শিরোনাম
◈ ব্যাংক থেকে ধার করে, টাকা ছাপিয়ে বাজেট বাস্তবায়ন করব না: অর্থ উপদেষ্টা ◈ আন্দালিব রহমান পার্থের স্ত্রীকে বিদেশ যাত্রায় বাধা ◈ যেভাবে আটক হন সাবেক এমপি কণ্ঠশিল্পী মমতাজ (ভিডিও) ◈ ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় সেনাবাহিনী ক্যাম্পের সহায়তা পেতে যোগাযোগের নাম্বার দেয়া হল ◈ দুই দিন আগে মা মারা গেছেন, কাল মেজবান, আমাকে এখন না ধরেন ভাই” (ভিডিও) ◈ দায়িত্ব গ্রহণের পর নিজ জন্মভূমিতে যাচ্ছেন কাল প্রধান উপদেষ্টা  ◈ সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাস আল খাইমাহ ৩ নারীকে গুলি করে হত্যা, গ্রেফতার ১ ◈ জনপ্রিয়তা ও রাজনৈতিক হিসাব-নিকাশে জোরালো দৌড়: বিএনপিতে ফিরতে চান বহিষ্কৃত সাক্কু ও কায়সার ◈ আবারো মামুন লায়লার দ্বন্দ্ব, প্রকাশ্যে এলো ঐশী-মামুনের অন্তরঙ্গ মুহূর্ত ! ভিডিও ◈ পাকিস্তানের সেনাপ্রধানকে কি আটক ? যা জানা গেলো (ভিডিও)

প্রকাশিত : ২৩ জানুয়ারী, ২০২৩, ০৫:১৯ বিকাল
আপডেট : ২৪ জানুয়ারী, ২০২৩, ০৪:৪৫ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ডলার সংকটে ৫ জাহাজে পণ্য খালাস বন্ধ, ৫৬ দিন ভাসছে সমুদ্রে

পণ্যভর্তি পাঁচ জাহাজ

সঞ্চয় বিশ্বাস: ডলার সংকটের কারণে দিনের পর দিন সাগরে ভাসছে পণ্যভর্তি পাঁচ জাহাজ। ১ লাখ ৩৫ হাজার ৪০১ টন তেল ও চিনিবোঝাই এসব জাহাজের কোনোটি ভাসছে ৫৬ দিন ধরে। আমদানিকারকরা ব্যাংকে স্থানীয় টাকায় পণ্যের মূল্য পরিশোধ করে দিয়েছেন। ব্যাংক রপ্তানিকারককে এ দাম পরিশোধ করবে ডলারে। কিন্তু ডলারের অভাবে ব্যাংক তা পরিশোধ করতে না পারায় বিদেশি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান জাহাজ থেকে পণ্য খালাসের অনুমতি দিচ্ছে না। আর এই পাঁচটি জাহাজের জন্য প্রতিদিন জরিমানা গুনতে হচ্ছে প্রায় এক লাখ ডলার। সমকাল

সাগরে এভাবে পণ্য ভাসার খেসারত দিতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকেই। কারণ, ভোজ্যতেল ও চিনির আমদানিকারকরা বাড়তি টাকা তুলে নিচ্ছেন বাজার থেকে। বাজারে ভোজ্যতেল ও চিনির সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছেন তাঁরা। তাই অস্থির হয়ে উঠেছে এ দুটি পণ্যের বাজার। তিন দিনের ব্যবধানে খুচরা বাজারে এ দুটি পণ্যের দাম কেজিতে বেড়ে গেছে ১০ থেকে ১৫ টাকা। সাগরে থাকা পণ্য দ্রুত খালাস করা না হলে তেল ও চিনির দাম আরও বাড়বে বলে ধারণা করছেন পাইকাররা।

এ প্রসঙ্গে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি শনিবার বলেছেন, ডলার সংকটে সাগরে জাহাজ ভাসার বিষয়টি সম্পর্কে তাঁরা অবগত। এ নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন বাণিজ্য সচিব। রমজান মাসের পণ্য আমদানিতে যাতে কোনো সংকট না হয়, সে জন্য সব ধরনের চেষ্টা অব্যাহত আছে। রিজার্ভ ঠিক রেখে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। চারটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের সঙ্গে কথাও বলেছেন তাঁরা। বিষয়টি সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীও অবগত।

