ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশে (ইইউ) প্রবেশে এন্ট্রি ও এক্সিট সিস্টেমে (ইইএস) ব্যাপক পরিবর্তন আসছে। আগামী ১২ অক্টোবর থেকে চালু হতে যাওয়া ডিজিটাল ব্যবস্থাটির উদ্দেশ্য সীমান্ত ব্যবস্থাপনা আধুনিকীকরণ করা। তবে এর ফলে প্রাথমিকভাবে সমুদ্র এবং বিমানবন্দরগুলোতে বিশৃঙ্খলা ও দীর্ঘ সারি সৃষ্টি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
নতুন ইইএস ব্যবস্থাটি পাসপোর্টে প্রচলিত ম্যানুয়াল স্ট্যাম্পিংয়ের পরিবর্তে একটি স্বয়ংক্রিয়, ইলেকট্রনিক রেকর্ড চালু করবে। সিস্টেমটি চালু হওয়ার পর প্রথমবারের মতো শেনঝেন অঞ্চলে প্রবেশ করলে যুক্তরাজ্যের পাসপোর্টধারীদের পাসপোর্ট স্ক্যান করতে হবে। এছাড়া, তাদের ছবি এবং আঙুলের ছাপ ডিজিটালভাবে রেকর্ড করা হবে। এই নিবন্ধন বৈধ থাকবে তিন বছর অথবা পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ না হওয়া পর্যন্ত, যেটি প্রথমে ঘটে। পরবর্তী ভ্রমণের জন্য প্রক্রিয়াটি আরও দ্রুত হবে, যার জন্য শুধু পাসপোর্ট স্ক্যান এবং আঙুলের ছাপ বা মুখের ছবি যাচাই করা প্রয়োজন হবে।
তবে ১২ অক্টোবর থেকে একযোগে সব জায়গায় এই পরিষেবা চালু হবে না। ইইউ ছয় মাসের একটি ট্রানজিশন পিরিয়ড ঘোষণা করেছে, যা এপ্রিল ২০২৬ পর্যন্ত চলবে। এই সময়ে কিছু সীমান্ত চৌকিতে নতুন ব্যবস্থা এবং প্রচলিত পাসপোর্ট স্ট্যাম্পিংয়ের যৌথ ব্যবহার হতে পারে। এই ধাপে ধাপে পদ্ধতিটি ধীরে ধীরে বাস্তবায়নের জন্য এবং বিশেষ করে ছুটির সময়ে উল্লেখযোগ্য বিলম্ব কমানোর জন্য তৈরি করা হয়েছে।
ইইএস ব্যবস্থাটি স্বল্পমেয়াদি ভ্রমণকারীদের জন্য প্রযোজ্য হবে, যারা শেনঝেন এলাকায় প্রবেশ করছেন। শেনঝেন অঞ্চলে বেশিরভাগ ইইউ দেশ ছাড়াও আইসল্যান্ড, লিচেনস্টাইন, নরওয়ে এবং সুইজারল্যান্ড অন্তর্ভুক্ত। তবে, আয়ারল্যান্ড এবং সাইপ্রাস ভ্রমণের জন্য এটি প্রয়োজন হবে না, কারণ সেখানকার সীমান্ত নিয়ম অপরিবর্তিত থাকবে। নতুন সিস্টেমটি একজন ভ্রমণকারীর থাকার সময়কাল আরও সঠিকভাবে ট্র্যাক করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে।
নতুন সিস্টেমের আওতায় যুক্তরাজ্যের পাসপোর্টধারী, এমনকি দেশটির ইনডিফিনিট লিভ টু রিমেইন (আইএলার) থাকলেও শেনঝেন এলাকায় ভ্রমণের সময় ইইএস নিয়মের অধীন হবেন।
তবে ইইউভুক্ত কোনও দেশে বৈধভাবে বাস করা ব্রিটিশরা একটু ছাড় পাবেন। যেসব ব্রিটিশ নাগরিকের বৈধ ইইউ রেসিডেন্সি পারমিট আছে, যেমন ফ্রান্স বা স্পেনের মতো দেশের উইথড্রয়াল অ্যাগ্রিমেন্ট রেসিডেন্সি পারমিট, তাহলে তারা এই ব্যবস্থার নিবন্ধন থেকে মুক্ত। এর সুবিধা পেতে, তারা কেবল সীমান্তে পাসপোর্টের সঙ্গে রেসিডেন্সি ডকুমেন্ট দেখাবেন।
একইভাবে, যে ব্রিটিশদের ইইউভুক্ত রাষ্ট্রেরও নাগরিকত্ব রয়েছে, ইইউ পাসপোর্ট বা জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহার করলে তারাও নতুন নিয়মের আওতায় পড়বেন না।
যুক্তরাজ্যের যেসব নাগরিকের কাছে ইইউভুক্ত কোনও দেশের দীর্ঘমেয়াদি ভিসা রয়েছে, তাদের জন্যও নিয়ম ভিন্ন। তারা সাধারণত ইইএস থেকে মুক্ত, কারণ তাদের বায়োমেট্রিক তথ্য ভিসা আবেদনের অংশ হিসেবে আগেই সংগ্রহ করা হয়েছে।
তবে নতুন ব্যবস্থায় কিছু অপ্রত্যাশিত ব্যাঘাতের জন্য প্রস্তুত থাকার জন্য সতর্ক করেছেন বিশেষজ্ঞরা। অনলাইন পরামর্শদাতা স্যাম ওয়ার্ডসহ ভ্রমণ বিশেষজ্ঞরা সম্ভাব্য বিলম্বের জন্য প্রস্তুত থাকতে বলছেন। বায়োমেট্রিক তথ্য সংগ্রহে জড়িত নতুন যাচাই প্রক্রিয়াটি একটি সাধারণ স্ট্যাম্পের চেয়ে বেশি সময়সাপেক্ষ। প্রাথমিক বাস্তবায়ন সময়ে সম্ভবত কর্মী এবং ভ্রমণকারী উভয়কেই এই নতুন প্রক্রিয়ায় মানিয়ে নিতে হবে। উৎস: বাংলাট্রিবিউন।