শিশুর স্বাস্থ্য ও বিকাশের জন্য পর্যাপ্ত ঘুম অপরিহার্য। অনেক শিশু দিনে বেশি ঘুমায় এবং রাত জেগে কাটায়, যা মা-বাবার জন্য বিড়ম্বনার কারণ হয়। মূলত নবজাতকের এই সমস্যা বেশি দেখা যায়, কারণ তারা মাতৃগর্ভে দিন-রাত বুঝতে পারে না এবং তাদের মগজের যে অংশ দিন-রাত বুঝতে পারে, তা পরিণত হতে সময় লাগে। শিশুর পেটে ব্যথা (ইনফেনটাইল কলিক) বা অন্য কোনো শারীরিক অসুস্থতাও ঘুমের ব্যাঘাত ঘটাতে পারে।
তবে কিছু পদ্ধতি অবলম্বন করলে শিশু দিন ও রাতের পার্থক্য দ্রুত বুঝতে পেরে দিনে জেগে থেকে রাতে ঘুমাতে শুরু করবে:
দিনের বেলা করণীয়
•ঘরে উজ্জ্বল আলো জ্বালিয়ে রাখুন।
•পরস্পরের সঙ্গে এবং বাচ্চার সঙ্গে কথোপকথন চালিয়ে যান।
•মিউজিক ও টিভি চালাতে পারেন (তবে স্ক্রিন টাইম সীমিত রাখুন)।
•দিনের বেলা অতিথি এলে শিশুকে ঘুম থেকে তুলতে দ্বিধা করবেন না।
•শিশু দিনে দুই-চারবার ১ থেকে ১.৫ ঘণ্টার ঘুম দিতে পারে।
সন্ধ্যা ও রাতের বেলা করণীয়
•সন্ধ্যা ৬টার পর: শিশু যেন না ঘুমায়, সেদিকে খেয়াল রাখুন। খেলা, কথা বলা ও মিউজিক চালিয়ে যান।
•ঘুমের প্রস্তুতি: রাত ৮টা-৯টার পর থেকেই শিশুর ঘুমের আয়োজন শুরু করুন। ঘরের সব বাতি নিভিয়ে দিন।
•খাওয়ানো: সর্বশেষ রাত ১০টার দিকে শিশুকে খাওয়ানোর চেষ্টা করুন।
•ঘুমানোর পরিবেশ: শিশু না ঘুমালেও তাকে বিছানায় নিয়ে যান। রাতে ঘুমানোর জন্য ছড়া বা গান শোনাতে পারেন, তবে টিভির ধারে কাছে নেবেন না।
•ঘুম পাড়ানো: কোলে নিয়ে বা দোলনায় দোল দিয়ে শিশুকে তাড়াতাড়ি ঘুম পাড়ানো যায়।
•পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা: কুসুম গরম পানি দিয়ে মুছে দিলে শিশু ফ্রেশ থাকবে এবং ঘুমাবেও কম।
মনে রাখতে হবে, শিশুর ঘুমের ধরন ও সময় নির্দিষ্ট হতে ছয় মাস পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। এই পদ্ধতিগুলো অনুসরণের সময় খুব কঠোর না হয়ে ধৈর্যশীল থাকতে হবে।
লেখক : বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক
সূত্র: সমকাল