স্বাস্থ্য ভালো রাখতে ফলমূল খাওয়ার বিকল্প নেই। তবে বর্তমান বাজার পরিস্থিতিতে ফল কেনার সময় বাড়তি সতর্কতা জরুরি হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে পেঁপের মতো ফল দ্রুত পাকাতে অনেক সময় ক্ষতিকর রাসায়নিক ব্যবহার করা হচ্ছে, যা মানবস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ।
বাজারে উজ্জ্বল রং ও নিখুঁত আকৃতির পেঁপে দেখতে আকর্ষণীয় হলেও এর ভেতরে লুকিয়ে থাকতে পারে ক্ষতিকর রাসায়নিক। বিশেষজ্ঞদের মতে, এসব ফল নিয়মিত খেলে পেটের সমস্যা, বমি ভাব, মাথা ঘোরা এমনকি দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্যঝুঁকিও তৈরি হতে পারে।
জানা গেছে, অনেক ক্ষেত্রে পেঁপে পাকাতে ক্যালসিয়াম কার্বাইডের মতো বিপজ্জনক রাসায়নিক ব্যবহার করা হয়। এই রাসায়নিক ফলকে দ্রুত পাকালেও এর স্বাভাবিক পুষ্টিগুণ নষ্ট করে দেয়।
কীভাবে চিনবেন রাসায়নিকমুক্ত পেঁপে?
প্রথমেই পেঁপের রং ও গঠনের দিকে নজর দেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। রাসায়নিকভাবে পাকা পেঁপে সাধারণত খুব উজ্জ্বল হলুদ বা গাঢ় কমলা রঙের হয় এবং দেখতে প্রায় নিখুঁত লাগে। অন্যদিকে প্রাকৃতিকভাবে পাকা পেঁপেতে হালকা হলুদ, সবুজ ও কমলার মিশ্রণ থাকে এবং কোথাও কোথাও স্বাভাবিক দাগ দেখা যায়।
পেঁপের গন্ধও একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশক। স্বাভাবিকভাবে পাকা পেঁপেতে হালকা মিষ্টি ও সতেজ গন্ধ থাকে। কিন্তু রাসায়নিক দিয়ে পাকানো পেঁপেতে অনেক সময় কোনো ফলের গন্ধই পাওয়া যায় না, বরং অস্বাভাবিক বা কেমিক্যালের মতো গন্ধ অনুভূত হয়।
স্বাদের ক্ষেত্রেও পার্থক্য স্পষ্ট। প্রাকৃতিক পেঁপে সাধারণত মিষ্টি ও রসালো হয়। আর রাসায়নিকভাবে পাকানো পেঁপে অনেক সময় তেতো বা অস্বাভাবিক স্বাদের হয়ে থাকে। খাওয়ার সময় জিভে অস্বস্তি লাগলে সেই ফল এড়িয়ে চলাই নিরাপদ।
এছাড়া পেঁপে হাতে নিয়ে আলতো করে চাপ দিলে বোঝা যায় ভেতরের অবস্থা। রাসায়নিক পেঁপে বাইরে থেকে অতিরিক্ত নরম হয় এবং চাপ দিলে আঙুলের দাগ বসে যায়। স্বাভাবিক পেঁপে তুলনামূলক শক্ত থাকে এবং চাপের পর আবার আগের অবস্থায় ফিরে আসে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভেজাল ফল এখন একটি বড় জনস্বাস্থ্য সমস্যায় পরিণত হয়েছে। তাই শুধু রং বা দাম দেখে ফল কেনার পরিবর্তে সচেতন হওয়াই সবচেয়ে ভালো উপায়। মৌসুমি ফল কেনা, অতিরিক্ত চকচকে ফল এড়িয়ে চলা এবং ফল ভালোভাবে ধুয়ে নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস