শিরোনাম

প্রকাশিত : ০৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ০৯:১৬ সকাল
আপডেট : ০৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ০১:০৯ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ডাকসু নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু

মঙ্গলবার (০৯ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। ভোট গ্রহণ চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।

জুলাই গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী দেশের পরিবর্তিত রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ভিন্ন এক আবহে শুরু হয়েছে ৩৮তম ডাকসু নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। মঙ্গলবার (০৯ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। ভোট গ্রহণ চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।

নির্বাচনে ২৮টি পদের বিপরীতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৪৭১ জন, যা ডাকসুর ইতিহাসে সর্বোচ্চ।

এর মধ্যে নারী ৬২ জন। অন্যদিকে, ১৮টি হলে ১৩টি পদে মোট ১ হাজার ৩৫ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এবারের নির্বাচনে ছাত্রদল, ছাত্রশিবির, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ (বাগছাস) ও ছাত্র অধিকার পরিষদ আলাদা প্যানেল দিয়েছে। বামপন্থি ছাত্র সংগঠনগুলো নির্বাচন করছে দুটি প্যানেলে। এ ছাড়া স্বতন্ত্রদের পূর্ণ ও আংশিক মিলিয়ে প্যানেল রয়েছে ১০টির মতো।

এবারের নির্বাচনে মোট ভোটার ৩৯ হাজার ৭৭৫ জন। এর মধ্যে ছাত্র ২০ হাজার ৮৭৩ এবং ছাত্রী ভোটার ১৮ হাজার ৯০২ জন। আটটি কেন্দ্রের ৮১০টি বুথে প্রত্যেক ভোটারের ডাকসু ও হল সংসদের মোট ৪১টি পদে নিজের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার সুযোগ থাকছে। সকাল ৮টা থেকে শুরু হওয়া এ ব্যালট যুদ্ধ বিকেল ৪টা পর্যন্ত টানা আট ঘণ্টা চলবে। ভোটগ্রহণ শেষে নির্বাচন কমিশন তাৎক্ষণিকভাবে গণনা শুরুর পর ফল প্রকাশ করবে। একজন ভোটার গড়ে ১০ মিনিট সময় নিলেও কোনো রকম বিঘ্ন ছাড়াই সব কেন্দ্রে নির্ধারিত সময়ে ভোট দিতে সক্ষম হবেন বলে আশা করছে নির্বাচন কমিশন।

ভোট গণনা হবে অপটিক্যাল মার্ক রিকগনিশন (ওএমআর) মেশিনে। প্রতিটি কেন্দ্রের বাইরে এলইডি স্ক্রিনে ফল গণনা প্রদর্শিত হবে। সবশেষে সিনেট ভবন মিলনায়তনে সব কেন্দ্রের মোট ফল ঘোষিত হবে। এরই মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। ৮টি প্রবেশপথে বসানো হয়েছে নিরাপত্তা চৌকি। ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তা জোরদারের পাশাপাশি থাকছে মোবাইল প্যাট্রল, ডগ স্কোয়াড, বিশেষায়িত টিম, বোম এক্সপোজাল ইউনিট, সোয়াত টিম, ডিবি (সাদা পোশাকে), সিসিটিভি মনিটরিং সেল এবং স্ট্রাইকিং রিজার্ভ ফোর্স।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানিয়েছে, অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিতে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। শিক্ষার্থীরা যেন শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট দিতে পারেন, সে জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

ভোট দেওয়ার সঠিক নিয়ম

ভোটার তার সুবিধাজনক সময়ে নির্ধারিত ভোটকেন্দ্রে যাবেন। ভোটকেন্দ্রে থাকা পোলিং কর্মকর্তাকে ভোটার তার পরিচয় নিশ্চিত করবেন।

ভোটার প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী হলে তার লাইব্রেরি কার্ড অথবা পে-ইন স্লিপ দেখিয়ে পরিচয় নিশ্চিত করবেন। অন্য বর্ষের শিক্ষার্থীরা হল আইডি কার্ড, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইডি কার্ড অথবা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় লাইব্রেরি কার্ড দেখিয়ে পরিচয় নিশ্চিত করবেন।

পরিচয় নিশ্চিতের পর ভোটারের আঙুলে অমোচনীয় কালির দাগ দেবেন ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা। ভোটার তালিকায় নিজের নামের পাশে সই করবেন ভোটার। এরপর পোলিং কর্মকর্তাকে ভোটার নম্বর জানাতে হবে।

ব্যালট নিয়ে ভোটার প্রবেশ করবেন গোপন ভোটকক্ষে। মোবাইল ফোন বা কোনো ইলেকট্রনিকস ডিভাইস নিয়ে ভোটকক্ষে প্রবেশ করা যাবে না।

ভোটকক্ষে গিয়ে ব্যালট পেপার থেকে পছন্দের প্রার্থীর নাম ও ব্যালট নম্বর খুঁজে বের করবেন ভোটার। এরপর পছন্দের প্রার্থীর নামের পাশের ঘরে স্পষ্টভাবে ‘ক্রস চিহ্ন’ দেবেন ভোটার।

খেয়াল রাখতে হবে, ক্রস চিহ্ন যেন ঘরের বাইরে না যায়। ঘরের বাইরে গেলে সেই ভোট বাতিল হতে পারে। পছন্দের প্রার্থীকে ভোটদান শেষে ব্যালট বাক্সে ব্যালট পেপার জমা দেবেন ভোটার।

কেন্দ্রীয় সংসদ ও হল সংসদের জন্য দুটি আলাদা ব্যালট বক্স থাকবে। ব্যালট পেপার ‘ভাঁজ’ না করে সেগুলো নির্ধারিত বাক্সে ফেলে ভোটার তার ভোটদানের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবেন।

নির্বাচন কমিশনের তথ্যানুযায়ী, যেসব শিক্ষার্থীর দৃষ্টিপ্রতিবন্ধকতা রয়েছে এবং ব্রেইল পড়তে পারেন, তাদের জন্য প্রথমবারের মতো ব্রেইল পদ্ধতিতে ভোটদানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবে যারা ব্রেইল পড়তে পারেন না, তারা আরেকজনের সহযোগিতা নিয়ে অন্য সবার মতোই ভোট দিতে পারবেন।

ব্রেইল পদ্ধতিতে ভোটগ্রহণের দায়িত্বে রয়েছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা এবং শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক শারমীন কবীর।

ব্রেইল পদ্ধতিতে ভোট দিতে হল থেকে ৩০ জন শিক্ষার্থীর তালিকা পেয়েছে কমিশন। তারা এবার ব্রেইল পদ্ধতিতে ভোট দিতে পারবেন।

বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন, ১৯৬৬ সালের ছয় দফা, কিংবা ১৯৬৯ সালের গণভ্যুত্থান অথবা ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ—দেশের গুরুত্বপূর্ণ সব বাঁকবদলেই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু)। এজন্য একে অনেকেই ‘দ্বিতীয় সংসদ’ বলে থাকেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়