একজন ইসরায়েলি আইনজীবী তার ফিলিস্তিনি রাজনৈতিক বন্দি ক্লায়েন্টের ওপর পদ্ধতিগত যৌন সহিংসতা ও নির্যাতনের অভিযোগ তুলেছেন। তিনি বলেছেন, তার ক্লায়েন্ট প্রতিবার তার সঙ্গে সাক্ষাতের পর আরও ভয়াবহ নির্যাতনের শিকার হন।
একজন পরিচিত সাংবাদিক সামিরা মোহিউদ্দিনকে দেয়া সাক্ষাৎকারে আইনজীবী বেন মারমারেলি বলেন, তার একমাত্র ফিলিস্তিনি রাজনৈতিক বন্দী ক্লায়েন্টকে নিয়মিতভাবে যৌন নির্যাতন, শারীরিক নির্যাতন এবং মানসিক যন্ত্রণা দিচ্ছে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ। খবর: আনাদোলু
মারমারেলি বলেন, ‘এটা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে তিনি আমাকে নিষেধ করেছেন যেন আমি তার কাছে আর না যায়।’ তিনি আরও বলেন, যৌন সহিংসতা যতই ভয়ংকর হোক, এটি কেবল বড় ধরনের নির্যাতনের একটি অংশ মাত্র।’
সাংবাদিককে তিনি বলেন, ‘সবাই ধর্ষণের কথাই জিজ্ঞাসা করে, যেন এটাই প্রধান সমস্যা। কিন্তু ধর্ষণ তার সবচেয়ে বড় সমস্যা নয়। মূল বিষয় হলো- ধর্ষণ হচ্ছে ইসরায়েলের দ্বারা ফিলিস্তিনি বন্দিদের ওপর চালানো নির্যাতনের বড় চিত্রের একটি অংশ।’
এই আইনজীবীর দাবি, তার ক্লায়েন্টের পিঠে বুটের আঘাতের চিহ্ন, হাতকড়ার কারণে কবজিতে গভীর দাগ এবং শরীরজুড়ে জখম রয়েছে। তার ক্লাইন্টের সঙ্গে যৌন সহিংসতা প্রতি কয়েক সপ্তাহে একবার ঘটে এবং সেটি সাধারণত তার সঙ্গে সাক্ষাতের পরপরই হয়।
তিনি আরও বলেন, ‘ফিলিস্তিনি রাজনৈতিক বন্দীরা বছরের পর বছর কাউকে দেখার সুযোগ পায় না। তাদের বাইরের দুনিয়ার একমাত্র সংযোগ হচ্ছে আইনজীবীর সাক্ষাৎ।’
সাক্ষাৎকারে বেন মারমারেলি দক্ষিণ ইসরায়েলের কুখ্যাত সদে তেইমান সামরিক ঘাঁটির নির্যাতনের কথাও উল্লেখ করেন। তিনি দাবি করেন, সেখানে নির্যাতন, যৌন সহিংসতা ও অমানবিক আচরণ নিয়মিত ঘটে এবং সবকিছুই ২৪ ঘণ্টা নজরদারি ক্যামেরায় রেকর্ড হয়।
তিনি বলেন, ‘তেইমানের ব্যাপারে বললে—ওরা মূলত “বলির পাঁঠা” খুঁজে পেয়েছে। কারণ তারা সব বন্দিকেই ধর্ষণ করে।’ ২০২৪ সালের আগস্টে ফাঁস হওয়া এক ভিডিওতে দেখা যায়, সামরিক ঘাঁটিটিতে মুখ নিচের দিকে করে শোয়ানো এক ফিলিস্তিনি বন্দিকে সেনারা টেনে নিয়ে যাচ্ছে এবং পরে দাঙ্গা দমনের ঢাল দিয়ে ঘিরে তাকে পিটিয়ে গুরুতর জখম করছে। পরে ওই বন্দীকে হাসপাতালে নেয়া হয়।
ভিডিওটি মানবাধিকার সংস্থাগুলোর ব্যাপক নিন্দা এবং কুখ্যাত সদে তেইমান আটককেন্দ্র বন্ধের দাবি জানায়। গেল ৩১ অক্টোবর, ওই ঘটনার কিছু ফুটেজ ফাঁস করার দায় স্বীকার করে ইসরায়েলি সামরিক প্রসিকিউটর ইফাত তোমার-ইয়েরুশালমি পদত্যাগ করেন। তিনি স্বীকার করেন যে, সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রচারণা প্রতিহত গণমাধ্যমে কিছু উপকরণ সরবরাহ করেছিলেন তিনি। অনুবাদ: চ্যানেল২৪