জমি বাংলাদেশে সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদের অন্যতম। কিন্তু বিস্ময়ের ব্যাপার হলো, এখনও অনেক মানুষের নামে জমি থাকলেও তারা জানেন না ঠিক কোথায় সেই সম্পত্তি অবস্থিত, কিংবা মালিকানা বর্তমানে কার নামে আছে। প্রযুক্তির অগ্রগতিতে এখন এসব তথ্য জানতে আর দালাল বা অফিসে ঘুরে বেড়ানোর প্রয়োজন নেই। ঘরে বসেই অনলাইনে মুহূর্তে বের করে ফেলা যায় জমির খতিয়ান ও মালিকানা সংক্রান্ত সব তথ্য।
ভূমি মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে দেশের সব ভূমি সেবাকে ডিজিটালাইজ করেছে। ফলে খতিয়ান সংগ্রহ, মালিকানা যাচাই, জমির দাগ নম্বর বা সীমানা সবই এখন অনলাইনে সহজেই দেখা যায়।
অনেক পরিবারেই দেখা যায় বাবা-মা, দাদা-দাদি মৃত্যুর আগে জমি রেখে গেছেন, কিন্তু উত্তরাধিকারীরা সঠিক অবস্থান বা মালিকানার তথ্য জানেন না। আবার জমি ক্রয়-বিক্রয়ে দালালের প্রতারণায় পড়েও মানুষ অর্থ হারান। তাই নিজের জমি সম্পর্কে সঠিক ধারণা রাখা এখন অত্যন্ত জরুরি।
ডিজিটাল সেবার ফলে এখন যে কেউ নিজের নাম, বাবা-মায়ের নামে বা পূর্বপুরুষদের রেখে যাওয়া জমির খতিয়ান সহজেই অনলাইনে বের করতে পারেন।
অনলাইনে জমির মালিকানা জানবেন যেভাবে
বর্তমানে জমির মালিকানা যাচাই করার দুটি উপায় রয়েছে—
১) ভূমি অফিসে সরাসরি খতিয়ান মিলিয়ে দেখা
কেউ চাইলে নিকটস্থ ভূমি অফিসে গিয়ে মূল ভলিউম বই মিলিয়ে মালিকানা ও খতিয়ান তথ্য যাচাই করতে পারেন।
যদি আপনার খতিয়ানের তথ্য অফিসের তথ্যের সঙ্গে না মেলে—তাহলে সেটি জালিয়াতির ইঙ্গিত।
২) অনলাইনে ঘরে বসেই মালিকানা জানা
জমির মালিকানা অনলাইনে দেখতে প্রয়োজন হবে—একটি স্মার্টফোন ও ইন্টারনেট সংযোগ।
এরপর আপনাকে যেতে হবে ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের সরকারি ওয়েবসাইটে। সেখানে খতিয়ান তথ্য অনুসন্ধান (Search Khatian) অপশনে গিয়ে প্রয়োজনীয় তথ্য পূরণ করলেই পাওয়া যাবে জমির সম্পূর্ণ মালিকানা, দাগ নম্বর, সীমানা এবং অন্যান্য তথ্য।
জমির মালিকানা যাচাই করা কেন জরুরি?
জমি কেনার আগে মালিকানা যাচাই করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ—
প্রতারকরা ভুয়া মালিক সাজিয়ে নকল কাগজপত্র দেখিয়ে জমি বিক্রি করতে পারে।
যদি জমিটি মৃত মালিকের নামে থাকে এবং ওয়ারিশ নির্ধারিত না হয়, ভবিষ্যতে দখল নিয়ে বড় ঝামেলায় পড়তে পারেন। জমির দাগ, সীমানা বা আসল মালিক সঠিকভাবে যাচাই না করলে আইনি জটিলতা তৈরি হতে পারে।
তাই জমি কেনার আগে এবং নিজের জমি সম্পর্কে জানতে অনলাইনে মালিকানা যাচাই করা অপরিহার্য।
অনলাইনে খতিয়ান ও জমির মালিকানা বের করা এখন অত্যন্ত সহজ। সরকারি পোর্টালে প্রবেশ করে কয়েকটি তথ্য দিলেই আপনার বা আপনার পূর্বপুরুষদের রেখে যাওয়া জমির সমস্ত তথ্য মুহূর্তে পাওয়া যায়। আর সন্দেহ হলে নিকটস্থ ভূমি অফিস থেকেও যাচাই করা যায় মূল খতিয়ান।
ডিজিটাল ভূমি সেবার ফলে জালিয়াতি কমছে, ঝামেলা কমছে এবং মানুষের নিজের সম্পদ সম্পর্কে ধারণাও পরিষ্কার হচ্ছে।
সূত্র: জনকণ্ঠ