৬ থেকে ১০টি প্রতিষ্ঠান এ দুটি পণ্যের ৯০ শতাংশ বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে। অপরিশোধিত তেল ও চিনি এনে তাঁরা দেশে পরিশোধন করেন। এতে বিনিয়োগ করতে হয় প্রচুর টাকা। তাই শীর্ষ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের হাতেই আছে দুটি পণ্যের বাজার। আমদানিকারকরা বলছেন, সাগরে পণ্য আটকে থাকলেও তাঁরা বাজারে সরবরাহ ঠিক রেখেছেন। কিন্তু পাইকারি ব্যবসায়ীরা বলছেন, আমদানিকারকরা ক্ষতি পুষিয়ে নিতে বাজারে এখনই সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছেন। এ জন্য দুটি পণ্যের দাম বাড়ছে প্রতিদিন। খুচরা বাজারে এর প্রভাব পড়েছে আরও বেশি।

সাগরে আটকে থাকা এসব পণ্য আমদানি করেছে চট্টগ্রামের এস আলম গ্রুপ, ঢাকার মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ (এমজিআই) ও দেশবন্ধু গ্রুপ। ডলারের অভাবে ব্যাংক মূল্য পরিশোধ করতে না পারায় কিছু পণ্য খালাস করার পরেই রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান বেঁকে বসে।

জাহাজে আটকে আছে ১ লাখ ১৭ হাজার ৫০০ টন চিনি। আটকে থাকা পাঁচ জাহাজের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আছে অপরিশোধিত চিনি। রমজান সামনে রেখেই এসব পণ্য এনেছিলেন আমদানিকারকরা। তাদের পরিকল্পনা ছিলো অপরিশোধিত চিনি দেশে এনে পরিশোধন করে রমজানে বাজারে ছাড়বেন। কিন্তু এখন তাঁদের এ পরিকল্পনা ভেস্তে যেতে বসেছে। 

'এমভি একিলিস' নামে জাহাজটি এস আলম গ্রুপের ৫৫ হাজার ৬৫০ টন চিনি নিয়ে বন্দরসীমায় আসে গত ২৪ ডিসেম্বর। কিন্তু ঋণপত্রের বিল ব্যাংক ডলারে পরিশোধ করতে না পারায় রপ্তানিকারক জাহাজটি থেকে পণ্য খালাসের অনুমতি দিচ্ছে না। 'এমভি ট্রুঅং মিন প্রসপারিটি' জাহাজটি দেশবন্ধু গ্রুপের ৫৫ হাজার টন চিনি নিয়ে বন্দরে আসে গত ১৮ অক্টোবর। ৯২ দিনে জাহাজটি থেকে ২৯ হাজার ২৩৯ টন চিনি খালাস হয়েছে। কিন্তু ডলারে আমদানিমূল্য শোধ না করায় বাকি ২৫ হাজার ৭৫১ টন চিনি খালাস করতে দিচ্ছে না রপ্তানিকারক। 'এমভি কমন অ্যাটলাস' জাহাজ ব্রাজিল থেকে মেঘনা গ্রুপের সাড়ে ৬০ হাজার টন চিনি নিয়ে বন্দরে আসে ৫ জানুয়ারি। জাহাজটি থেকে ২৩ হাজার ৬৫০ টন চিনি খালাস হয়েছিল।

মালয়েশিয়া থেকে প্রায় ১২ হাজার টন পাম অয়েল নিয়ে 'এমটি সুপার ফরটি' জাহাজ বন্দরসীমায় আসে ২৫ নভেম্বর। ডলার সংকটে থাকায় তেল আটকে আছে ৫৬ দিন ধরে। ১ কোটি ২৪ লাখ ডলার মূল্যের এই তেল আমদানি করেছে চট্টগ্রামের এস আলম সুপার এডিবল অয়েল লিমিটেড। কিন্তু ডলারে মূল্য না পাওয়ায় রপ্তানিকারক পণ্য খালাস করতে দিচ্ছে না। ব্রাজিল থেকে অপরিশোধিত সয়াবিন তেল নিয়ে মেঘনা গ্রুপের 'এমটি সোগান' জাহাজ আসে ৬ জানুয়ারি। এ জাহাজে আমদানিকারক বাংলাদেশ এডিবল অয়েল ও মেঘনা অয়েল রিফাইনারি লিমিটেডের তেল ছিল। বাংলাদেশ এডিবল অয়েলের তেল এর মধ্যে খালাস করা হয়েছে। আটকে আছে মেঘনা এডিবলের ৬২ লাখ ডলারের প্রায় ৫ হাজার টন তেল। এমটি সুপার ফরটি জাহাজ তেল নিয়ে সাগরে ভাসছে ৫৬ দিন ধরে।

এসবি২/এসএ 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়