দ্রুত জনসংখ্যা বৃদ্ধি এবং নজিরবিহীন সংখ্যক আশ্রয়প্রার্থীর কারণে আবাসন ও সরকারি পরিষেবা খাতে ব্যাপক চাপ তৈরি হওয়ায় অভিবাসন ও আশ্রয়নীতি আরও কঠোর করার ঘোষণা দিয়েছে আয়ারল্যান্ড। দেশটির মন্ত্রীরা বলেছেন, এই উদ্বেগজনক পরিস্থিতি সামাল দিতে সরকারের এ ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি ছিল।
আয়ারল্যান্ডের বিচারমন্ত্রী জিম ও’কালাহান বুধবার (২৬ নভেম্বর) এই কঠোর সংস্কারের ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, গত বছর আমাদের দেশের জনসংখ্যা ১ দশমিক ৬ শতাংশ বেড়েছে, যা ইউরোপীয় ইউনিয়নের গড় বৃদ্ধির তুলনায় সাত গুণ বেশি। জনসংখ্যা বৃদ্ধি ইতিবাচক, তবে যে হারে বাড়ছে, তা উদ্বেগজনক।
২০২৪ সালে প্রায় ১৮ হাজার ৬৫১ জন আয়ারল্যান্ডের কাছে আশ্রয় চেয়েছেন, যা এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ। এর আগের বছর এই সংখ্যা ছিল ১৩ হাজার ২৭৬ জন। আশ্রয়প্রার্থীর সংখ্যা বৃদ্ধির কারণে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আয়ারল্যান্ডে বিক্ষোভ ও দাঙ্গা উসকে দিয়েছে। গত মাসেই দক্ষিণ-পশ্চিম ডাবলিনে অভিবাসনবিরোধী বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছিল।
নতুন নিয়মানুসারে, যেসব আশ্রয়প্রার্থী বর্তমানে চাকরিতে নিয়োজিত, তাদের এখন থেকে রাষ্ট্রীয় আবাসন ব্যয়ের অংশ হিসেবে নিজেদের সাপ্তাহিক আয় থেকে সরকারকে ১০ থেকে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত দিতে হবে।
এছাড়া, শরণার্থীদের নাগরিকত্ব পাওয়ার নিয়মও কঠোর করা হয়েছে। এতদিন তিন বছর আয়ারল্যান্ডে থাকলেই নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করা যেত, এখন তা বাড়িয়ে ৫ বছর করা হয়েছে। অন্যদিকে যারা দীর্ঘ সময় ধরে নির্দিষ্ট সামাজিক কল্যাণ ভাতা নিচ্ছেন, তারা নাগরিকত্ব লাভের যোগ্য হবেন না।
এদিকে ইউরোপীয় অর্থনৈতিক এলাকাবহির্ভূত দেশ থেকে আত্মীয়কে আনতে হলে আবেদনকারীকে বছরে ৪৪ হাজার ইউরোর বেশি আয় করতে হবে এবং পর্যাপ্ত আবাসনের প্রমাণ দিতে হবে।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, কোনো ব্যক্তি রাষ্ট্রের নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়ালে বা গুরুতর অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হলে সরকার তার আশ্রয়ের মর্যাদা বাতিল করার ক্ষমতা পাবে।