স্পোর্টস ডেস্ক : প্রথম দিনই দুই দলের প্রথম ইনিংস শেষ হয়ে যাওয়ায় দ্বিতীয় দিনে মেলবোর্ন টেস্ট শেষ হওয়ায় প্রবল সম্ভাবনা জেগেছিল আগেই। পেসারদের আগুন ঝরানো বোলিংয়ে হয়েছেও তাই। তবে বদলেছে জয়ী দলের নাম। ৪ উইকেটের জয়ে প্রায় ১৫ বছর পর অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে টেস্ট জিতেছে ইংল্যান্ড। ---- অলআউট স্পোর্টস
অ্যাশেজ সিরিজের চতুর্থ ম্যাচে শনিবার মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে (এমসিজি) অস্ট্রেলিয়ার দেওয়া ১৭৫ রানের লক্ষ্য চা বিরতির পর ৬ উইকেট হারিয়ে তাড়া করে ইংল্যান্ড। এর আগে ৪২ রানে এগিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নামা অজিরা গুটিয়ে যায় ১৩২ রানে।
অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে দলটির সবশেষ জয় ছিল ২০১১ সালের জানুয়ারিতে। সিডনি টেস্ট জিতে সেবার দেশটির মাটিতে সবশেষ অ্যাশেজ জিতেছিল অ্যান্ড্রু স্ট্রাউসের ইংল্যান্ড। এরপর চারবারের সফরে খেলা ১৮ টেস্টের ১৬টিতে হেরেছে ইংলিশরা, ড্র হয়েছে দুটি। ১৯তম ম্যাচে এসে জয়খরা কাটাল বেন স্টোকসের ইংল্যান্ড।
চলতি অ্যাশেজ সিরিজে দুই দিনে শেষ হওয়া এটি দ্বিতীয় টেস্ট। পার্থে প্রথম টেস্ট দুই দিনে জিতে সিরিজ জয়ের অভিযান শুরু করেছিল অস্ট্রেলিয়া। প্রথম তিন ম্যাচ জিতে অ্যাশেজ নিশ্চিত করার পর ইংলিশদের হোয়াইটওয়াশ করার লক্ষ্যে ছিল স্বাগতিকরা। কিন্তু পেসারদের নৈপুণ্যে তা আর হতে দেয়নি ইংল্যান্ড।
পার্থ টেস্ট শেষ হয়েছিল ৮৫২ বলে। মেলবোর্নে খেলা হয় ৫ বল বেশি। আর অ্যাশেজে একই সিরিজে একাধিক টেস্ট দুই দিনে শেষ হলো ১৩৭ বছর পর।
বিনা উইকেটে ৪ রানে দিনের খেলা শুরু করা অস্ট্রেলিয়ার উদ্বোধনী জুটি ভাঙে দিনের পঞ্চম ওভারে। আগের দিন নাইটওয়াচম্যান হিসেবে ওপেনিংয়ে নামা স্কট বোল্যান্ডকে (৬) কট বিহাইন্ড করিয়ে ২২ রানের জুটি ভাঙেন গাস অ্যাটকিনসন।
তিনে নামা জেইক ওয়েদারল্ড (৫) স্টোকসের বল ছেড়ে দিয়ে বোল্ড হন। বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি মার্নাস লাবুশেনও। জশ টাংয়ের শিকার হয়ে ফেরেন ৮ রান করে। সতীর্থের আসা-যাওয়ার মিছিলে অপর প্রান্তে রানের চাকা সচল রাখা ট্র্যাভিস হেডকে (৪৬) দারুণ এক ডেলিভারিতে বোল্ড করেন ব্রাইডন কার্স।
এরপর ৫০ রান যোগ করেতেই শেষ ৬ উইকেট হারায় অস্ট্রেলিয়া। টাংয়ের শর্ট বলে ফেরেন উসমান খাজা (০)। দুর্দান্ত ছন্দে থাকা অ্যালেক্স ক্যারিকে (৪) তুলে নেন কার্স। সপ্তম উইকেটে ক্যামেরন গ্রিনকে নিয়ে অধিনায়ক স্টিভ স্মিথ চাপ সামাল দেওয়ার চেষ্টা করলেও তা স্থায়ী হয়নি। গ্রিনকে (১৯) ফিরিয়ে ইনিংস সর্বোচ্চ ৩১ রানের এই জুটি ভাঙেন স্টোকস। এরপর দ্রুতই গুটিয়ে যায় স্বাগতিকরা। ২৪ রানে অপরাজিত থাকেন স্মিথ।
কার্সের শিকার ৪ উইকেট। স্টোকস ৩টি ও টাং ২টি উইকেট নেন।
লক্ষ্য তাড়ায় আক্রমণাত্মক শুরুতে ইংল্যান্ডের জয়ের ভিত গড়ে দেন জ্যাক ক্রলি ও বেন ডাকেট। সপ্তম ওভারেই তারা দলের খাতায় ৫০ রান যোগ করেন। সেই ওভারে দারুণ এক ইয়োর্কারে ডাকেটকে (৩৪) বোল্ড করে ৫১ রানের জুটি ভেঙে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের দিকে নেওয়ার আভাস দেন মিচেল স্টার্ক। তিনে নামা কার্সকে (৬) দ্রুতই ফেরান জাই রিচার্ডসন।
তবে তৃতীয় উইকেটে ক্রলি-জ্যাকব বেথেলের ৪৭ রানের জুটিতে জয়ের পথে এগুতে থাকে ইংলিশরা। ক্রলিকে (৩৭) এলবিডাব্লিউর ফাঁদে ফেলে এই জুটি ভাঙেন বোল্যান্ড। এরপর বেথেল (৪০), জো রুট (১৫) ও স্টোকস (২) বিদায় নিলেও জয় পেতে অসুবিধা হয়নি ইংল্যান্ডের। দুটি করে উইকেট নেন স্টার্ক, রিচার্ডসন ও বোল্যান্ড।
টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে টাংয়ের পেস তোপে ১৫২ রানে অলআউট হয় অস্ট্রেলিয়া। এরপর স্বাগতিক পেসারদের তোপে ১১০ রানে প্রথম ইনিংসে গুটিয়ে যায় ইংল্যান্ড।
দুই ইনিংস মিলিয়ে ৭ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা হয়েছেন টাং। আগামী ৪ জানুয়ারি সিডনিতে শুরু হবে সিরিজের শেষ টেস্ট।