শিরোনাম
◈ পরিবেশ বিধ্বংসী ইউক্যালিপটাস গাছের চারা ধ্বংস করলেন ইউএনও ◈ ৮৫০ কোটি টাকার সার কিনছে সরকার, এলএনজি আমদানির অনুমোদন  ◈ এনবিআরের লুতফুলসহ ৫ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুদকের অনুসন্ধান ◈ নির্বাচনী বাজেটে কোনো কার্পণ্য হবে না: অর্থ উপদেষ্টা ◈ মে‌সি আর্জেন্টিনায় ফির‌তে যুক্তরাষ্ট্র ছাড়ছেন? ◈ বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় ১১ ব্যাংকের সম্পদের মান যাচাই করবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ◈ রূপালী ব্যাংকের কার্যক্রম সাময়িক বন্ধ থাকবে ◈ গুমের শিকার পারভেজ কন্যা নিধি'র বক্তব্য শুনে কাঁদলেন তারেক রহমান (ভিডিও) ◈ জাপানে বাঁচার যুদ্ধ হেরে গেলেন বাংলাদেশের আপন: না খেয়ে মৃত্যু এক মেধাবীর ◈ আপনারা কখনও শান্তি পাবেন না, যতক্ষণ না দুঃখ প্রকাশ করেন : প্রেস সচিব

প্রকাশিত : ১৬ মে, ২০২৫, ১২:০৩ রাত
আপডেট : ৩০ জুন, ২০২৫, ১২:০০ দুপুর

প্রতিবেদক : মনজুর এ আজিজ

‘নির্মল বায়ু বিলাসিতা নয়, নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকার’

নিজস্ব প্রতিবেদক : এ মুহূর্তে প্রয়োজন একটি বাস্তবমুখী জ্বালানি পরিকল্পনা এবং নির্মল বায়ু আইন প্রণয়ন। কারণ নির্মল বায়ু কোনো বিলাসিতা নয়, এটি নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকার। জ্বালানি নীতিগুলোতে শুধু রাজনৈতিক বা অর্থনৈতিক দিক বিবেচনা না করে পরিবেশগত দিকও বিবেচনা করা উচিত। মানবস্বাস্থ্য, প্রাণপ্রকৃতির সুরক্ষা এবং সমৃদ্ধ অর্থনৈতিক ভবিষ্যতের জন্যই তা দরকার। বৃহস্পতিবার সকালে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের (বিআইপি) কনফারেন্স হলে বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস), (বিআইপি) এবং সেন্টার ফর পার্টিসিপেটরি রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (সিপিআরডি) যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত ‘নির্মল বায়ু নিশ্চিত করতে জ্বালানি নীতির পুনর্বিবেচনা’ শীর্ষক এক পলিসি ব্রেকফাস্টে এসব কথা বলেন বক্তারা।

এতে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক এম শহীদুল ইসলাম। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন বিআইপির সাধারণ সম্পাদক, পরিকল্পনাবিদ শেখ মুহাম্মদ মেহেদী আহসান। পলিসি ব্রেকফাস্টে আলোচক হিসেবে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা এম সফিউর রহমান, বাংলাদেশ ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের নগর পরিকল্পনাবিদ সানজিদা হক।

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে ক্যাপসের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার বলেন, এই মুহূর্তে প্রয়োজন একটি বাস্তবমুখী জ্বালানি পরিকল্পনা, নির্মল বায়ু আইন প্রণয়ন। নবায়নযোগ্য জ্বালানি অর্থায়নে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিসহ জবাবদিহি ও শক্তিশালী প্রশাসনিক ব্যবস্থা থাকতে হবে। তিনি বলেন, নির্মল বায়ু কোনো বিলাসিতা নয়, এটি আমাদের সাংবিধানিক অধিকার। জ্বালানি নীতি কেবল মেগাওয়াটের হিসাব নয়, এর ওপর নির্ভর করছে মানবস্বাস্থ্য, প্রাণপ্রকৃতির সুরক্ষা এবং সমৃদ্ধ অর্থনৈতিক ভবিষ্যৎ।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আবু সাঈদ মো. কামরুজ্জামান বলেন, বাংলাদেশে এর আগে প্রায় সাতটি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। প্রতিটি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য ৭০০-১০০০ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছিল, যার বেশির ভাগই কৃষিজমি ছিল। কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র শুধু বায়ুদূষণ করছে না, এগুলো কৃষি ও প্রাণপ্রকৃতির জন্যও ক্ষতিকর।

সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক খোন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার এবং ভবিষ্যৎ সরকারকে জ্বালানি নীতিসহ অন্য নীতিগুলো প্রণয়নে বিদেশি কনসালট্যান্ট নির্ভর না হয়ে দেশীয় বিশেষজ্ঞ প্যানেলের সাহায্য নেওয়া উচিত। পাশাপাশি জ্বালানি মহাপরিকল্পনা সংশোধনের ওপর জোর দেন তিনি।

ঢাকার সুইডেন দূতাবাসের ফার্স্ট সেক্রেটারি ও ডেভেলপমেন্ট কো-অপারেশন এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড ক্লাইমেট চেঞ্জের ডেপুটি হেড নায়োকা মার্টিনেজ-ব্যাকস্ট্রোম বলেন, অনেক ইউরোপীয় অংশীদার নির্মল ও ন্যায়সংগত জ্বালানি শক্তি রূপান্তরকে সমর্থন করছে। যদি প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগের জন্য অনুকূল পরিবেশ তৈরি করা যায় এবং সিস্টেমভিত্তিক সমাধান প্রয়োগের সুযোগ সহজলভ্য করা যায়, তবে আরও অনেক অংশীদার আসবে এই খাতে।

ইউএনডিপি বাংলাদেশের গ্রিন গ্রোথ প্রোগ্রাম স্পেশালিস্ট জ্যাকব ফার্ডিনান্ড বলেন, জ্বালানি নীতিগুলোতে শুধু রাজনৈতিক বা অর্থনৈতিক দিক বিবেচনা না করে পরিবেশগত দিকও বিবেচনা করা উচিত। জ্বালানির উৎসগুলোর সঙ্গে পরিবেশদূষণ বা বায়ুদূষণ গভীরভাবে সম্পর্কিত। তিনি বলেন, জ্বালানি পরিকল্পনার মাধ্যমে বায়ুদূষণ কমাতে হবে, তবেই টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব।

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মো. সাইফুর রহমান বলেন, পরিবেশবান্ধব উন্নয়নের জন্য রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি অনেক জরুরি। আমাদের অনেক আইন ও নীতিমালা আছে কিন্তু প্রয়োগ নেই, এগুলো বাস্তবায়ন করতে আমাদের উদ্দেশ্যের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে টুলস ডেভেলপমেন্ট করতে হবে। পাশাপাশি গ্রিন ফাইন্যান্স, প্রযুক্তি ব্যবহার এবং আন্তর্জাতিক সমন্বয় বাড়াতে হবে।

আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, আমরা চাহিদা অনুযায়ী যে পরিমাণ শক্তি উৎপাদন করছি, তার বেশির ভাগই জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে উৎপন্ন হচ্ছে। তবে শহরগুলোতে গণপরিবহন বৃদ্ধির পাশাপাশি নবায়নযোগ্য শক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে আমরা এই শক্তির চাহিদা কমাতে পারি। এটি আমাদের শহরগুলোর বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণেও সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
সেন্টার ফর পার্টিসিপেটরি রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (সিপিআরডি) প্রধান নির্বাহী মো. শামসুদ্দোহা বলেন, আমরা যখন পলিসি প্রণয়ন করি, তা শুধু আমাদের দেশের একক চিন্তা করে নয়, এটি বৈশ্বিক উন্নয়নের সংজ্ঞার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে প্রণয়ন করা উচিত।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়