ক্রমবর্ধমান দূষণ ও অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাত্রার কারণে ফুসফুসের সমস্যা দিন দিন বাড়ছে। ফুসফুসের ক্ষতি আগে থেকেই শনাক্ত না করা হলে সমস্যা আরো খারাপ হতে পারে। যদিও মানুষ খুব কমই এই বিষয়ে মনোযোগ দিতে থাকেন। তবে আমাদের শরীরের কিছু লক্ষণের মাধ্যমে সতর্ক হওয়া উচিত।
এই লক্ষণগুলো যদি প্রাথমিকভাবে শনাক্ত করা যায়, তাহলে সঠিক চিকিৎসা ফুসফুসের ক্ষতির অগ্রগতি রোধ করতে পারে। চলুন, জেনে নেওয়া যাক ফুসফুসের ক্ষতির লক্ষণগুলো সম্পর্কে।
ঘন ঘন কাশি
কাশি সাধারণত সর্দি বা গলার সংক্রমণের লক্ষণ হিসেবে বিবেচিত হয়। তবে যদি এটি তিন সপ্তাহের বেশি সময় ধরে চলতে থাকে, তবে উপেক্ষা করা উচিত নয়।
ফুসফুসের ক্ষতির ফলে কাশি থেকে শ্লেষ্মা বের হতে পারে। যা কখনো কখনো রক্তাক্ত হতে পারে। ফলে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এটি আরো খারাপ হতে পারে।
শ্বাসকষ্ট
হাঁটা, সিঁড়ি বেয়ে ওঠা বা হালকা শারীরিক ক্রিয়াকলাপের মতো দৈনন্দিন কাজকর্ম করার সময় যদি শ্বাসকষ্ট হয়, তাহলে এটি উদ্বেগের কারণ।
এই লক্ষণটি ইঙ্গিত দেয় যে ফুসফুস পর্যাপ্ত অক্সিজেন শোষণ করতে এবং এটি প্রতিস্থাপন করতে অক্ষম। এটি হাঁপানি, ফুসফুসের ফাইব্রোসিস বা টিস্যুর ক্ষতির কারণে হতে পারে।
বুকে ব্যথা বা টানটান ভাব
ফুসফুসের ক্ষতির আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ হলো ক্রমাগত ব্যথা, জ্বালাপোড়া বা বুকে টানটান ভাব। গভীর শ্বাস-প্রশ্বাস, কাশি বা হাসির সাথে এই ব্যথা আরো খারাপ হতে পারে। ফুসফুসে প্রদাহ, সংক্রমণ বা অন্যান্য কারণে এই ব্যথা হতে পারে।
বুকের ব্যথাকে কখনোই হালকাভাবে নেওয়া উচিত নয়, কারণ এটি হৃদরোগের লক্ষণও হতে পারে।
শ্বাসনালির সংকোচন
শ্বাস নেওয়ার সময় বা বের করার সময় শ্বাসকষ্টের শব্দ হয়। এই শব্দ তখন হয় যখন ফুসফুসের শ্বাসনালি সংকুচিত বা বন্ধ হয়ে যায়। এটি হাঁপানি, অ্যালার্জি, সিওপিডি, অথবা ফুসফুসের সংক্রমণের একটি সাধারণ লক্ষণ।
ক্লান্তি ও ওজন হ্রাস
অত্যন্ত ক্লান্তি ও অনিচ্ছাকৃত ওজন হ্রাস ফুসফুসের ক্ষতির একটি উল্লেখযোগ্য লক্ষণও হতে পারে। যখন ফুসফুস শরীরকে পর্যাপ্ত অক্সিজেন সরবরাহ করতে অক্ষম হয়, তখন শরীরের শক্তির মাত্রা হ্রাস পায়। যার ফলে ক্রমাগত ক্লান্তি ও দুর্বলতা দেখা দেয়। অতিরিক্তভাবে শরীর শক্তি সরবরাহের জন্য পেশি ও চর্বি ভেঙে ফেলতে শুরু করে। এ ছাড়া অবাঞ্ছিত ওজন হ্রাস পায়।
কিভাবে যত্ন নেবেন
বিশেষজ্ঞদের মতে, ফুসফুস ঠিক রাখতে ডায়েটের প্রতি নজর দেওয়া প্রয়োজন। কিছু খাবার ফুসফুসের ক্ষতি থেকে রক্ষা করতে পারে। যেমন— পালং শাক, ব্রকলি, বেরি জাতীয় ফল। কারণ বেরি অ্যান্টি-অক্সিডেন্টে সমৃদ্ধ। যা ফুসফুসকে ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে।
এ ছাড়া ক্রমবর্ধমান দূষণ ও ক্ষয়প্রাপ্ত বায়ু আমাদের ফুসফুস ও শ্বাসতন্ত্রের ওপর সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলে। পুষ্টিবিদরা জানান, কিছু পানীয় আপনার ফুসফুসকে ডিটক্সিফাই করতে সাহায্য করবে। যেমন— হলুদ দুধ, বিটের রস, গ্রিন টি ইত্যাদি।
সূত্র : ইটিভি