ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) সম্প্রতি অভিবাসন নীতি কঠোর করার ফলে রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থীদের আবেদনের নিষ্পত্তি দ্রুত হচ্ছে। নতুন নীতি অনুযায়ী আবেদন প্রত্যাখ্যাত হলে তাদেরকে নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হবে। ইউরোপীয় কমিশনের তথ্য বলছে, আশ্রয়ের আবেদন খারিজের ক্ষেত্রে বাংলাদেশিরা অন্যতম— আবেদন প্রত্যাখানের হার ৯৬ শতাংশ। ফলে ইউরোপ থেকে বাংলাদেশিদের ফেরত পাঠানোর প্রবণতা আগের চেয়ে বেড়ে গেছে।
চলতি বছর মার্চে ফ্রন্টেক্সের তত্ত্বাবধানে ইউরোপ থেকে প্রথম চার্টার্ড ফ্লাইটে ৬০ জনের বেশি বাংলাদেশিকে দেশে ফেরত পাঠানো হয়। সম্প্রতি ২৫ সেপ্টেম্বর গ্রিস, ইতালি ও সাইপ্রাস থেকে আরও ২৯ জনকে ঢাকায় ফেরত পাঠানো হয়েছে। এর আগে ২৯ আগস্ট যুক্তরাজ্যও প্রথমবারের মতো ৯ জন বাংলাদেশিকে প্রত্যাবাসন করেছে।
ইইউ’র নতুন নীতি অনুযায়ী, আশ্রয় আবেদন এক দেশে বাতিল হলে আরেক দেশে গিয়ে আবেদন করার সুযোগ থাকবে না। একইসঙ্গে প্রত্যাখ্যাতদের ‘রিটার্ন হাব’-এ পাঠানোর বিধান রাখা হয়েছে। এছাড়া যারা ইউরোপ ত্যাগ করতে অস্বীকৃতি জানাবেন, তাদের ক্ষেত্রে আটক, পরিচয়পত্র বাজেয়াপ্তকরণসহ বিভিন্ন বিধিনিষেধ আরোপের পরিকল্পনা করা হয়েছে।
২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত প্রায় ৫৭ হাজার ৫৫০ জন বাংলাদেশি আশ্রয়ের জন্য আবেদন করেছেন, যার সফলতার হার মাত্র ৪ শতাংশ। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, আবেদন নিষ্পত্তির গতি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশিদের প্রত্যাবাসনের হারও আরও বাড়বে।
বাংলাদেশ সরকার জানায়, তারা অনিয়মিত অভিবাসন নিরুৎসাহিত করে এবং নিরাপদ ও নিয়মিত অভিবাসনকে উৎসাহিত করতে ইইউ’র সঙ্গে কাজ করছে। ইতিমধ্যে ফ্রন্টেক্স ও ব্র্যাকের সহায়তায় ফেরত আসা অভিবাসীদের কাউন্সেলিং ও আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, অর্থনৈতিক মন্দা, ইউক্রেন যুদ্ধ এবং ইইউ সদস্য রাষ্ট্রগুলোর বাজেট সংকট অভিবাসন নীতি কঠোর হওয়ার অন্যতম কারণ। এর ফলে বাংলাদেশিদের ইউরোপে টিকে থাকার সুযোগ ক্রমশ সংকুচিত হচ্ছে। উৎস: বাংলাট্রিবিউন।