তি স্বাক্ষর হতে পারে। টার্মিনালটির সক্ষমতা হবে ৫০০ মিলিয়ন ঘনফুট, পরে আরও বাড়ানো হবে।

মহেশখালীতে একটি ভাসমান টার্মিনাল নির্মাণে সামিট গ্রুপের সঙ্গে আলোচনা অব্যাহত আছে। কিছু বিষয়ে মতানৈক্য দূর হলেই চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে। এ টার্মিনাল থেকে ২০২৫ সালের শেষ নাগাদ এলএনজি সরবরাহ করা যাবে। তবে পায়রায় পাইপলাইন না থাকায় গ্যাস সরবরাহ পেতে তিন বছর লাগতে পারে। এর বাইরে মহেশখালীতে স্থলভাগের প্রথম টার্মিনাল নির্মাণ করা হবে। জমির বিষয়ে কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানির অনাপত্তি পেলেই প্রস্তুতি শুরু হবে। এটি প্রথমে ১০০০ মিলিয়ন ঘনফুট সক্ষমতার করা হবে, পরে দ্বিগুণ করা হবে।

পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান বলেন, দেশে দৈনিক গ্যাসের চাহিদা রয়েছে ৪ হাজার মিলিয়নের মতো। সরবরাহ করা হচ্ছে ৩ হাজারের মতো। তবে সংযোগের জন্য অপেক্ষমান গ্রাহকদের চাহিদা হিসাব করা হয়নি। অপেক্ষমাণ গ্রাহকের চাহিদা নির্ধারণের জন্য একটি কমিটি কাজ করছে। তবে ২০৩০ সাল নাগাদ গ্যাসের চাহিদা ধরা হয়েছে ৫৬০০ মিলিয়ন ঘনফুট। 

তিনি বলেন, দেশের স্থলভাগে গ্যাস উৎপাদন বাড়াতে ২০২৫ সালের মধ্যে ৪৬টি কূপ খননের পরিকল্পনা নেয় পেট্রোবাংলা। এটি এখন ২০২৪ সালের মধ্যে শেষ করার লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে ১৬টি কূপের উন্নয়ন প্রকল্প করা হয়েছে। সব মিলিয়ে সর্বোচ্চ ২৮টি করতে পারবে দেশীয় কোম্পানি বাপেক্স। বাকি কূপগুলোর কাজ বিদেশি কোম্পানিকে দিয়ে বাপেক্সের দর অনুযায়ী করানোর চেষ্টা চলছে। এসব কূপের মাধ্যমে ৬০০ মিলিয়নের মতো উৎপাদন বাড়বে বলে আশার কথা জানান তিনি।

ভোলার উদ্বৃত্ত গ্যাস সিএনজি আকারে আনার বিষয়টি চূড়ান্ত ধাপে রয়েছে। আশা করা যাচ্ছে, জুন মাস নাগাদ এই কার্যক্রম শুরু হবে। প্রথমধাপে দৈনিক ৫ মিলিয়ন গ্যাস সরবরাহ করা হবে। পরে আরও ২০ মিলিয়ন গ্যাস সরবরাহ করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। তবে দামের বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি।

তিনি বলেন, সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বর্তমানে কাতার এবং ওমান থেকে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির আওতায় এলএনজি আমদানি করা হচ্ছে। বছরে ৫৬টি এলএনজি কার্গো সরবরাহ করে দেশ দু’টি। চুক্তি অনুসারে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দামের সঙ্গে আনুপাতিক হারে এ দাম নির্ধারিত হয়। এতে বিশ্ববাজারে এলএনজির দাম চড়া হলেও তুলনামূলক কম দামে পাওয়া যায় চুক্তি অনুসারে। দেশ দু’টির সঙ্গে সরবরাহ আরও বাড়ানোর বিষয়ে আলোচনা প্রায় চূড়ান্ত। তারা সরবরাহ বাড়াতে সম্মত হয়েছে, এখন দাম ও পরিমাণ চূড়ান্ত করা হবে। আমাদের কাছে আরও বেশ কিছু প্রস্তাব রয়েছে, সেগুলো নিয়ে কাজ করছে আরপিজিসিএল। তবে স্বস্তির খবর হচ্ছে, আন্তর্জাতিক বাজারে (খোলা মার্কেটে) এলএনজির দাম কমে এসেছে। সর্বশেষ যে দরটি চূড়ান্ত হচ্ছে তাতে ১৩ ডলারের কাছাকাছি পড়বে। জুন পর্যন্ত ১২টি কার্গো আমদানি করা হবে।

বাপেক্সসহ পেট্রোবাংলার অধীনস্থ কোম্পানিগুলোকে গতিশীল করার বিষয়ে তিনি বলেন, বাপেক্সে দু’টি মামলার কারণে পদোন্নতি ঝুলে ছিল। আমি যোগদানের পর তাদের সঙ্গে বৈঠক করে সুরাহা করার উদ্যোগ নিয়েছি। তাদের এসিআর নিয়ে একটি জটিলতা ছিল, সেটিও সমাধান করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জোড়াতালি দিয়ে কাঙ্খিত সেবা দেওয়া সম্ভব হয় না।

সিস্টেম লস প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান বলেন, এখন প্রত্যেকটি কোম্পানির প্রান্তে মিটার বসানো হয়েছে। যে কোম্পানি যতটুকু নেবে তাকে সেই পরিমাণ বিল দিতে হবে। কোনো কোম্পানির সিস্টেম লস হলে তা তাকেই বহন করতে হবে। পেট্রোবাংলা ১০০ ভাগই বুঝে নেবে।  

এমএ/এসবি২

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়