রাজবাড়ীতে এক কিশোরের নারী সেজে বিয়ে করে দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে সংসার করার এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে। ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর পুরো এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। অভিযুক্ত কিশোর নিজের পরিচয় গোপন করে এক যুবকের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয় এবং শ্বশুরবাড়িতে নববধূর মতোই বসবাস করতে থাকে।
ভুক্তভোগী পরিবার ও এলাকাবাসী জানায়, প্রায় আড়াই মাস আগে কোরবানির ঈদের দিন শান্ত নামে এক যুবকের সঙ্গে সামিয়া আক্তার পরিচয় দিয়ে শাহিনুর রহমানের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে সে শান্তর বাড়িতেই থাকছিল। তবে কিছুদিন পর থেকেই তার আচার-আচরণে পরিবারের সদস্যদের সন্দেহ হতে শুরু করে।
শান্ত'র মা জানান, তিনি পুত্রবধূর কিছু অস্বাভাবিক আচরণ লক্ষ্য করলেও লোকলজ্জার ভয়ে বিষয়টি কাউকে জানাতে পারেননি। তার মনে হয়েছিল, বিষয়টি প্রকাশ করলে মানুষ ভাবতে পারে যে তিনি তার পুত্রবধূকে পছন্দ করছেন না, তাই মিথ্যা অপবাদ দিচ্ছেন।
তবে সন্দেহ বাড়তে থাকলে একপর্যায়ে পরিবারের অন্য সদস্য ও প্রতিবেশীরা একত্রিত হয়ে সামিয়াকে তার আসল পরিচয় সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করে। প্রথমে অস্বীকার করলেও পরে চাপের মুখে সে স্বীকার করতে বাধ্য হয় যে সে নারী নয়, একজন পুরুষ।
একজন প্রতিবেশী জানান, "আমরা তার কাপড় খুলে দেখি যে সে পুরুষ। পুরুষের যা থাকে, তারও তাই আছে।" আরেকজন বয়স্ক নারী জানান, তিনি আগেও সন্দেহ থেকে সামিয়াকে জিজ্ঞেস করেছিলেন সে ছেলে না মেয়ে, কিন্তু তখন সে বিষয়টি এড়িয়ে যায়।
ঘটনাটি উন্মোচিত হওয়ার পর এলাকাবাসী অভিযুক্ত শাহিনুরকে তার গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামে পাঠিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।
এ বিষয়ে মুঠোফোনে অভিযুক্ত শাহিনুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে সে জানায়, তার কিছু শারীরিক ও হরমোনজনিত সমস্যা রয়েছে, যার কারণে তার মধ্যে মেয়েলি স্বভাব বেশি। সে আবেগের বশে এই ভুল করেছে বলে দাবি করে এবং এর পেছনে তার কোনো অসৎ উদ্দেশ্য ছিল না বলে জানায়।
এই ঘটনায় হতবাক পরিবার ও এলাকাবাসী প্রতারণার শিকার হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।