শিরোনাম
◈ ভালোবাসার শহর প্যারিসে বৃষ্টিভেজা রাতে শুরু হলো অলিম্পিকস ২০২৪ ◈ সজীব ওয়াজেদ জয়ের ৫৩তম জন্মবার্ষিকী আজ ◈ কারফিউ আরো শিথিলের সিদ্ধান্ত হবে আজ, জানালেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ◈ একদফা দাবিতে জাতীয় ঐক্যের ডাক বিএনপির ◈ শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে পাকিস্তানকে হারিয়ে ফাইনালে শ্রীলঙ্কা  ◈ ডিবি হেফাজতে কোটা আন্দোলনের ৩ সমন্বয়ক ◈ কোটা আন্দোলন: ঢামেকে চিকিৎসাধীন শিক্ষার্থীসহ তিন জনের মৃত্যু ◈ হেলিকপ্টার দিয়ে মানুষ হত্যার জবাব জনগণ একদিন আদায় করে নেবে: মির্জা ফখরুল ◈ প্রতিটি হামলার ঘটনার বিচার হবে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী ◈ সাম্প্রতিক সহিংসতায় আহতদের চিকিৎসার দায়িত্ব নেবে সরকার: প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত : ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪, ০৮:৩৩ রাত
আপডেট : ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪, ০৮:৪১ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

লোকে লোকারণ্য বইমেলা, আধিক্য দর্শনার্থীর, পাঠক অল্প

শিমুল চৌধুরী ধ্রুব: [২] সাহিত্যিক প্রমথ চৌধুরী ‘বই পড়া’ প্রবন্ধে লিখেছেন ‘বই পড়া শখটা মানুষের সর্বশ্রেষ্ঠ শখ হলেও আমি কাউকে শখ হিসেবে বই পড়তে পরামর্শ দিতে চাই নে। প্রথমত, সে পরামর্শ কেউ গ্রাহ্য করবেন না। কেননা, আমরা জাত হিসেবে শৌখিন নই; দ্বিতীয়ত, অনেকে তা কুপরামর্শ মনে করবেন। কেননা, আমাদের এখন ঠিক শখ করার সময় নয়। আমাদের এই রোগ শোক, দুঃখ-দারিদ্র্যের দেশে সুন্দর জীবনধারণ করাই যখন হয়েছে প্রধান সমস্যা, তখন সে জীবনকেই সুন্দর করা, মহৎ করার প্রস্তাব অনেকের কাছে নিরর্থক এবং নির্মমও ঠেকবে।’

[৩] সৈয়দ মুজতবা আলী যখন ‘বই কেনা’ প্রবন্ধটি লিখেন, তখনো মানহীন বই বাজার দখল শুরু করেনি। তবে এখনকার চিত্র ভিন্ন। গুরুত্বপূর্ণ বইয়ের তুলনায় মানহীন বইই প্রকাশিত হচ্ছে বেশি। আর এটির মহোৎসব লেগেছে এবারের বইমেলায়।

[৪] প্রতি বছর বইমেলায় নতুন লেখকের আবির্ভাব ঘটে। নতুন প্রকাশনা সংস্থাও হাজির হয়। নতুন লেখক বা প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের জন্ম আগে সুসংবাদ বয়ে আনলেও এটি এখন দুঃসংবাদে রূপান্তরিত হয়েছে। কারণ, গত কয়েক বছর ধরেই দেখা যাচ্ছে নতুন লেখক ও প্রকাশকদের প্রকাশনাগুলোর মান অনেকটাই নিম্নগামী। মানহীন বইয়ের সংখ্যা যেন মহামারি আকার ধারণ করেছে।

[৫] এবারের বইমেলাতেও দেখা গেছে একই চিত্র। মেলায় আসা নতুন বইগুলো দেখে যা মনে হয়, এখনকার অধিকাংশ প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান বই ছাপে, বই প্রকাশ করে না। প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান মানে যে ছাপাখানা নয়, সুসম্পাদিত না হয়ে যে কোনো বই প্রকাশিত হওয়া উচিত নয়, এ ধারণাটাই যেন নেই নতুন প্রকাশকদের। কিন্তু এই বই দূষণের হাত থেকে জাতিকে রক্ষা করবে কে? এ দায় কার? লেখক, পাঠক নাকি বাংলা একাডেমির? তা এখনো দোষ ঠেলাঠেলির মধ্যেই রেয়ে গেছে।

