আগামী অর্থবছর শুরু হবে ২০২৬ সালের ১ জুলাই। নতুন অর্থবছরের বাজেটের রূপরেখা এবং চলতি বাজেটের সংশোধন নিয়ে ইতিমধ্যে কাজ এগিয়ে নিচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার। এই লক্ষ্যে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে আজ ২২ ডিসেম্বর বাজেট সংক্রান্ত একটি উচ্চপর্যায়ে বৈঠক আহ্বান করা হয়েছে। এই বৈঠকে চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের সংশোধিত এবং আগামী ২০২৬-২৭ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে বলে জানা গেছে। প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনায় এই বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হবে বলে জানা গেছে। এখানে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ ও পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুরসহ সংশ্লিষ্টরা উপাস্থিত থাকবেন বলে জানা গেছে। চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরে উন্নয়ন বাজেটের আকার কিছুটা কমানো হলেও এবার রাজস্ব খাতে বাজেটের আকার বাড়ানো হচ্ছে।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, প্রাথমিক এ রূপরেখায় আগামী বাজেটের একটি পূর্ণ খসড়া কাঠামো দাঁড় করিয়ে দেওয়া হবে। তবে পরবর্তীকালে নতুন নির্বাচিত সরকার প্রয়োজনে এ রূপরেখা সংযোজন-বিয়োজন ও পরিমার্জন করতে পারবে। সূত্রমতে, আগামী অর্থবছরের জন্য বাজেটের প্রাথমিক আকার ৮ লাখ ৫০ হাজার কোটি টাকা প্রস্তাব করা হয়েছে। এর মধ্যে এডিপি আকার ধরা হয়েছে আড়াই লাখ কোটি টাকা। তবে বৈঠকে আলোচনাসাপেক্ষে আকার বাড়তে বা কমতে পারে।
উল্লেখ্য, চলতি ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের মূল বাজেটের আকার হচ্ছে ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা। প্রথমে চিন্তা করা হয়েছিল বাজেটের এ আকার কাটছাঁট করে ৭ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকায় নামিয়ে আনা হবে। কিন্তু পাঁচ ইসালামি ধারার ব্যাংককে একীভূতকরণে আর্থিক সহায়তা এবং সরকারি চাকুরেদের কিছু সুবিধা দেওয়ার কারণে সংশোধিত বাজেটে তেমন কোনো কাটছাঁট করা না-ও হতে পারে। কিংবা শেষ পর্যন্ত বাজেটের আকার খুব সামান্য কমতে পারে। সেক্ষেত্রে চলতি অর্থবছরে সংশোধিত বাজেটের আকার হতে পারে ৭ লাখ ৮৮ হাজার বা ৮৯ হাজার কোটি টাকা।
অন্যদিকে মূল বাজেটের আকার তেমন না কমলেও সংশোধিত বাজেটে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি)-এর আকার কমতে পারে ২৫ হাজার থেকে ৩০ হাজার কোটি টাকা। ফলে সংশোধিত এডিপির আকার ২ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা থেকে কমে ২ লাখ ৫ হাজার কোটি টাকা হতে পারে।
সূত্রমতে, সংশোধিত বাজেটে এবার প্রথম বারের মতো রাজস্ব বাজেটের আকার বাড়ছে। এর আকার বাজেটে ঘোষিত ৫ লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫ লাখ ৮৮ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হতে পারে।
সূত্র জানায়, অন্যদের মধ্যে বৈঠকে আগামী অর্থবছরের শুরুতে সরকারি চাকুরেদের জন্য আর্থিক সুবিধার প্রদানের বিষয় নিয়ে আলোচনা হতে পারে। সেক্ষেত্রে মহার্ঘভাতা দেওয়া হতে পারে। বৈঠকে এ বিষয়ে একটি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হওয়া সম্ভাবনা রয়েছে। আর নতুন পে-স্কেল বাস্তবায়ন করবে নতুন সরকার। উৎস: ইত্তেফাক।