বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) হলে অবস্থানরত আতঙ্কগ্রস্থ নারী শিক্ষার্থীরা আনুমানিক রাত আড়াইটার দিকে হলের গেইট খুলে ফোয়ারার সামনে নিজেদের নিরাপত্তার দাবিতে আন্দোলন শুরু করে। এসময় তারা ‘বহিরাগত হলে এলো, হলবাসী জেগে উঠো’, ‘চুরি করে পালালো কে? বহিরাগত ছাত্রলীগ’ বলে স্লোগান দিতে থাকে। সূত্র : চ্যানেলআই
ছাত্রলীগের পদধারী সাবেক এক নেত্রী সন্দেহজনকভাবে পরিচয় গোপন ও ছদ্মবেশ ধারণ করে হলের রাজনৈতিক কক্ষে প্রবেশ করায় আতঙ্কে ভুগছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শেখ হাসিনা হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা।
আন্দোলনকারী ছাত্রীরা জানায়, গত ৩ সেপ্টেম্বর আনুমানিক সকাল ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের গণিত বিভাগে সাবেক শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের নেত্রী ঝুমা ছদ্মবেশ ধারণ করে শেখ হাসিনা হলের দক্ষিণ ব্লকের ২০১ নম্বর রাজনৈতিক কক্ষ থেকে সন্দেহজনক ২টি বস্তা বের করে নিয়ে যান।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, ছাত্রলীগ নেত্রীর পরিচয় গোপন করে হলে প্রবেশ করার কাজে সাহায্য করেছেন উক্ত কক্ষে অবস্থানরত আরেক ছাত্রী। তিনি আল ফিকহ্ এন্ড লিগ্যাল স্টাডিজ বিভাগের স্নাতক ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী এশা (ছদ্মনাম)।
হলসূত্রে আরও জানা যায়, শিক্ষার্থীদের উদ্বিগ্নতা নিরসনে রাত সাড়ে ১২টার দিকে ২য় তলার আবাসিক ছাত্রীরা সম্মিলিতভাবে ২০১ নম্বর কক্ষে যায়। এসময় তারা ছাত্রলীগ নেত্রীর হলে প্রবেশের ঘটনা সম্পর্কে এশার কাছে জানতে চাইলে সে কোন যুক্তিযুক্ত উত্তর দিতে পারেনি। একই সাথে এশা স্পষ্টত জানায় তার সাথে যোগাযোগ করেই ঝুমা হলে এসেছিল।
তবে বস্তায় কী ছিল এবং কেন এতদিন পর সাবেক ছাত্রী ছদ্মবেশ ধারণ এবং পরিচয় গোপন করে হলে এসেছেন সেই বিষয়ে এশা কোন উত্তর দিতে পারেনি। বস্তার ভেতর অবৈধ কোন কিছু থাকতে পারে এবং তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহের কারণ রয়েছে বলে উদ্বিগ্নতা প্রকাশ করেছে নিরাপত্তার দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।
অভিযুক্ত এশা (ছদ্মনাম) বলেন, আমি এ বিষয়ে কিছু জানি না, কারণ আমি ঝুমা আপুর রুমেই গেস্ট হিসেবে থাকতাম তার বেডেই, আমি হলে আসার আগেই আমার রুমমেট আপুর থেকে আমার নাম্বার নিয়ে ঝুমা আপু আমার সাথে যোগাযোগ করে যে, আমি কবে হলে যাবো।
তিনি আরো বলেন, আমি তাকে কোনভাবেই সাহায্য করিনি। এমনকি আপু যেদিন হলে আসে আমি ডিপার্টমেন্টের কাজে বাইরে ছিলাম। ঝুমা জিনিসপত্র নেওয়ার সময় হল কতৃপক্ষ উপস্থিত ছিলেন।
তবে তিনি রুমে না থাকায় কীভাবে নেত্রী রুমে ঢুকলেন, এ বিষয়ে জানতে চাইলে উক্ত ছাত্রী জানান তিনি এ বিষয়ে কিছু বলতে চান না।
হলের অফিসে যোগাযোগ করলে কর্তৃপক্ষ জানায়, এ বিষয়ে কেউ অফিসে ইনফর্ম করেনি এবং অফিসের কেউ ঘটনাস্থলে উপস্থিতও ছিলেন না। হলের আয়ারা জিনিসপত্র নামিয়ে দিতে সাহায্য করেছে বলে কর্তৃপক্ষ জানতে পেরেছে।
ছাত্রলীগ নেত্রী ঝুমার সাথে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
আপনার মতামত লিখুন :