ভারতের কর্তৃপক্ষ কোনো প্রক্রিয়া ছাড়াই দেশটি থেকে হাজারো বাংলাভাষী মুসলমানকে ‘অবৈধ অনুপ্রবেশকারী’ অভিযোগ তুলে বাংলাদেশে তাড়িয়ে দিচ্ছে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন হিউমান রাইটস ওয়াচ। এদের মধ্যে অনেকেই বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলোর ভারতীয় নাগরিক। খবর বিবিসি বাংলার। এবার তোপ দাগলেন অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিনের (মিম) প্রধান আসাদুদ্দিন ওয়াইসি। তিনি বাংলাভাষী মুসলিমদের আটক করা ‘অবৈধ’ বলে মন্তব্য করেছেন।
হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মিম প্রধান আসাদুদ্দিন ওয়াইসি ভারতের একাধিক প্রান্তে বাংলাভাষী মুসলিম নাগরিকদের বেআইনিভাবে আটক ও পুশ ব্যাকের ঘটনার বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। তিনি অভিযোগ করেন, কেন্দ্রীয় সরকার সংখ্যালঘু ও দরিদ্র শ্রেণির উপর পরিকল্পিতভাবে নিপীড়ন চালাচ্ছে।
শনিবার এক্স হ্যান্ডেলে একাধিক পোস্টে তিনি কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়ে বলেন, ‘এ সরকার শক্তের কাছে দুর্বল, আর দুর্বলের কাছে শক্ত।’
ওয়াইসি দাবি করেন, দেশের বিভিন্ন জায়গায় বাংলাভাষী মুসলিমদের ‘বাংলাদেশি’ তকমা দিয়ে বেআইনিভাবে আটক করা হচ্ছে। অথচ এদের অধিকাংশই ভারতীয় নাগরিক।
তিনি বলেন, এরা নির্মাণকর্মী, সাফাইকর্মী, রাস্তায় আবর্জনা তোলার সঙ্গে যুক্ত। এরা দরিদ্র শ্রেণির মানুষ। এদের অনেকের পক্ষে পুলিশের অন্যায়ের বিরুদ্ধে মুখ খোলা বা আইনি লড়াই চালানো সম্ভব নয়। সেই দুর্বলতাকেই ব্যবহার করছে প্রশাসন।
ওয়াইসি গুরুগ্রামের জেলা শাসকের এক নির্দেশিকার প্রসঙ্গ তুলে ধরেন। তাতে রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশিদের চিহ্নিত করে ফেরত পাঠাতে এসওপি অনুসরণের কথা বলা হয়েছে। এ প্রসঙ্গ টেনে ওয়াইসি বলেন, কেবলমাত্র কেউ বাংলা ভাষায় কথা বলেন বলেই তাকে গ্রেফতার করা যায় না। ভাষাভিত্তিক গ্রেফতার একেবারেই বেআইনি।
এ অভিযোগের পটভূমিতে সম্প্রতি পুনে পুলিশের অভিযানকেও উল্লেখ করেছেন তিনি। বুধওয়ার পেঠ এলাকার একটি রেড-লাইট জোন থেকে পাঁচ বাংলাদেশি নারীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। অভিযোগ, তারা ভুয়া পরিচয়পত্র নিয়ে ভারতে প্রবেশ করেছিলেন। পরে পতিতাবৃত্তির সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়েন।
যদিও পুলিশের দাবি, এই নারীরা জাল কাগজপত্র ব্যবহার করেই দেশে ঢুকেছিলেন। একটি মানবপাচার চক্রের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ ছিল। এ ঘটনায় একাধিক ধারায় মামলা হয়েছে।
ওয়াইসি অবশ্য প্রশ্ন তুলেছেন এ ধরনের বিচ্ছিন্ন ঘটনার সুযোগ নিয়ে কীভাবে হাজার হাজার বাংলাভাষী মুসলিম নাগরিককে ‘অবৈধ’ বলে চিহ্নিত করা যায়? তার বক্তব্য, সরকারের এ পদক্ষেপ এক প্রকারের ‘ব্যাকডোর এনআরসি’। তার দাবি, এটি একটি নৈতিক লঙ্ঘন। বন্দুকের মুখে কাউকে বাংলাদেশে ঠেলে দেওয়া যায় না।