শিরোনাম
◈ ইউরোপের সঙ্গে বাণিজ্যে নতুন সাগরপথে পরীক্ষা শুরু করছে চীন ◈ প্রশাসনে তিন শক্তির টানাপোড়েনের মধ্যেই হবে নির্বাচন: ড. ইফতেখারুজ্জামান ◈ সৌদি–পাকিস্তান প্রতিরক্ষা চুক্তি ঘিরে উদ্বেগে ভারত, দক্ষিণ এশিয়ায় বাড়ছে নতুন উত্তেজনা ◈ বাংলাদেশ ভ্রমণে যে কারণে উচ্চমাত্রার সতর্কতা জারি করল কানাডা! ◈ ত্রয়োদশ নির্বাচন সামনে: ঢাকায় নতুন মুখসহ সম্ভাব্য প্রার্থীদের গ্রিন সিগন্যাল দিল বিএনপি ◈ বাংলাদেশি মডেল শান্তা পালের বিরুদ্ধে কলকাতা পুলিশের অভিযোগপত্র আদালতে জমা ◈ বাসা বরাদ্দে ঘুষ, ঊর্ধ্বতন ৩ কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করল সরকার ◈ জুলাইয়ে আমদানি ৬.২ বিলিয়ন ডলার, তিন বছরের সর্বোচ্চ ◈ শনিবার সকাল ৯টার মধ্যে বজ্রবৃষ্টি ঝরতে পারে যেসব অঞ্চলে ◈ আরব-মুসলিমপ্রধান দেশগুলোর ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আকাশপথ অবরোধে ভয়াবহ অর্থনৈতিক মন্দার আশঙ্কা

প্রকাশিত : ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ০৭:৫৭ বিকাল
আপডেট : ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ০৯:২৮ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

প্রশাসনে তিন শক্তির টানাপোড়েনের মধ্যেই হবে নির্বাচন: ড. ইফতেখারুজ্জামান

ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ করে প্রিসাইডিং অফিসারকে অবহিত করার পর তথ্য, ছবি ও ভিডিও নিতে পারবেন সাংবাদিকের—এই নীতিমালা পরিবর্তনের দাবি জানিয়েছেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান। সেই সঙ্গে প্রশাসনে সক্রিয় তিন ধরনের শক্তির টানাপোড়েনের মধ্যে আসন্ন সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলেও সতর্ক করেন তিনি।

আজ শুক্রবার সাংবাদিকদের জন্য আয়োজিত নির্বাচনী সংবাদ প্রতিবেদনসংক্রান্ত প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন ড. ইফতেখারুজ্জামান। রাজধানীর ধানমন্ডির মাইডাস সেন্টারে টিআইবি কার্যালয়ে এ কর্মশালার আয়োজন করে রিপোর্টার্স ফোরাম ফর ইলেকশন অ্যান্ড ডেমোক্রেসির (আরএফইডি)।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে সাংবাদিকদের ভোটকেন্দ্রে প্রবেশাধিকার অবশ্যই সুরক্ষিত রাখতে হবে। তিনি সতর্ক করে বলেন, ভোটকেন্দ্রে প্রবেশের আগে সাংবাদিকদের ‘অবহিত করার’ যে বাধ্যবাধকতা রাখা হয়েছে, সেটি হয়রানির হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে।

ইফতেখারুজ্জামান বলেন, নির্বাচনসংক্রান্ত আইন ও নীতিমালায় কিছু পরিবর্তন আনা হলেও প্রত্যাশিত সংস্কার এখনো বাস্তবায়িত হয়নি। বিশেষ করে সাংবাদিকদের প্রবেশাধিকারে যে শর্ত আরোপ করা হয়েছে, তা ঝুঁকি তৈরি করছে।

ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে গত ২৩ জুলাই গণমাধ্যম নীতিমালা জারি করে নির্বাচন কমিশন। গণমাধ্যম নীতিমালার বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ধারা বিগত সরকারের সময় গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য সংযোজনের অভিযোগ রয়েছে। বিতর্কিত সেসব ধারার কয়েকটি বর্তমান কমিশনও বহাল রেখেছে।

