ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদি হত্যাকাণ্ডের দুই প্রধান সন্দেহভাজন ফয়সাল করিম মাসুদ ও আলমগীর শেখ ভারতে পালিয়ে গেছে বলে জানিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। রোববার সকালে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত কমিশনার এস এন মো. নজরুল ইসলাম এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ‘স্থানীয়দের সহায়তায় তারা হালুয়াঘাট সীমান্ত দিয়ে ভারতের মেঘালয় রাজ্যে পালিয়েছেন। তাদের পালাতে সহযোগিতা করেছে ভারতের দুই নাগরিক। মেঘালয় পুলিশ ওই দুই ভারতীয় নাগরিককে গ্রেপ্তার করেছে।
মো. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘রাজনৈতিক কারণেই ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শহীদ শরিফ ওসমান বিন হাদিকে হত্যা করা হয়েছে। যারা ৫ আগস্টের অভ্যুত্থানে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তারাই এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত।’
তিনি বলেন, ‘শহীদ ওসমান হাদি হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকায় এখন পর্যন্ত আমরা ১১ জন গ্রেপ্তার করেছি। দ্রুতই চার্জশিট দেয়া হবে। ঘটনাস্থলে উপস্থিত ব্যক্তিদের দেয়া তথ্য, সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ, ওপেন সোর্স, ইন্টেলিজেন্স এবং তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ঘটনার দিনই শুটার ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ ওরফে রাহুল এবং তার সহায়তাকারী মোটরসাইকেল চালক মো. আলমগীর শেখকে শনাক্ত করা হয়।
তাৎক্ষণিক তাদের গ্রেফতারের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একাধিক টিম সাভারের হেমায়েতপুর, ঢাকার আগারগাঁও এবং নরসিংদীতে অভিযান পরিচালনা করে। ধারাবাহিক অভিযানের অংশ হিসেবে ডিএমপির একটি টিম ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটের সীমান্তবর্তী এলাকা পর্যন্ত অভিযান পরিচালনা করে। এই ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় নিয়ে আসার জন্য আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করছি। ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্ট মামলাটি নিবিড় তদন্তের জন্য ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে।’
ডিএমপি'র অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বলেন, ‘এই ঘটনার সঙ্গে বিভিন্নভাবে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে ৬ জন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। চারজন সাক্ষী ১৬৪ ধারায় সাক্ষ্য প্রদান করেছেন। চাঞ্চল্যকর মামলাটি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে আমরা তদন্ত করছি। গ্রেপ্তারকৃতদের কাছে পাওয়া তথ্য সাক্ষীদের জবানবন্দি উদ্ধারকৃত আলামত পর্যালোচনা ও সার্বিক বিবেচনায় মামলাটির তদন্ত শেষ পর্যায়ে রয়েছে আগামী সাত থেকে ১০ দিনের মধ্যে আমরা চার্জশিট প্রদান করতে সক্ষম হব ইনশাআল্লাহ।’
তিনি বলেন, ‘সরকার ইতোমধ্যে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে মামলাটি নিষ্পত্তি করার ঘোষণা দিয়েছে। সেই লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি। এইজন্য এই জঘন্য ঘটনায় ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে আমাদের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।’