শিরোনাম
◈ অপহরণ, প্রতারণা ও মৃত্যুভয়: ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের দিন দেশ ছাড়ার রোমহর্ষক গল্প শ ম রেজাউল করিমের (ভিডিও) ◈ গাজীপুরে অতিরিক্ত ডিআইজির মা-বাবাকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ডাকাতি, নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার লুট ◈ আরও এক দফা কমলো জ্বালানি তেলের দাম ◈ গণতান্ত্রিক আন্দোলনের সকল শহীদদের জন্য দোয়া চাইলেন তারেক রহমান ◈ সংগঠনের কেউ অপরাধ করলে অপরাধের মাত্রা অনুযায়ী বিচার হবে : ডা. শফিকুর রহমান ◈ ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রের মন্তব্যের প্রতিবাদ জামায়াতের ◈ কর কাঠামোতে বড় পরিবর্তন আসছে, মূল্যস্ফীতির চাপে নুইয়ে পড়বে চাকরিজীবীরা? ◈ ডিসেম্বরের মধ্যে অবশ্যই নির্বাচন হতে হবে: আমির খসরু (ভিডিও) ◈ ফারুক আহমেদকে সরিয়ে দেওয়া নিয়ে যা বললেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী (ভিডিও) ◈ রাজনৈতিক সহিংসতায় পথশিশুর প্রাণহানি ১৬৮, শতাধিক চোখ হারানোর শিকার: গবেষণা প্রতিবেদন

প্রকাশিত : ৩০ মে, ২০২৫, ০৮:০০ রাত
আপডেট : ০১ জুন, ২০২৫, ১২:০০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

নগদের শতকোটি টাকা বেহাতের অভিযোগ প্রসঙ্গে যা বললেন ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব

মোবাইলে আর্থিক সেবাদাতা (এমএফএস) প্রতিষ্ঠান নগদের সব অনিয়ম তদন্তে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করছে বলে জানিয়েছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, নগদ থেকে অতি দ্রুত মানি লন্ডারিং, জুয়া, জালিয়াতির চক্রকে বের করে এখানে শৃঙ্খলা ফেরানো সম্ভব হবে। এ ছাড়া দেশের নামকরা বিশেষজ্ঞদের নিয়ে নগদে একটি নতুন বোর্ড গঠনের বিষয়ে মাননীয় অর্থ উপদেষ্টা, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর গত সপ্তাহে একটি ঐকমত্যে পৌঁছেছেন বলেও জানিয়েছেন ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব।

আজ শুক্রবার দুপুরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে এসব কথা জানান তিনি।

ফেসবুক পোস্টে ফয়েজ আহমদ লিখেছেন, ‘ব্যাপক অস্থিরতার পরে ২৭ মে নগদ কর্তৃপক্ষ মূল লাইসেন্সধারী প্রতিষ্ঠান ডাক বিভাগকে পরিচালনা দায়িত্ব বুঝিয়ে দেয়। সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রশাসকের ওপর স্থগিতাদেশ আসলে নগদে অস্থিরতা শুরু হয়। এটাকে ব্যবহার করে শাফায়াত গং এর হায়ারিং, ফায়ারিং শুরু হয়। তখন ডাক বিভাগ থেকে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ থেকে মৌখিকভাবে অনুরোধ করা হয়েছে, যেন শাফায়াতের সম্ভাব্য সহযোগী হিসেবে মুইজ নামের লোককে (মানবজমিনের রিপোর্টে এসেছে) আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর অফিসে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়, তার মাধ্যমে তারা নগদের অপকর্ম সম্পর্কে তথ্য পাওয়ার চেষ্টা করে। ডাক বিভাগ, আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে যৌথভাবে নিজেকে নগদের সিইও দাবি করা শাফায়েতকে (বাংলাদেশ ব্যাংকের মামলার আসামি) গ্রেপ্তার করতে উদ্যোগ নেয়। পরে জানা যায় তার একাধিক পাসপোর্ট আছে। নগদে দেখানো তার পাসপোর্ট ৮ জানুয়ারি থেকে দেশের বাইরে এবং মালয়েশিয়ায় দেখাচ্ছে। তবে তদন্তে বেরিয়ে আসে সে ক্যান্টনমেন্টে অবস্থান করছিল। সিআইডির অভিযানের প্রস্তুতির সময় সে পালিয়ে যায়।’

