ডিজিটাল যুগে সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট, ব্যাংক কিংবা ব্যক্তিগত ডিভাইস—প্রতিটি ক্ষেত্রেই সুরক্ষা নিশ্চিত করতে পাসওয়ার্ড সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। হ্যাকারদের ক্রমবর্ধমান তৎপরতার কারণে সুরক্ষিত থাকাটা এখন বড় চ্যালেঞ্জ। হ্যাকাররা প্রতিনিয়ত বিভিন্ন কৌশল ব্যবহার করে অ্যাকাউন্ট হ্যাক করছে, ব্যক্তিগত তথ্য চুরি করছে এবং হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। এই পরিস্থিতিতে বিশেষজ্ঞরা একটি শক্তিশালী পাসওয়ার্ড ব্যবহারের ওপর জোর দিচ্ছেন।
শক্তিশালী পাসওয়ার্ড কী এবং কীভাবে তৈরি করবেন?
শক্তিশালী পাসওয়ার্ড হলো এমন একটি পাসওয়ার্ড যা সহজে অনুমান করা যায় না এবং হ্যাকারদের বিভিন্ন পরীক্ষার মাধ্যমেও খুঁজে বের করা কঠিন। একটি শক্তিশালী পাসওয়ার্ড তৈরির জন্য নিচের বিষয়গুলো খেয়াল রাখা জরুরি:
অক্ষর, সংখ্যা ও চিহ্নের মিশ্রণ: পাসওয়ার্ডে বড় হাতের অক্ষর (Capital Letter), ছোট হাতের অক্ষর (Small Letter), সংখ্যা (Digit) এবং বিশেষ চিহ্ন (@, #, $, &) মিলিয়ে ব্যবহার করুন। যেমন: P@ssW0rd#2024।
পাসওয়ার্ড তৈরির সময় যা এড়িয়ে চলবেন:
বিশেষজ্ঞদের মতে, কিছু সাধারণ ভুলের কারণে পাসওয়ার্ড দুর্বল হয়ে পড়ে এবং হ্যাকারদের কাজ সহজ করে দেয়। তাই পাসওয়ার্ড তৈরির সময় নিচের বিষয়গুলো এড়িয়ে চলুন:
ব্যক্তিগত তথ্য: নিজের নাম, ডাক নাম, জন্ম তারিখ, স্ত্রী বা সন্তানের নাম ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন।
সহজে অনুমানযোগ্য শব্দ: পোষা প্রাণীর নাম, নিজের গ্রামের নাম বা জন্ম সালের মতো তথ্য পাসওয়ার্ড হিসেবে ব্যবহার করবেন না।
অভিধানের শব্দ: সরাসরি কোনো বাস্তব বা অভিধানের শব্দ ব্যবহার করলে তা "ডিকশনারি অ্যাটাক" নামক হ্যাকিং পদ্ধতির মাধ্যমে সহজেই ভেঙে ফেলা সম্ভব।
পাসওয়ার্ড সুরক্ষার অতিরিক্ত কৌশল:
শুধু শক্তিশালী পাসওয়ার্ড তৈরি করলেই হবে না, এর সুরক্ষায় আরও কিছু পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি:
১. নিয়মিত পাসওয়ার্ড পরিবর্তন: সাইবার বিশেষজ্ঞরা প্রতি এক থেকে তিন মাস অন্তর পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করার পরামর্শ দেন। আপনার এটিএম কার্ডের পিন এবং অনলাইন ওয়ালেটের পাসওয়ার্ডও নিয়মিত পরিবর্তন করা উচিত।
২. টু-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন (2FA) ব্যবহার: যে সব অ্যাপ বা অ্যাকাউন্টে আঙুলের ছাপ, ওটিপি (OTP) বা অন্য কোনো উপায়ে দ্বিতীয় স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা বা টু-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন চালু করার সুযোগ আছে, তা অবশ্যই ব্যবহার করুন। এটি আপনার অ্যাকাউন্টে একটি অতিরিক্ত সুরক্ষা স্তর যোগ করে।
৩. ভিন্ন অ্যাকাউন্টে ভিন্ন পাসওয়ার্ড: আপনার সব অ্যাকাউন্টে (যেমন—ফেসবুক, ই-মেইল, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট) একই পাসওয়ার্ড ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন। একটি অ্যাকাউন্টের পাসওয়ার্ড ফাঁস হয়ে গেলে অন্য অ্যাকাউন্টগুলোও ঝুঁকিতে পড়বে।
সর্বদা সতর্ক থাকুন:
ফোন বা মেসেজের মাধ্যমে কোনো ব্যাংক, বিমা বা অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানের নাম করে কেউ আপনার পিন বা পাসওয়ার্ড চাইলে কখনোই তা দেবেন না।
আপনার স্মার্টফোন ও কম্পিউটারে লাইসেন্সড অ্যান্টিভাইরাস ও অ্যান্টিম্যালওয়্যার সফটওয়্যার ব্যবহার করুন, যা আপনাকে ক্ষতিকর সফটওয়্যার থেকে সুরক্ষিত রাখবে।