মাজহারুল মিচেল: [২] দেশে প্রথমবারের মতো একটি সম্ভাবনাময় ডেঙ্গু টিকার গবেষণা সফলভাবে সম্পন্ন করা হয়েছে বলে দাবি করেছে আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআর,বি)। যুক্তরাষ্ট্রের ভার্মন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইউভিএম) লার্নার কলেজ অব মেডিসিনের সঙ্গে আইসিডিডিআর,বির পরিচালিত এই যৌথ গবেষণায় দেখা গেছে, ডেঙ্গু ভাইরাসের চারটি ধরনের বিরুদ্ধেই উপযোগী এই টিকা। যার নাম দেওয়া হয়েছে ‘টিভি-০০৫’।
[৩] আইসিডিডিআর,বি গত বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এমন দাবি জানিয়েছে। সম্প্রতি দ্য ল্যানসেট ইনফেকশাস ডিজিজেস জার্নালে এই গবেষণার ফল প্রকাশিত হয়েছে।
[৪] বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গবেষণায় ব্যবহৃত এক ডোজের ডেঙ্গু টিকা টিভি-০০৫ মূল্যায়ন করে দেখা গেছে যে, এটি শিশু ও প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে প্রয়োগের জন্য নিরাপদ এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করতে সক্ষম। ডেঙ্গু একটি মশাবাহিত ভাইরাস যা বিশ্বব্যাপী, বিশেষ করে গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অঞ্চলে একটি বড় সমস্যা হয়ে উঠেছে। ডেঙ্গু আক্রান্ত ব্যক্তির মৃদু লক্ষণে জ্বর ও হাড়ের ব্যথা হয় এবং গুরুতর ক্ষেত্রে শক, রক্তপাত ও অনেক ক্ষেত্রে মৃত্যু ঘটে। সাধারণত ডেঙ্গুর চারটি ধরন (ডেন ১, ২, ৩, ৪) বা সেরোটাইপ এককভাবে বা সম্মিলিতভাবে সক্রিয় থাকতে পারে।
[৫] গবেষকরা জানান, ২০১৫ সালে ডেঙ্গু ইন ঢাকা ইনিশিয়েটিভ (ডিডি) নামক গবেষণাটি শুরু করেন আইসিডিডিআর,বি এবং ইউভিএমের ভ্যাকসিন টেস্টিং সেন্টারের গবেষকরা।
[৬] এ বিষয়ে আইসিডিডিআর,বির গবেষক ড. রাশিদুল হক বলেন, একটি কার্যকর এবং টেট্রাভালেন্ট ডেঙ্গু টিকা বাংলাদেশের বিশাল জনগোষ্ঠীর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কেননা বাংলাদেশে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব গুরুতর হয়ে উঠছে। বাংলাদেশের মানুষের অংশগ্রহণে টিভি-০০৫ টিকার গবেষণা করতে পেরে আমরা গর্বিত। আশা করি আমাদের কাজ ডেঙ্গুর বিরুদ্ধে একটি কার্যকর টিকা প্রাপ্তির বিষয়টিকে ত্বরান্বিত করবে।
[৭] যখনই ট্রায়াল শুরু হবে তখন যেন সুস্থ, সবল ও প্রাপ্ত বয়স্ক বহু পুরুষের উপর পরীক্ষা করার আহ্বান জানান বাংলাদেশ ভাইরোলজিস্ট সোসাইটির সভাপতি অধ্যাপক ড. জুলফিকার মামুন।
[৮] নারী ও শিশু বাদ দিতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তৃতীয় ধাপে ধনী-গরিব সব মিলিয়ে কমপক্ষে এক হাজার মানুষের উপর পরীক্ষা করতে হবে।
[৯] প্রবীন এ চিকিৎসক বলেন, ট্রায়ালে অবশ্যই সাইড ইফেক্ট পরীক্ষা করার পাশাপাশি খরচের কথাও চিন্তা করতে হবে। খুব বেশি অর্থের পরিমাণ নির্ধারণ করা হলে সুফল কম পাবে সাধারণ মানুষ।
[১০] সেই সাথে গবেষকদের তিনি সজাগ থাকারও অনুরোধ জানান। তিনি বলেন, রোটা ভাইরাসের ভ্যাকসিনের তৃতীয় ধাপ শেষ করা পরও পরবর্তীতে নানান জটিলতা দেখা দেয়। তবে বাংলাদেশের সে ধরণের জটিলতা যেন না হয় সেজন্য সতর্ক হওয়ার আহ্বান জানান তিনি। সম্পাদনা: তারিক আল বান্না