ফয়েজ আহমদ ফেসবুক পোস্টে আরও জানান, ‘সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের নিযুক্ত প্রশাসকের ওপর স্টে অর্ডার আসলে তানভির মিশুক নিজেকে সিইও দাবি করে মেইল দেয় এবং একই মেইলে বর্তমান পরিস্থিতিতে দায়িত্ব পালনে অপারগতা জানায়। পরে শাফায়াত নিজেকে সিইও দাবি করে, মুইজকে হেড অফ এইচআর নিয়োগ দেয় এবং বিভিন্ন কর্মকর্তা বরখাস্ত ও বদলি শুরু করে প্রতিষ্ঠানকে অস্থিতিশীল করে তোলে। শুরু হয় প্যানিক। এমতাবস্থায় ডাক বিভাগ নিজের লাইসেন্সিং এ পরিচালিত প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত দেয়।’

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী লিখেছেন, ‘মুইজকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটকের পরে অনুরোধ করা হয়েছে যেন মুইজকে ছেড়ে দেওয়ার আগে মুচলেকা নেওয়া হয়। তার বিরুদ্ধে কোন মামলা নাই। সে নগদের সাবেক লোকেদের কোনো হেল্প করবে না এই মর্মে মুচলেকা দেয়। সিআইডি তাকে পর্যবেক্ষণে রেখেছে। নতুন কোনো অনিয়ম প্রমাণ হলে তাকে গ্রেপ্তার করার অনুরোধ করা হয়।’

নগদের সার্বিক বিষয় সম্পর্কে ফয়েজ আহমদ আরও লেখেন, ‘শাফায়েত পালানোর পর, শ্যামল দাস অ্যাক্টিং সিইও হয়। আরেক দফা অস্থিরতা শুরু হয়। এমতাবস্থায় আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতিতে ডাক বিভাগে নগদের স্বঘোষিত সিইও, ডেপুটি সিইওকে ডেকে এনে গত দশকের সকল অনিয়ম সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়। ১৪ জন কর্মকর্তা বরখাস্ত করা, ৫ জনকে বদলি করা নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। ডাক বিভাগের কর্মকর্তারা বিভিন্ন অনিয়ম (ভুয়া এজেন্ট, ভুয়া ই-কেওয়াসি, ভুয়া অ্যাকাউন্ট, জুয়ার সংশ্লিষ্টতা) নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে। একপর্যায়ে তাদের ভারপ্রাপ্ত সিইও শ্যামল দাস/ডেপুটি সিইও মুইজ পদ ডাক বিভাগের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করতে সম্মত হয়। এর আগে নগদ থেকে মার্চ মাসে দায়িত্ব হস্তান্তরের জন্য একটি চিঠি লিখেছিল। এটিকে রেফারেন্স হিসেবে ব্যবহার করে ডাক বিভাগ দায়িত্ব বুঝে নেয়। ডাক বিভাগ নতুন ভারপ্রাপ্ত সিইও হিসেবে জনাব তালেবকে সাময়িক দায়িত্ব দেয়।’

ফয়েজ আহমদ জানান, ‘নতুন সিইও গত ৩ মাসের সমস্ত খরচের হিসাব পত্র তৈরি করবে, অনিয়মের ওপর বিশদ রিপোর্ট করবে, সেটা মিডিয়ায় প্রকাশ করবে বলে- এমন নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। নতুন ভারপ্রাপ্ত সিইও’কে প্রতিষ্ঠানে শৃঙ্খলা আনতে, ফায়ার ও বদলি করা কর্মকর্তাদের স্বপদে ফেরাতে এবং ঈদের আগে বেতন ও বোনাস দিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি প্রায় ৪ বছর ধরে বন্ধ থাকা ফিচার আপগ্রেড, সফটওয়্যার আপগ্রেডের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’

তিনি আরও জানান, ‘মূল লাইসেন্স ধারী হিসেবে বাংলাদেশ ডাক বিভাগ তার দায়িত্ব পালন করেছে বলে আমি মনে করি এবং নগদ পরিচালনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের বিশেষজ্ঞ দেশের সঙ্গে নিয়ে এগিয়ে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এবং চলমান ফরেনসিক তদন্তে সহযোগিতার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। নগদের সকল অনিয়ম তদন্তে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করছে এবং সিআইডিকেও বিষয়াদি সার্বিকভাবে অবহিত করা হয়েছে। ২৯ মে ডাক বিভাগ নিযুক্ত নতুন সিইও বলেছেন তিনি মিশুক ও শাফায়ত সহ বাংলাদেশ ব্যাংককের দায়েরকৃত মামলার আসামিদের ইমেইল অ্যাকাউন্ট ব্লক করেছেন। আশা করা যায় নগদ থেকে অতি দ্রুত মানি লন্ডারিং, জুয়া, জালিয়াতির চক্রকে বের করে এখানে শৃঙ্খলা ফেরানো সম্ভব হবে।’

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়