নীতিমালায় ভোটকক্ষ থেকে সরাসরি সম্প্রচার ও গোপন কক্ষের ভেতরে ছবি তোলায় বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, বৈধ কার্ডধারী সাংবাদিক ভোট কেন্দ্রে প্রবেশ করে প্রিসাইডিং অফিসারকে অবহিত করার পর তথ্য, ছবি ও ভিডিও নিতে পারবেন। একসঙ্গে দুজনের বেশি সংবাদকর্মী ভোটকক্ষে প্রবেশ করতে পারবেন না এবং ভেতরে সর্বোচ্চ ১০ মিনিট থাকতে পারবেন। ভোটকক্ষের ভেতরে নির্বাচনী কর্মকর্তা, এজেন্ট বা ভোটারের সাক্ষাৎকার নেওয়া নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

ইফতেখারুজ্জামান বলেন, এ বাধা অপসারণ করা দরকার। তবে সেটি না হলেও সাংবাদিকদের নিজেদের অবস্থান থেকে, আইন ও নীতিমালার মধ্যে থেকে, সম্মিলিতভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, বাংলাদেশের শাসনব্যবস্থা দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতিকরণ ও প্রতিষ্ঠান দুর্বলকরণের মধ্য দিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে প্রশাসনের পেশাদারি ও নিরপেক্ষতা নষ্ট হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে একটি দলীয় প্রভাবকে আরেকটি দলীয় প্রভাব দিয়ে প্রতিস্থাপন করা হয়েছে।

প্রশাসনে এখনো কিছু কর্মকর্তা আছেন, যারা নিরপেক্ষ থেকে পেশাগতভাবে কাজ করার চেষ্টা করছেন উল্লেখ করে ইফতেখারুজ্জামান বলেন, প্রশাসনে এখন তিন ধরনের শক্তি সক্রিয়—একদলীয় প্রভাবশালী গোষ্ঠী, প্রতিস্থাপিত দলীয় গোষ্ঠী এবং নিরপেক্ষ থাকতে চাওয়া একটি ছোট পেশাজীবী গোষ্ঠী। নির্বাচন এই টানাপোড়েনের মধ্যেই অনুষ্ঠিত হবে।

ইফতেখারুজ্জামান বলেন, হঠাৎ করে পুরো প্রশাসন পরিবর্তন করা সম্ভব নয়। সময় নিয়ে, ধীরে ধীরে স্থিতিশীলতা ও পেশাদারি গড়ে তুলতে হবে। সংস্কার কমিশনগুলোর দেওয়া সুপারিশ এখনো পুরোপুরি বাস্তবায়িত হয়নি। অল্প কিছু অগ্রগতি হলেও তা যথেষ্ট নয়।

ইফতেখারুজ্জামান বলেন, এসব দুর্বলতা মাথায় রেখেই সাংবাদিকদের কাজ করতে হবে। কোথায় আইন প্রয়োগ হচ্ছে, কোথায় ভোটারদের অধিকার নিশ্চিত হচ্ছে এবং কোথায় ব্যর্থতা ঘটছে—সেগুলো তুলে ধরা সাংবাদিকদের দায়িত্ব।

ইফতেখারুজ্জামান সাংবাদিকদের মনে করিয়ে দেন, এটি তাঁদের সাংবিধানিক দায়িত্ব। একই সঙ্গে এটি তাঁদের আইনগত অধিকার ও কর্তব্য। তিনি বলেন, ‘আমরা যদি নিরপেক্ষভাবে, সত্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদন তৈরি করি এবং স্বচ্ছতার দাবি অব্যাহত রাখি, তবে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আনার সুযোগ তৈরি করা সম্ভব।’

রাজনৈতিক দলগুলো যদি সুষ্ঠু নির্বাচন না চায়, তাহলে নিরপেক্ষ নির্বাচন করা কঠিন হবে। এ জন্য নির্বাচনে পর্যবেক্ষক ও গণমাধ্যমকর্মীদের নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করা জরুরি বলে মন্তব্য করেন ড. ইফতেখারুজ্জামান। সূত্র: আজকের পত্রিকা

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়