রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে নুরুল হক ওরফে নুরাল পাগলের মরদেহ কবর থেকে তুলে পোড়ানোর ঘটনায় রীতিমতো বিস্মিত গোটা দেশ। এ ন্যাক্কারজনক ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকারও। এ ধরনের বর্বরতা কোনো অবস্থাতেই সহ্য করা হবে না বলেও সতর্ক করা হয়েছে। এ ঘটনা ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
নুরাল পাগলার লাশ পোড়ানোর এ বর্বর ঘটনায় এবার নিন্দা জানাতে দেখা গেছে মুফতী গিয়াস উদ্দিন তাহেরীকে। ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, একটি ইসলামিক মাহফিলে নুরাল পাগলার লাশ পোড়ানো নিয়ে কথা বলছেন তিনি।
তাহেরী বলেন, ‘আমি দেখেছি, নুরাল পাগলা নামে একজন মানুষ মারা গেছে। যদি তার জীবনে অন্যায় করে থাকে, তার জীবনে যদি শিরক করে থাকে, তার জীবনে যদি ভন্ডামি করে থাকে, তার জীবনে যদি কুফরি করে থাকে, সে যদি একদিন করে থাকে, একমাস করে থাকে, আপনি একজন মুসলমান হিসেবে দরকার ছিল বাংলাদেশের প্রচলিত আইনে তার বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননার মামলা করে তাকে গ্রেপ্তার করানো।
কিন্তু সেই নুরা পাগলা যখন মারা গেল, কবরের ভেতরে তাকে লাঠি দিয়ে দিয়ে আঘাত করে কবর খুঁড়ে তার লাশটাকে বের করলেন। বের করার পর তার লাশকে নিয়ে উল্লাস করতে করতে ‘আল্লাহু আকবর’ ‘নাড়ায়ে তাকবীর’ স্লোগান দিয়ে দিয়ে আপনার তার লাশটাকে পুড়িয়ে দিলেন।’
এ ন্যাক্কারজনক ঘটনা বাংলাদেশের ইতিহাসে এবারই প্রথম ঘটলো উল্লেখ করে তাহেরী বলেন, ‘এখানে যারা আছেন ৫০ বছরের মানুষ আছে, ৬০ বছরের মানুষ আছে, স্বাধীনতার আগে পরের মানুষ আছে, আপনারা কেউ কোনোদিন দেখেছেন, কবর থেকে লাশ তুলে, মুসলমানের লাশ তুলে আগুন দিয়ে পুড়িয়েছে? এমন ইতিহাস কি বাংলাদেশে হয়েছে? আমরা কি বাংলাদেশ দেখছি, আমরা কি দেখছি?’
উল্লেখ্য, শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে ইমাম মাহদী দাবি করা নুরাল পাগলের মরদেহ কবর থেকে তুলে পুড়িয়ে দেয় ‘তৌহিদী জনতা’। উপজেলার ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের পদ্মার মোড় এলাকায় প্রকাশ্যে পেট্রোল ঢেলে মরদেহ পুড়িয়ে দেয়া হয়।
এ ঘটনায় নুরাল পাগলা অনুসারী ও স্থানীয় তৌহিদী জনতার সংঘর্ষে রাসেল মোল্লা (২৮) নামে এক যুবক নিহতের খবর পাওয়া গেছে।