দেশের বর্তমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিবেচনা করে ব্যক্তিগত মোবাইল সিমের ব্যবহার আরও সীমিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, একজন নাগরিক তার জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) বিপরীতে সর্বোচ্চ ৫টি সিম নিবন্ধন করতে পারবেন। আগামী ২০২৬ সালের জানুয়ারি মাস থেকে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে।
এর আগে একজন গ্রাহক একটি এনআইডি ব্যবহার করে সর্বোচ্চ ১৫টি সিম ব্যবহার করতে পারতেন।
জাতীয় নিরাপত্তা ও আন্তর্জাতিক মানদণ্ড বিবেচনায় গত মে মাসে এই সংখ্যা কমিয়ে ১০টি করা হয়। এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে ৩০ অক্টোবর, ২০২৫ এর মধ্যে অতিরিক্ত সিম ডি-রেজিস্ট্রার করার সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছিল এবং ৩১ অক্টোবর, ২০২৫ থেকে অতিরিক্ত সিমগুলো বন্ধ করা শুরু হবে বলে বিটিআরসি চেয়ারম্যান সংবাদ সম্মেলনে জানান।
সম্প্রতি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি বিশেষ আইনশৃঙ্খলা সভায় দেশের বর্তমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এবং অপতথ্য (ভুয়া তথ্য) ও গুজব ছড়ানো রোধের বিষয়টি বিবেচনা করে সিমের সংখ্যা আরও কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বিটিআরসি'র একজন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা জানান, এই সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে আগামী ১ জানুয়ারি থেকে নতুন সিম নিবন্ধনের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৫টি সিমের সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে। এটি অনুমোদনের জন্য ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগে পাঠানো হবে এবং অনুমোদন পেলে ২০২৬ সালের জানুয়ারি থেকে কার্যকর হবে।
গত ২৬ অক্টোবর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বিশেষ আইনশৃঙ্খলা সভা শেষে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লে. জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.) জানান যে, নির্বাচনের আগে ব্যক্তিগত সিমের সংখ্যা ১০ থেকে কমিয়ে পাঁচ থেকে সাতটি করা হবে। তবে সরকারের দীর্ঘমেয়াদী লক্ষ্য হলো এটিকে দুটি সিমে নামিয়ে আনা।
বিটিআরসি'র সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বর্তমানে দেশে ১৯ কোটিরও বেশি সিম ব্যবহার হচ্ছে, যা প্রকৃত গ্রাহক সংখ্যার তুলনায় অনেক বেশি। এতে বোঝা যায় যে একজন ব্যক্তি একাধিক সিম ব্যবহার করেন। অনিবন্ধিত সিম বা অন্যের নামের সিম ব্যবহার করে ভুয়া তথ্য, গুজব ছড়িয়ে পড়া এবং ফেসবুকে ভুয়া অ্যাকাউন্ট খোলার মতো অপরাধমূলক কাজ বেড়ে যাওয়ায় সরকার এই নিয়ন্ত্রণমূলক উদ্যোগ নিয়েছে।
সূত্র: দৈনিক জনকণ্ঠ