নিউজ ডেস্ক: শখ করে পাখিপালন ও ব্লগিং শুরু করেছিলেন টাঙ্গাইল সদর উপজেলার কান্দিলা গ্রামের বাসিন্দা সোহান খান, যা বর্তমানে তার অন্যতম আয়ের উৎস হয়ে দাঁড়িয়েছে। তিনি বর্তমানে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক পেজ ‘বার্ডস ভ্যালি’ থেকে ব্লগিংয়ের মাধ্যমে এবং পাখি বিক্রি করে মাসে ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা আয় করছেন। সময় টিভি
২০০৭ সালের দিকে শখ করে পাখিপালন শুরু করেন বার্ডস ভ্যালির মালিক সোহান খান। পরে ২০১৮ সালে বড় পরিসরে পাখিপালন শুরু করেন। শুরুতে বাসার একটি বারান্দায় মাত্র ১০ জোড়া পাখি নিয়ে পাখি পালা শুরু করেন তিনি। পরে বাড়ির বাগানে আলাদা একটি ঘরে পাখি লালনপালন শুরু করেন।
সোহানের খামারে প্যারট প্রজাতির ককাটেল, লাভ বার্ড, কনুর, লরির মতো ১০০ জোড়া পাখি রয়েছে। তার কাছে অস্ট্রেলিয়ান ও আফ্রিকান পাখিই বেশি রয়েছে।
পরে ২০২০ সাল থেকে অনলাইন প্ল্যাটফর্মে ব্লগিং শুরু করেন। এ বিষয়ে তিনি বলেন, মানুষ বিভিন্ন ধরনের ব্লগিং করেন। যেমন: ফুড ব্লগিং, ট্রাভেল ব্লগিং। কিন্তু আমি যখন শুরু করি, তখন কেউ এ ধরনের কিছু নিয়ে ব্লগিং করত না। কিছু মানুষ যারা বিড়াল বা কুকুর লালনপালন করতেন তারা স্বল্প পরিসরে করতেন। কিন্তু পাখি নিয়ে তেমন কেউই ব্লগিং করত না। তখন আমি বার্ড ভ্যালি পেজটি খুলে ব্লগিং করি, সে সময় আমি ততটা অ্যাকটিভ ছিলাম না। ২০২৩ সাল থেকে আমরা এ বিষয়টিতে বেশি মনোযোগ দেয়া শুরু করি।
সোহান বলেন, ‘পাখি বিক্রি করাই আমরা মূল লক্ষ্য নয়; আমি যেহেতু পাখি ব্রিডিংও করে থাকি, তাই যখন দেখা যায় আমার খামারের ধারণক্ষমতার চেয়ে বেশি পাখি হয়ে যায়, তখন আমি অতিরিক্ত পাখিগুলো বিক্রি করে দিই।’
এই খাতটিকে সম্ভাবনাময় উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ ধরনের পাখির ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। কেউ যদি এভাবে খামার করতে চান, তাহলে তারা একটি করতে পারেন। এ খাতে ভালো আকারের ক্রেতা রয়েছে বাজারে। ফলে প্রচুর পরিমাণে বিক্রি করা সম্ভব। যেমন ধরুন, আমার কোনো পাখি দুটি বাচ্চা হলে, তার জন্য ক্রেতা পাওয়া যায় ২০০ থেকে ৩০০। কাজেই কেউ যদি সঠিকভাবে এমন খামার করেন, তাহলে তারা ভালো আয় করবেন।
ব্লগিং ও পাখি বিক্রি করে মাসে ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা আয় হয় বলে জানান সোহান। তিনি বলেন, ‘পাখি লালনপালন করতে আমাকে তেমন সময় ব্যয় করতে হয় না। সকালে এক ঘণ্টা আর বিকেলে এক ঘণ্টা। আমার ১০০ জোড়া পাখির খাবার ও পরিচর্যায় প্রতি মাসে ১০ থেকে ১২ হাজার টাকার মতো খরচ হয়।’
বার্ডস ভ্যালির মাধ্যমে মূলত উপকৃত হচ্ছেন নতুন পাখালরা। সোহানের ব্লগ দেখে তারা কীভাবে পাখির যত্ন করতে হয়, লালনপালন করতে হয়, কীভাবে পাখির প্রজনন করাতে হয়, কীভাবে অসুস্থ পাখির প্রাথমিক চিকিৎসা এবং পরিচর্যা করতে হয় ইত্যাদি শিখতে পারছেন।
সোহান খান বলেন, ‘আমার পেজের মাধ্যমে আমি অনেকই পাখি পালতে অনুপ্রেরণা দিচ্ছি। আর যেহেতু আমি দীর্ঘদিন ধরে এ পেশায় জড়িত, তাই আমি মানুষকে পাখির লালনপালন বা রোগবালাইয়ের বিষয়েও সহায়তা করি। আমাদের দেশে এ ধরনের এক্সটিক বা বিদেশি পাখি লালনপালন নিয়ে গাইড করার তেমন কেউ নেই। দেশের ভেটেরিনারি হাসপাতালগুলো পাখির চিকিৎসার জন্য নিয়ে গেলে তাকে কুকুর বা বিড়ালের চিকিৎসা দেয়া হয়। কাজেই আমি ১৪ বছরের অভিজ্ঞতা মানুষের সঙ্গে শেয়ার করি বার্ডস ভ্যালি পেজটির মাধ্যমে।’
ভবিষ্যতে বার্ডস ভ্যালির পরিসর আরও বড় করতে চান সোহান।