শিরোনাম
◈ রাজনৈতিক ঐকমত্য জরুরি: কমিশনের সর্বশেষ বৈঠক আজ, সনদ বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত সরকারের হাতে? ◈ সাবেক দুই সেনা কর্মকর্তার এনসিপি থেকে পদত্যাগের ঘোষণা ◈ নেপালের অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আলোচনায় আসা কে এই সুশীলা কার্কি? ◈ ভারতের সুপ্রিম কোর্টে সতর্কবার্তা: বাংলাদেশ-নেপালে তরুণদের আন্দোলনে সরকার পতনের প্রসঙ্গ টেনে বিজেপিকে হুঁশিয়ারি ◈ কাতারের পর এবার ইয়েমেনে হামলা চালাল ইসরায়েল ◈ কুড়িগ্রামের সাবেক ডিসি সুলতানা পারভীনকে সাময়িক বরখাস্ত ◈ ৯/১১ হামলার ২৪ বছর: নিহতদের স্মরণে যুক্তরাষ্ট্রে শোক ও শ্রদ্ধা ◈ ৩৩ বছর পর ভোট জাকসুতে—ভিপি, জিএস, এজিএসসহ ২৫ পদে লড়ছেন ১৭৭ প্রার্থী ◈ নরসিংদীতে তুচ্ছ ঘটনায় আপন দুই ভাইকে কুপিয়ে হত্যা ◈ চিঠি লিখে ভারতকে একহাত নিলেন নেপালের পালিয়ে যাওয়া প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত : ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ০৩:৫৭ রাত
আপডেট : ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ০৯:০০ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

রাজনৈতিক ঐকমত্য জরুরি: কমিশনের সর্বশেষ বৈঠক আজ, সনদ বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত সরকারের হাতে?

জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি ও বাস্তবায়ন পদ্ধতি নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আজ সর্বশেষ সংলাপ করতে যাচ্ছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। এতে অংশ নেবেন কমিশনের সদস্য ও ৩০টি রাজনৈতিক দলের সদস্যরা। এছাড়া উপস্থিত থাকবেন বিশেষজ্ঞরা। সংলাপে সনদের আইনি ভিত্তি ও বাস্তবায়ন পদ্ধতি চূড়ান্ত করতে চায় কমিশন। এক্ষেত্রে মূল সনদ এবং বাস্তবায়ন পদ্ধতি আলাদা থাকবে। সবকিছুর জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য জরুরি। তবে আজকের বৈঠকেও এটি সম্ভব না হলে বিষয়টি সরকারের ওপর ছেড়ে দেবে কমিশন।


এদিকে বিষয়টি নিয়ে বুধবারও নিজেদের মধ্যে বৈঠক করেছে কমিশন। সেখানে কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজসহ অন্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

জানা গেছে, বহু কাঙ্ক্ষিত জুলাই জাতীয় সনদ এখনও চূড়ান্ত হয়নি। তবে এ পর্যন্ত আলোচনার ভিত্তিতে সমন্বিত খসড়ায় ৮৪টি সুপারিশ তৈরি করেছে কমিশন। বিশেষজ্ঞদের মতামতের আলোকে সনদে ঐকমত্য হওয়া ৮৪টি সুপারিশ তিন ভাগে বাস্তবায়ন হবে। এর মধ্যে ৩৩টি বিশেষ সাংবিধানিক আদেশে, ২১টি রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশ এবং ৯টি সরকারের নির্বাহী আদেশে বাস্তবায়নের চিন্তা রয়েছে। বাস্তবায়ন পদ্ধতির বিষয়টি কমিশনের পক্ষ থেকে চিঠি দিয়ে সরকারকে জানানো হবে। তবে দুটি ইস্যুতে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতবিরোধ বিদ্যমান। প্রথমত, সনদের আইনি ভিত্তি এবং দ্বিতীয়ত, কীভাবে বাস্তবায়ন হবে এই সনদ।

বিএনপি চায় আগামী নির্বাচিত সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পরবর্তী দুই বছরের মধ্যে সনদ বাস্তবায়ন হবে। আর জামায়াত ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) চায় সনদ বাস্তবায়ন করে এর ভিত্তিতেই আগামী জাতীয় নির্বাচন হতে হবে। এসব বিষয় নিয়ে বিতর্কের পর সনদ বাস্তবায়নের প্রক্রিয়ার ব্যাপারে সম্প্রতি রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে মতামত এসেছে। এসব মতামত নিয়ে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গেও একাধিক বৈঠক করেছে কমিশন। এর ভিত্তিতে সনদ বাস্তবায়নে রূপরেখা তৈরির জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে বৈঠক করা হচ্ছে। এর আগে দলগুলো বেশ কিছু মতামত দিয়েছে। এই মতামত বিশ্লেষণ করে বিশেষজ্ঞরা কিছু সুপারিশ করেছে। সেই সুপারিশ বৃহস্পতিবার দলগুলোর কাছে উপস্থাপন করা হবে। সেক্ষেত্রে তারা কোনো ব্যাখ্যা চাইলে বিশেষজ্ঞরা মতামত দেবেন। আর এটাই হবে কমিশনের সঙ্গে দলগুলোর সর্বশেষ ও চূড়ান্ত আলোচনা। এই আলোচনায় কোনো সমাধান না হলে বাকি সিদ্ধান্ত সরকারের হাতে ছেড়ে দিয়ে কমিশন তার কার্যক্রমের ইতি টানবে।

এদিকে সনদে থাকা যে ৩৩টি সুপারিশ বাস্তবায়নে সংবিধান সংশোধন দরকার, সেগুলো বিশেষ সাংবিধানিক আদেশে বাস্তবায়নের চিন্তা ঐকমত্য কমিশনের। সনদের সংবিধান সংক্রান্ত সংস্কার প্রস্তাবগুলো রাষ্ট্রপতির বিশেষ সাংবিধানিক আদেশের মাধ্যমে বাস্তবায়নের পরামর্শ দেবে কমিশন। অন্য প্রস্তাবগুলো অধ্যাদেশ ও সরকারের নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে বাস্তবায়নের পরামর্শ দেওয়া হবে। পাশাপাশি পুরো সনদকে তফশিল হিসাবে বা অন্য কোনোভাবে সংবিধানে যুক্ত করা হবে। বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কমিশনের বৈঠকে এ ধরনের প্রস্তাব আসে। তবে সংবিধানের ওপর প্রাধান্য নয়। সংবিধানের অংশ হবে জুলাই সনদ। গণভোটের চিন্তা বাদ দেওয়া হচ্ছে। বাস্তবায়নের পদ্ধতি জুলাই সনদের অংশ হবে না। এটি সরকারকে সনদ বাস্তবায়নের সুপারিশ বা পরামর্শ হিসাবে দেবে কমিশন। যেসব সংস্কার প্রস্তাবে বিএনপিসহ অন্যান্য দলের ভিন্নমত (নোট অব ডিসেন্ট) আছে সেগুলো সনদে উল্লেখ থাকবে। তবে এসব সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়নের জন্য আলাদা কোনো পদ্ধতির কথা উল্লেখ করা হচ্ছে না। অন্যদিকে সংসদে পিআর (আনুপাতিক ভোট) পদ্ধতি নিয়ে মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে বিএনপি, জামায়াত ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। কমিশনের সুপারিশে সংসদের উচ্চকক্ষে পিআর পদ্ধতির কথা বলা হয়েছে। কিন্তু এক্ষেত্রে নোট অব ডিসেন্ট দিয়েছে বিএনপি। কিন্তু জামায়াতে ইসলামী ও এনসিপি শুধু উচ্চকক্ষে নয়, নিম্নকক্ষেও পিআর পদ্ধতি চায়। অর্থাৎ বিষয়টি নিয়ে দুই দল মুখোমুখি।


প্রসঙ্গত, জুলাই সনদ চূড়ান্ত করতে গত ২০ মার্চ থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত ৩৫টির বেশি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ৬৭টি বৈঠক করেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। দুই পর্বের আলোচনায় ৮৪টি সংস্কার প্রস্তাবে ঐকমত্য ও সিদ্ধান্ত হয়। তবে ১৪টি নোট অব ডিসেন্ট পাওয়া গেছে। এগুলো নিয়ে তৈরি করা হয়েছে জুলাই সনদের সমন্বিত খসড়া। এই খসড়ার ওপর মতামত দিতে গত ১৬ আগস্ট ৩০টি রাজনৈতিক দলের কাছে চিঠি পাঠানো হয়। এ পর্যন্ত ২৯টি দল মতামত দিয়েছে। এছাড়া রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক বৈঠক করেছে কমিশন। 

এসব বৈঠকের মতামত নিয়ে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে রোববার বৈঠক করেছেন কমিশন। এরপর বিশেষজ্ঞদের মতামতসহ সনদ বাস্তবায়নের আইনি ভিত্তি চূড়ান্ত করতে বৃহস্পতিবার সর্বশেষ বৈঠক করা হচ্ছে। এই বৈঠকের মাধ্যমেই চূড়ান্ত হবে বহু কাঙ্ক্ষিত ‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫’। এক্ষেত্রে ঐকমত্য কমিশনের মেয়াদ আছে আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। তবে কমিশন সূত্র যুগান্তরকে জানায়, এই মেয়াদ আর বাড়বে না। সনদ নিয়ে যা করার আছে, এই সময়ের মধ্যেই করতে হবে। উৎস: যুগান্তর।

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়