[৬] এ বিষয়ে অনেকে দোষ চাপাচ্ছেন লেখকদের, আবার কেউ পাঠকদেও রুচির। আবার এক পক্ষ বলছেন, দোষটা প্রকাশকদের। তাদের মতে, বছরের পর বছর মানহীন বই প্রকাশ সম্ভব হচ্ছে এক শ্রেণির অসাধু প্রকাশকের সাথে গুণমানহীন লেখকের সমঝোতার কারণে। এই প্রতিষ্ঠান ও লেখক চিহ্নিত করা কোনো দুরূহ বিষয় নয়। বইমেলায় স্টল বরাদ্দ করার সময় প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের গুণগত মানকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়ার বিষয়ে বাংলা একাডেমিকে কঠোর হতে হবে।

[৭] বইয়ের মান দিনকে দিন নিম্নগামী হওয়ায় বইমেলায় আধিক্য বেড়েছে দর্শনার্থীদের, কমেছে পাঠকের সংখ্যা। সরেজমিনে নিয়মিতই দেখা যায় এমন চিত্র। মঙ্গলবার মেলার ২৭তম দিনে মেলা প্রাঙ্গন লোকে লোকারন্য দেখা গেছে। তবে এদের অধিকাংশই পাঠক নয়, নিছক দর্শক। বইমেলা তাদের কাছে উচ্চস্তরের বিনোদন ছাড়া কিছু নয়। বিভিন্ন স্টলের সামনে দাঁড়িয়ে ছবি তোলা, ক্ষেত্রবিশেষে শুধু ছবি তোলার জন্য বই হাতে পোজ দিয়ে আবার বইটি স্টলে ফেরত দেওয়ার দৃশ্যও দেখা গেছে। অজস্র দর্শনার্থীকে বই ছাড়াই মেলা থেকে বের হতে দেখা গেছে। বিক্রিতে স্টল মালিকরাও হতাশা প্রকাশ করেছেন।

[৮] বৈভব এর বিক্রয়কর্মী নওয়াজ বলেন, মেলায় আশানুরুপ বিক্রি হচ্ছে না। কিন্তু স্টলের সামনে ভীর লেগেই আছে। এরা আসে বই হাতে নিয়ে ছবি তুলে চলে যায়। এদের কারণে বইয়ের মূল ক্রেতা ও পাঠকদের স্বাভাবিক চলাচল বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

[৯] মেলায় ঘুরতে আসা নুসরাত আফরিন বলেন, মেলায় আসতে ভালোলাগে। আগে টিএসসিতে আড্ডা দিতাম। এই সময় মেলাতেই আড্ডা দেই। মাসের শুরুতে একটি বই কিনেছি, দুটো উপহার পেয়েছি। আর কেনা হয়নি।

[১০] এদিকে, মঙ্গলবার বইমেলা প্রাঙ্গনে স্মরণ করা হয়েছে প্রয়াত প্রগতিশীল লেখক হুমায়ূন আজাদকে। বাংলা একাডেমির বর্ধমান হাউসের সামনে লেখক প্রকাশক পাঠক ফোরামের আয়োজনে হুমায়ূন আজাদের স্মরণসভার আয়োজন করা হয়। এদিন বিকেল ৫টায় ‘হুমায়ুন আজাদ দিবসের ডাক-একুশে বইমেলা হোক প্রকৃত সৃজনশীল লেখক ও প্রকাশকদের’ এই প্রতিপাদ্য নিয়ে স্মরণসভাটি করা হয়।

[১১] সভায় বক্তব্য দেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা, কবি আসলাম সানী, কবি মোহন রায়হান, অধ্যাপক মেসবাহ কামাল, হুমায়ুন আজাদের মেয়ে মৌলি আজাদ, হুমায়ূন আজাদের ভাই সাজ্জাদ কবীর, অনুপম প্রকাশনীর প্রকাশক প্রমুখ। সভাপতিত্ব করেন আগামী প্রকাশনীর নির্বাহী ওসমান গনি। সম্পাদনা: সমর চক্রবর্তী

এসসিডি/এসসি/একে

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়