শাহীন খন্দকার: রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, কোনো বাজারে নতুন মূল্যের সয়াবিন তেল পাওয়া যায়নি। অর্থাৎ দাম কমানো হলেও সে দাম মানেননি ব্যবসায়ীরা। মুদি দোকানদার ও পাইকারি ব্যবসায়ীদের দাবি, মিল থেকে নতুন দামের তেল এখনও আসেনি। তাই বেশি দামে কেনা থাকায় আগের দরেই বিক্রি করা হচ্ছে। নতুন দরের তেল আসলে তখন বিক্রি করবেন বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়িরা। সরকার লিটারপ্রতি সয়াবিন তেলের দাম ১৪ টাকা কমিয়ে নতুন দাম নির্ধারণ করেছে ১৭৮ টাকা। আরটিভি
গত ৩ অক্টোবর বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন দাম কমানোর ঘোষণা দেওয়ার পর সাধারণ ক্রেতাদের মুখে তৃপ্তির হাসি দেখা গেলেও, সরকারের নির্ধারিত নতুন দরে এখনও পাওয়া যাচ্ছে না তেল। অথচ, নতুন দর কার্যকর হওয়ার কথা ছিল গত মঙ্গলবার থেকেই।
মোহাম্মদপুর পাইকারি কৃষি বাজারের ক্রেতা ফাহাদ আহমেদ অভিযোগ করে বলেন, সয়াবিন তেলের দাম বাড়ানোর ঘোষণা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বাজারে হুহুকরে বেড়ে যায় গেলো, কমানোর ঘোষণা দেওয়ার কয়েক দিন পরও তা কমতে দেখা যায় না।
তিনি আরও বলেন, কাগজে-কলমে কমানোর ঘোষণা দিলেও বাস্তবে এর সুফল পাচ্ছেনা সাধারণ মানুষ। সফটওয়ার ইঞ্জিনিয়ার মুকুল হায়দার জানালেন, সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর ওপর যেমন নজরদারি নেই তেমনি বাজারে নজরদারি না থাকায় ব্যবসায়ীরা ইচ্ছামতো দাম বাড়ান পাইকারি ব্যাসায়িসহ খুচরা দোকানিরাপ।
বুধবার রাজধানীর কারওয়ানবাজারে তেল কিনতে আসেন গ্রামিন ফোন কোম্পানির মার্কেটিং ম্যানেজার রবিউল হাসান শুভ। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান,গণমাধ্যমে টিভিতে পত্রিকায় অনলাইনের খবরে শুনি ভোজ্য তেলের দাম কমেছে। কিন্তু বাজারে এসে দেখছি আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে। তিনি ক্ষোভে দু:খে বলেন, প্রচার-প্রচারনা আর কাগজে-কলমে কমিয়ে লাভ কি?
মহল্লা পাড়ার অলিতে গলিতে খুচরা বিক্রেতারা জানিয়েছেন, দাম কমানোর আগে কৌশলে ডিলারদের মাধ্যমে ব্যবসায়ীদের বেশি পরিমাণে তেল সরবরাহ করে কোম্পানিগুলো। এরপর হুট করে দাম কমানোর ঘোষণা দেয়। এতে বিপদে পড়ে যাই আমরা ছোট ব্যবসায়ীরা। তবে আগামী দু-এক দিনের মধ্যেই নতুন দরের তেল বাজারে পৌঁছে যাবে, এমনটি বলছে ভোজ্যতেল পরিশোধনকারী ও বিপণনকারী কোম্পানিগুলো।
সরকারি নির্দেশনার ২ দিনেও কমেনি ভোজ্য তেলের দাম। দেশে অস্থির ভোজ্য তেলের বাজার। অথচ গত দুই মাসের ব্যবধানে বিশ্ববাজারে সয়াবিনের দাম কমেছে ৩২ শতাংশ আর পাম তেলের দাম কমেছে ৪৮ শতাংশ। যার প্রেক্ষিতে দেশেও তেলের দাম কমিয়েছে সরকার। বিশ্ববাজারে তেলের দাম সামান্য বাড়লেই আমাদের দেশে সেটার মারাত্বক প্রভাব পড়ে বাজারে। যার ভোগান্তিতে ক্রেতা সাধারণের অবস্থা হয় ভয়াবহ।
বিশ্ববাজারে ভোজ্যতেলের দাম কমায় গত ১৭ জুলাই বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম প্রতি লিটারে ১৪ টাকা কমিয়ে ১৮৫ টাকা নির্ধারণ করে দেয় সরকার। এ দাম ১৮ জুলাই থেকেই পাইকারি বা খুচরা সব বাজারে কার্যকর হওয়ার কথা ছিল।
কিন্তু বৃহস্পতিবার (২১ জুলাই) রাজধানীর কারওয়ান বাজার, নিউ মার্কেট ও হাতিরপুল বাজার ঘুরে নতুন দামে তেল বিক্রি হতে দেখা যায়নি। উপরন্ত, সরকার নির্ধারিত দামে তেল কিনতে চাওয়ায় বাজারে ক্রেতাদের সঙ্গে বাগবিতণ্ডায় জড়াতে দেখা গেছে বিক্রেতাদের।